ত্রিপুরায় বিজেপির বেহাল দশা, দল বাঁচাতে এবার রথযাত্রা করবেন অমিত শাহ

আর মাস দুয়েক পরেই ত্রিপুরায়(Tripura) বিধানসভা নির্বাচন(Assembly Election)। তবে তার আগে ত্রিপুরার বিজেপির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। নির্বাচনের আগে ত্রিপুরার গেরুয়া শিবিরে দলত্যাগের হিড়িক শুরু হয়েছে। একাধিক বিধায়কের পাশাপাশি শীর্ষস্থানীয় নেতা বিজেপি ছেড়েছেন। এই অবস্থায় ত্রিপুরার হাল ধরতে মাঠে নামতে হচ্ছে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে(Amit Shah)। জানা যাচ্ছে, আগামী বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় ৮ দিনের রথযাত্রা কর্মসূচি শুরু করতে চলেছেন শাহ।

ত্রিপুরার বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য আগামী ৫ জানুয়ারি দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম থেকে রথযাত্রা শুরুর কথা ঘোষণা করেছেন। যার পোশাকি নাম ‘জন বিশ্বাস যাত্রা’। শনিবার রাজীব বলেন, ‘‘ওই দিন জনসভা থেকে অমিত শাহ পতাকা নেড়ে যাত্রার সূচনা করবেন।’’ তিনি জানান, ১২ জানুয়ারি যাত্রার সমাপ্তি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। রাজ্যের ৬০টি বিধানসভার সবগুলি ছুঁয়ে যাবে এই ‘জন বিশ্বাস যাত্রা’। কেন্দ্র এবং ত্রিপুরা সরকারের ‘সাফল্য’ তুলে ধরতে অন্তত যাত্রাপথে ২০০টি জনসভা করবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং মন্ত্রীরা।

তবে একেবারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে ত্রিপুরায় বিজেপির এহেন তৎপরতার পিছনে কারণ রয়েছে যথেষ্ট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে ত্রিপুরাতে বিজেপির অবস্থা একেবারে তথৈবচ। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে জনজাতি সম্প্রদায়ের সংগঠন আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল। আড়াই দশকের বাম শাসনের অবসান হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিপ্লব দেব। কিন্তু গোড়া থেকেই সরকারের অন্দরে টানাপড়েন শুরু হয়। পাশাপাশি, বিপ্লবের বিরুদ্ধে একাধিক বার আলটপকা মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে। ২০২১ সালে ভাঙন দেখা দেয় বিজেপিতে। এই অবস্থায় চলতি বছরের মে মাসে বিপ্লবকে সরিয়ে মানিক সাহা কে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। তবে পরিস্থিতিতে বদল আসেনি।

এ পর্যন্ত ত্রিপুরায় বিজেপির ৬ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে দল ছেড়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুদীপ রায় বর্মন, আশিস সাহা, দিবাচন্দ্র রাঙ্খল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বুর্বমোহন ত্রিপুরা যোগ দিয়েছেন বিরোধী জনজাতি দল তিপ্রা মথায়। আশিস দাস তৃণমূলে যোগ দিলেও পরবর্তী সময়ে জোড়াফুল শিবির ত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া বিজেপির জোটসঙ্গী জনজাতি দল আইপিএফটির বৃষকেতু দেববর্মা, মেবার কুমার জামাতিয়াও বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে আর এক জনজাতি দল তিপ্রা মথায় যোগ দিয়েছেন। ভোটের আগে শাসক জোটের আরও আধ ডজন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে বিরোধী শিবিরে শামিল হতে পারেন বলে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরা বিজেপিকে সামলাতে মাঠে নামতে হচ্ছে খোদ শাহ-নাড্ডাকে।

Previous articleতৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের আগেই নন্দীগ্রামে শহিদ বেদী ভাঙলো বিজেপির দুষ্কৃতী বাহিনী
Next articleহুগলিতে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১