পাগলের হাতে দেশলাই, ঘর তো পুড়বেই: তমলুক থেকে শুভেন্দুকে তোপ কুণালের

ভ্রান্ত অর্থনীতির ফাঁদে ফেলে মানুষের জীবনযুদ্ধকে কীভাবে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, তা রীতিমতো তথ্য তুলে ধরে দেখিয়ে দিল তৃণমূল(TMC) নেতৃত্ব। পাশাপাশি উন্নয়নের পথ ধরে জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিক প্রয়াসের সাফল্যও ব্যাখ্যা করা হল তমলুকে(Tamluk) তৃণমূল কংগ্রেসের জনসমাবেশে। পাশাপাশি তমলুকের এই জনসভা থেকে কড়া ভাষায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে(Shuvendu Adhikari) আক্রমণ শানান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)।

তমলুকের আবাসবাড়ি মাঠে বুধবার ডাক দেওয়া হয়েছিল এই জনসভার। সাদা-কালোর পার্থক্যটা এখানেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ব্যাখ্যা করলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামছাড়া দাম বাড়িয়ে, ব্যাঙ্কের সুদের হার কমিয়ে কীভাবে জীবনযুদ্ধকে দিনের পর দিন কঠিন করে তুলছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। অপরদিকে লক্ষীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো অজস্র সমাজকল্যাণ প্রকল্পের দৌলতে কেমন করে সংসার খরচ কমিয়ে দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রাকে ক্রমশই সহজ করে তুলছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তারও সহজ সরল ব্যাখ্যা মিলল তাঁর কথায়। কেন্দ্রের ভ্রান্ত অর্থনীতির বিরুদ্ধে এদিন সরব হন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রও। তাঁর উপস্থিতিতে মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গোপাল চন্দ্র মাইতি। তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন কুণাল ঘোষ।

এদিন বিরোধী দলনেতার প্রতি যথারীতি আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন কুণাল। আদি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি মন্তব্য করেছেন, পাগলের হাতে দেশলাই দিয়েছেন, আপনাদের ঘর তো পুড়বেই। সবে তো শুরু। আপনাদের সঙ্গে আমাদের আদর্শের লড়াই আছে, থাকবেও। কিন্তু এই বেইমান, চোর-চিটিংবাজের রাজনীতিকে সমর্থন করবেন না। দলবদলু এই অসুস্থ মানসিকতার লোককে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন। আমরা বুঝে নেব। দুর্নীতিতে আকন্ঠ ডুবে থেকে সিবিআই-ইডি থেকে বাঁচতেই যে শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়ে ভিড়েছেন, তা মনে করিয়ে দিয়ে বছর দুয়েক আগে তাঁর বক্তব্যের তিনটি অডিও ক্লিপিংস সমবেত জনতাকে শুনিয়ে দেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। প্রমাণ করে দেন শুভেন্দুর নির্লজ্জ দ্বিচারিতা। স্থানীয় মানুষের, বিশেষ করে মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এদিনের সভাকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছিল।

লক্ষ্যণীয়, এই আবাসবাড়ি মাঠেই সুপারফ্লপ হয়েছিল বিজেপির সভা। স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, বাইরে থেকে লোক এনেও একদিন বিন্দুমাত্র সুবিধে করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। অথচ সেই মাঠেই বুধবার তৃণমূল নেতৃত্বের কথা শুনতে স্থানীয় মানুষের উপচে পড়া ভিড়। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। অধিকারীদের গদ্দারির বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার। আমজনতার এই ধিক্কারই প্রতিফলিত হল কুণাল ঘোষের ভাষণে। বললেন, শুধুই আমি-আমি, আমিত্ববাদী রাজনীতি শুভেন্দুর। এখন আবার তারিখের রাজনীতি করছে। আজ তো ১৪ তারিখ, শুভেন্দু কোথায়? হিম্মত থাকলে আরও একটা তারিখ দিক।

Previous articleশুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, পদপিষ্ট হয়ে মৃ*ত শিশু সহ ৩
Next articleনবম-দশমের OMR শিট বিকৃতির মামলায় CBI-এর সঙ্গে তদন্ত করবে ED: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়