সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার জীবনাবসান

সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার জীবনাবসান। রবিবার রাতে ১১:২৪ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০২ বছর।

আরও পড়ুন:পথ দেখালো রামকৃষ্ণ মিশন সেবাপ্রতিষ্ঠান, বসানো হলো করোনা প্রতিরোধক ‘সাইকো ক্যান’

রবিবার রাতেই তাঁর পার্থিব দেহ দক্ষিণ কলকাতার ওই হাসপাতাল থেকে টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে নিয়ে আসা হবে দক্ষিণেশ্বরে সারদা মঠের প্রধান কার্যালয়ে। সেখানেই ভক্তরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবেন বলে সারদা মঠ সূত্রে জানানো হয়েছে। তার পরে কাশীপুর শ্মশানে ভক্তিপ্রাণা মাতাজির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে সারদা মঠ সূত্রের খবর।

গত অক্টোবরে ১০২ বছর অতিক্রম করেছেন তিনি।বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা ছিল। গত জানা গিয়েছে, ৫ ডিসেম্বর ভক্তিপ্রাণা মাতাজিকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।তবে গত শনিবার থেকে আচমকাই তাঁর শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। তখন তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। জানা যাচ্ছে ফুসফুসেও সংক্রমণ ছড়িয়ে ছিল। তীব্র জ্বরেও তিনি আক্রান্ত ছিলেন। শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।

ভক্তিপ্রাণা মাতাজি ছিলেন শ্রীসারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষা। ২০০৯-এর এপ্রিলে তিনি ওই পদে বৃত হন। তার আগে দীর্ঘ সময় তিনি টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই ওই হাসপাতাল ১০ শয্যার প্রসূতি সদন থেকে ১০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯২০ সালের অক্টোবরে ভক্তিপ্রাণা মাতাজি  কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। র মধ্যে ছোটবেলা থেকেই ঈশ্বরানুরাগ ছিল প্রবল। যোগাযোগ ছিল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গেও। সারদেশ্বরী আশ্রম ও হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে তিনি নার্সিং প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৫০ সালে টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজে যোগ দেন। ১৯৫৩ সালে ভক্তিপ্রাণা মাতাজিকে ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা দেন শ্রীরামকৃষ্ণের প্রত্যক্ষ শিষ্য তথা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষ স্বামী বিজ্ঞানানন্দ। অনেকের কাছে ভক্তিপ্রাণা মাতাজি পরিচিত ছিলেন কল্যাণীদি নামেও। ১৯৫৯ সালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সপ্তম অধ্যক্ষ স্বামী শঙ্করানন্দের কাছে সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন। ওই বছরেই সারদা মঠ স্বতন্ত্র সঙ্ঘ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৬০ সালে রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের পরিচালন সমিতির সদস্যও হন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। ১৯৬১ সালের ১৮ নভেম্বর রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে মাতৃভবনের দায়িত্বভার হস্তান্তর করা হয় রামকৃষ্ণ সারদা মিশনকে। তখন থেকেই প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা মাতৃভবনের সম্পাদক হন।

Previous articleসাকেত ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে আজ তৃণমূলের প্রতিনিধি দল
Next articleটেট নিয়ে এখনও দারুণ আগ্রহ পার্থ-মানিকের, জেলে বসেই দিনভর টিভির পর্দায় চোখ