গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি মমতার

প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পূণ্য স্নানের জন্য গঙ্গাসাগরে যান। দেশের কুম্ভ মেলার মতোই গঙ্গাসাগর মেলাতেও যে পরিমাণ ভিড় হয় তাতে নিঃসন্দেহে এই মেলা জাতীয় উৎসব হওয়ার দাবিদার বলে বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুক্রবার জাতীয় গঙ্গা পরিষদের( National Ganga Parishad) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সামনে একগুচ্ছ দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, খিদিরপুরে INS সুভাষের অডিটোরিয়ামে শুরু হয় বৈঠক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। আর এই বৈঠকেই গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) জাতীয় স্বীকৃতি (National recognition) থেকে সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান(Sundarban Master Plan) সম্পর্কিত দাবি-দাওয়া তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

সামনেই গঙ্গাসাগর মেলা। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পূণ্য স্নানের জন্য গঙ্গাসাগরে যান। দেশের কুম্ভ মেলার মতোই গঙ্গাসাগর মেলাতেও যে পরিমাণ ভিড় হয় তাতে নিঃসন্দেহে এই মেলা জাতীয় উৎসব হওয়ার দাবিদার বলে বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এই প্রেক্ষাপটে, শুক্রবার জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী ও একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় তীর্থ অথবা জাতীয় মেলার তকমা দেওয়ার দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়াও গঙ্গার ভাঙন (River Erosion issue)এবং পলি সংস্কার না হওয়া এই রাজ্যের পক্ষে বড় সমস্যা । আর ঠিক এই কারণেই বারবার কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নবান্ন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজে চিঠি লিখেছেন নরেন্দ্র মোদিকে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন অর্থ এবং কেন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবেশী বিহারের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের ফলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে ফের একবার সেকথা স্পষ্ট করে দেন মমতা। শুক্রবারের বৈঠকে কেন্দ্রের পদস্থ কর্তারা গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান দেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যুত্তরে বলেন, ক’টা আধুনিক শ্মশান তৈরি হল, কতগুলি ঘাট বাঁধানো হল, ক’টা সৌন্দর্যায়নের কাজ হল, শুধু তার হিসেব দিয়ে মূল সমস্যার সমাধান করা যাবে না। মালদহ থেকে ফরাক্কা, মুর্শিদাবাদ হয়ে গঙ্গার গতিপথে ভাঙন যে ভাবে সমস্যা তৈরি করছে এবং রাজ্যকে তার আর্থিক দায়ভার যে ভাবে বইতে হচ্ছে, সেই বিষয়গুলি পর্যালোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

শুক্রবার গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে উঠে আসে সুন্দরবনের প্রসঙ্গ। যেভাবে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝাপটা সামলাচ্ছে সুন্দরবন তা সে আয়লা হোক বা আমফান, -প্রত্যেক বছর বছর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে হয় রাজ্য সরকারকে। সূত্রের খবর, এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সুন্দরবন মাস্টারপ্ল্যানে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপকূলবর্তী এলাকাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে নীতি আয়োগ যাতে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করে সেই দিকেও প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

বছর পয়লায় তৃণমূল ভবনের ভিতপুজো, থাকবেন অভিষেক সহ শীর্ষ নেতৃত্ব

প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে রাজ্য কেন্দ্র অসহযোগিতার প্রসঙ্গ বারবার ফিরে আসে। শুক্রবার সেই বিষয়টিকেও স্পষ্ট করে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের কাছে বকেয়া টাকার কথাও এ দিন শুনিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান এখনও ৬৫০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। অথচ সেই প্রকল্পে জব কার্ডধারীদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে গিয়ে রাজ্যকে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে।

গঙ্গাসাগর মেলার জাতীয় স্বীকৃতি থেকে সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান – জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই সমস্ত দাবিদাওয়া তুলে ধরে বাংলার মানুষের উন্নতির লক্ষ্যে ন্যায্য পাওনার বিষয়টি কেন্দ্রের কাছে স্পষ্ট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মত ওয়াকিবহল মহলের।

 

Previous articleবছর পয়লায় তৃণমূল ভবনের ভিতপুজো, থাকবেন অভিষেক সহ শীর্ষ নেতৃত্ব
Next articleদিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে পন্থকে !