নবান্ন বৈঠক: জল বণ্টন সমস্যার সমাধানে আন্তঃরাজ্য কমিটি গঠনের প্রস্তাব শাহের

পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেশি রাজ্য গুলোর মধ্যে বিভিন্ন নদ নদীর জল বণ্টন সমস্যার সমাধানে আন্তঃরাজ্য কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। শনিবার নবান্নে(Nabanna) পূর্বাঞ্চল পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) পাশাপাশি ওড়িশা, ঝাড়খন্ড ও বিহারের প্রতিনিধিরা সেখানেই জলবন্টন সমস্যা সমাধানে কমিটি গড়ার পরামর্শ দেন শাহ।

বাংলা সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে নদীর জলবন্টন নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে রাজ্যে দুর্যোগ পরিস্থিতি নতুন নয়। নবান্ন এদিনের বৈঠকে এই ইস্যু তুলে ধরেন রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহের কাছে প্রস্তাব দেন, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে স্বতন্ত্র কমিটি গড়ার। মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রস্তাব মেনে জল বন্টনে নিজেদের মধ্যে বিরোধ রুখতে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড ও বিহারকে নিয়ে তিনি একটি যৌথ কমিটি গঠন করার কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠক নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও তরফেই কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। যার মধ্যে অন্যতম সীমান্ত সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের মধ্য সমন্বয় বৃদ্ধি।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বৈঠকে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে ঔদ্ধত্য ত্যাগ করে আরও নমনীয় হতে হবে। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে হবে। তবেই এই সমন্বয় সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রীর এই মতকে সমর্থন জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।এরপরেই তিনি বৈঠকে উপস্থিত বিএসএফের ডি়জিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অমিত শাহ বৈঠকে উপস্থিত সব রাজ্যের মন্ত্রী আমলাদের বলেন, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেবল মাত্র সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নয়। দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকেও।

গঙ্গা পদ্মার ভাঙন নদী ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত একটি মাস্টার প্ল্যান গ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।

রেলের জমিতে উচ্ছেদ-পূণর্বাসন বিভিন্ন রাজ্যে রেলের অনেক জমি জবরদখল হয়ে যাওয়ায় প্রকল্প তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে বলে বৈঠকে উপস্থিত রেল বোর্ডের সদস্য বৃজেশ কুমার অভিযোগ জানান। রাজ্য গুলোর তরফে পাল্টা জানানো হয় উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।রেলের অব্যবহৃত জমি কিভাবে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা যায় রাজ্যগুলিকে সেই বিষয়েও ভেবে দেখার কথা বলা হয়।

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ও সমন্বয় বৃদ্ধির উপরে জোর বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ও সমন্বয় বৃদ্ধির উপরে জোর দেন।

একশ দিনের কাজ, আমফান ক্ষতিপূরণে কেন্দ্রের বঞ্চনা আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও এদিনের বৈঠকে ১০০ দিনের কাজে বকেয়া আটকে রাখা আবাস যোজনা প্রকল্পে রাজ্যকে বঞ্চনার বিষয় নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের অফিসারদের মধ্যে কিছুক্ষণ চাপানউতর চলে। পরে এই সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র এবং মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো একাধিক চিঠি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর।

Previous articleKIFF 2022 : ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এবার ‘লক্ষীর পা’
Next articleআগামিকাল বিশ্বকাপ ফাইনাল, ফ্রান্সের জয়ের প্রার্থনায় সাজছে চন্দননগর