Saturday, August 23, 2025

হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ: হলুদ রঙের হিমু আড্ডায়

Date:

Share post:

খায়রুল আলম, ঢাকা: বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকলে আজ ৭৪ বছরে পা দিতেন। তার মৃত্যুর ১০ বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু কে বলবে তিনি নেই। তার লেখাতেই আজও মাতোয়ারা পাঠক।

গল্প, উপন্যাস, কবিতা ছাড়াও হুমায়ূনের পদচারণে ছিল নাটক-গান ও সিনেমা। শিল্প-সাহিত্যের সব অঙ্গনেই তরুণদের কাছে তিনি অনুকরণীয়। হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ‘কারও কারও জন্ম হয়, মৃত্যু হয় না’ বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ূন আহমেদ যেন তারই দৃষ্টান্ত। তার সৃষ্ট কাল্পনিক চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত হয়ে আছে পাঠকের মাঝে! তার লেখা বইয়ে মুগ্ধ হয়ে পাঠক কখনো হতে চান হিমু কেউবা হতে চান মিসির আলি। তাই তো বইয়ের পাতার সেই হিমু নেমে এসেছে বাস্তবেও। বহু হ‍ুমায়ূনভক্ত পকেটবিহীন হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরে উদ্দেশ্যহীন পথে হেঁটেছেন, হতে চেয়েছেন হিমু।
এখানেই শেষ নয়। ময়মনসিংহে ‘হিমু আড্ডা’ নামে রেস্টুরেন্টও খুলে বসেছেন এক হ‍ুমায়ূনভক্ত। পুরো রেস্টুরেন্টটি সাজিয়েছেন হলুদ রঙে। এর দেওয়াল, আসবাব থেকে শুরু করে বাইরে বসার চেয়ারগুলো, সবখানেই যেন হলুদের ছোঁয়া। শুধু ভক্ত-পাঠকই নয়, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে যারা যান, তারাই স্মরণ করেন প্রিয় এই লেখককে।

হুমায়ূন আহমেদের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি ভক্ত এস.এম. তারেক হায়দার। নন্দিত লেখকের স্মৃতি স্মরণে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে শহরের কাচারিঘাট ও পার্কের সন্নিহিত স্থানে ২০১৩ সালে গড়ে তুলেছেন একটি রেস্টুরেন্ট। হলুদ রাঙা রেস্টুরেন্টটির নাম দিয়েছেন ‘হিমু আড্ডা’। স্থানটিতে গেলেই যেন হুমায়ূন আহমেদের মুখচ্ছবিটা ভেসে উঠে- এমন চিন্তা থেকেই এই উদ্যোগ বলে জানান তারেক হায়দার। বর্তমানে এটির সত্ত্বাধিকারী হিসেবে আছেন তার স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন।

হিমুর হলুদ রং পছন্দ কেন?- এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে তারেক জানালেন, হলুদ হচ্ছে বৈরাগ্যের রঙ, আগুনের রঙ। আগুন যেমন খাদ পুড়িয়ে স্বর্ণকে খাঁটি করে, এই রঙও তাই করে। হলুদ পাঞ্জাবি পড়লে এক ধরনের ঘোর কাজ করে। বেখেয়ালী, জীবনযাপনে ছন্নছাড়া ও বৈশ্বিক ব্যাপারে উদাসীন ভাব চলে আসে।

ব্রহ্মপুত্র নদছোঁয়া সবুজ নিসর্গের এ স্থানটি শুরু থেকেই সবার প্রিয়। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণী, পেশাজীবীসহ নানান বয়সী ও শ্রেণির লোকজন সুযোগ পেলেই এখানে এসে সময় কাটান। কবি-লেখক, হুমায়ূনভক্তদের আড্ডায় মুখর থাকে রেস্টুরেন্ট প্রাঙ্গণ। চলে গান-কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা। অনেকে নদীর পাড়ে বসে হারিয়ে যান ভাবের জগতে। চা-কফিতে চুমুক দিতে দিতে লিখে ফেলেন কবিতা কিংবা গল্প। এভাবেই প্রায় দীর্ঘ নয় বছর ধরে প্রতিদিন বাংলা সাহিত্যের প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করছে মহুয়া, মলুয়া আর চন্দ্রাবতীর জেলা ময়মনসিংহ।

হিমু আড্ডায় অভ্যাগতরা হিমুর চরিত্র এবং রঙের মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদকে খুঁজে পান। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ রোববার। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম বাংলা সাহিত্যের এই কিংবদন্তির।
বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় এই কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্রকার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আরও পড়ুন:Jyotsna Mandi : বাঁকুড়ায় খাদ্য প্রতিমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ আদিবাসী সমাজের

 

 

 

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...