প্রতারিত চিকিৎসক কুণাল সরকার, খোয়ালেন ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ! পুলিশের তৎপরতায় ধৃত ১

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে প্রতারণার মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাঁকে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চান গোয়েন্দারা। বিচারক ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

কলকাতার কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত নাগরিক এবং চিকিৎসককে ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিল দিল্লির একটি আর্থিক এবং আইনি উপদেষ্টা সংস্থা। টোপ দিয়েছিল মোটা টাকা বিনিয়োগ করলেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শেয়ার এবং চড়া হারে ডিভিডেন্ড পাওয়া যাবে। প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকারও। বছর দেড়েক পর ওই সংস্থার এক প্রতারককে তিহার জেল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিল কলকাতা পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জীব শুক্লা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে প্রতারণার মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাঁকে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চান গোয়েন্দারা। বিচারক ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে  যখন প্রতারকদের টাকা ফেরতের কথা বলা হয়, তখন ৮০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয় কুণালকে। কিন্তু তা বাউন্স হয়ে গিয়েছিল। প্রতারক ধরা পড়ার পর টাকা ফেরতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে বিশ্ব বাংলা সংবাদকে কুণাল সরকার বলেন, ‘ আমার মতো কলকাতার ১০ জনকে এভাবে প্রতারণা করা হয়েছে।আমার কাছেও এই সংস্থার প্রতিনিধি একজনের রেফারেন্স নিয়ে আসে।তবে কলকাতা পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ব্যাবস্থা নিয়েছে তাকে সাধুবাদ জানাই।অভিযুক্তকে ধরা গিয়েছে, এর ফলে অনেকেই সচেতন হবেন।’

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই চক্রটি গোটা দেশেই সক্রিয়। বিভিন্ন আর্থিক এবং আইনি উপদেষ্টা সংস্থার নাম করে অভিনব কায়দায় বিত্তশালীদেরই বোকা বানিয়ে ফাঁদে ফেলা হতো। এই চক্রের মূল অভিযুক্ত রাজীব গুপ্তা এখনও বিদেশে পলাতক। ধৃত সঞ্জীবকে জেরা করে রাজীবের কাছে পৌঁছতে চাইছেন গোয়েন্দারা।

জানা গিয়েছে, চিকিৎসক কুণাল সরকারকে বিনিয়োগ করার প্রলোভন দেখিয়েছিলেন সঞ্জীবের সংস্থা। বলা হয়েছিল, তাঁদের কোম্পানিতে মোটা টাকা বিনিয়োগ করলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার দেওয়া হবে। এমনকী কোম্পানির তরফে চড়া হারে ডিভিডেন্ড দেওয়া হবে। এজেন্টদের কথা মতো চিকিৎসক কুণাল সরকার ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও টাকাই দেয়নি টিসিজি হ্যামিল্টন নামে ওই সংস্থা। পরে সেই সংস্থাটি নামও বদল করে হয় ক্রেড ফোর্স এশিয়া লিমিটেড।

ওই আর্থিক এবং আইনি উপদেষ্টা সংস্থার হোলটাইম ডিরেক্টর ছিলেন সঞ্জীব। ডিরেক্টর পদে রয়েছেন রাজীব গুপ্তা। তাঁদের দু’জনের বিরুদ্ধেই প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণি থানায়। তদন্ত করতে গিয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের নজরে আসে, শুধু কুণাল নন তাঁর মতো বিশিষ্ট এবং বিত্তশালীদের সঙ্গে এ ভাবেই প্রতারণা করা হয়েছে।

 

Previous articleপ্রোটোকল মেনে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের
Next articleইস্তেহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা, গুজরাটে ভোটে জিতলে দেশদ্রোহীদের জন্য ‘বিশেষ সেল’: ঘোষণা বিজেপির