তাঁদের মধ্যে কীসের সম্পর্ক? বিশ্ববাংলা সংবাদে অকপট জবাব শোভন-বৈশাখী

তাঁদের দু'জনের বয়সের পার্থক্য ১৫ বছর। গত কয়েক বছর দু'জনের বাসভবনের ঠিকানা একই। তারই মাঝে আইনি প্রক্রিয়ায় স্বামী মনোজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের

শোভন-বৈশাখী। এই জুটি মাঝে মধ্যেই চলে আসেন সংবাদ শিরোনামে। সেটা একরাশ বিতর্ক নিয়ে হোক কিংবা দশমীর সন্ধ্যায় টিভি চ্যানেলে সিঁদুর খেলায়। আবার কখনও একে অপরের হাত ধরে রোমান্টিক গানের তালে কোমর দোলানো। আদালত হোক বা শপিং মল কিংবা সংবাদ মাধ্যমে ইন্টারভিউ, সব জায়গাতেই ম্যাচিং পোশাকে ধরা দেন তাঁরা। এককথায় শোভন-বৈশাখী যেন জুটিতে লুটি!

আরও পড়ুন:রত্নার কাছে “ছেলেধরা” লিস্টে কাদের নাম আছে? জানতে চান শোভন-বান্ধবী বৈশাখীও

তাঁদের দু’জনের বয়সের পার্থক্য ১৫ বছর। গত কয়েক বছর দু’জনের বাসভবনের ঠিকানা একই। তারই মাঝে আইনি প্রক্রিয়ায় স্বামী মনোজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর স্ত্রী রত্নার সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা এখনও ঝুলে আদালতে।

খুব স্বাভাবিক শোভন-বৈশাখীর সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে রাস্তাঘাটে হোক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় জোরচর্চা। এই সমাজে প্রত্যেক সম্পর্কের একটি নাম থাকে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভনবাবুর সঙ্গে অধ্যাপিকা বৈশাখীদেবীর মধ্যে এমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নাম কী? এই কৌতূহল কিন্তু অনেকের মধ্যেই রয়েছে। একান্ত ব্যক্তিগত হলেও তাঁদের এই সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক মন্তব্য উড়ে আসে।

এরই মাঝে বিশ্ববাংলা সংবাদের লাইভ অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। সেখানে একটি অংশ তাঁদের দু’জনের মধ্যে ঠিক কীসের সম্পর্ক, সেই সম্পর্কের নাম কী জানতে চান সঞ্চালক। তবে এমন একটি বাউন্সার প্রশ্নকে সামলাতে এতটুকু অস্বস্তি হতে দেখা যায়নি শোভনবাবু কিংবা বৈশাখীদেবীকে। দু’জনেই খুব স্বচ্ছন্দে তাঁদের মতো করে সম্পর্কের সমীকরণটির ব্যাখ্যা দেন।

পৃথিবীতে দু’জন মানুষের (একজন পুরুষ ও মহিলা) মধ্যে এমন অনেক সম্পর্ক বা বন্ধন থাকে, তার কোনও আভিধানিক নাম হয় না। অন্তত এখনও পর্যন্ত তাঁদের সম্পর্কের যে রসায়ন সেখানে একে অপরের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা, সম্মান, বিশ্বাস, ভরসা , ভালোবাসা রয়েছে একটুকু বোঝা গেলেও, ঠিক কীভাবে এই সম্পর্কে “বিশেষণ” করা যায়, তা শোভন-বৈশাখীও বলতে পারলেন না।

এ প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় শুধু এটুকুই বলেন, “আমি এটুকু বলতে পারি, বৈশাখীর কন্যা ইরিনা আমার সন্তান। আমার পিতৃপরিচযে সে বড় হয়ে উঠুক, এটাই চাই। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। বৈশাখী তাঁর মেয়েকে আমার পিতৃপরিচয়ে বড় করতে চায়নি। তবে আমি চাই। বরাবর বলে এসেছি আমার তিন সন্তান— সপ্তর্ষি, সুহানি, ইরিনা। এদের তিন জনের প্রতিই আমি সমান দায়বদ্ধ।”

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আরও সংযোজন, “রত্নাদেবীর মতো বৈশাখী কখনও আমার অন্য দুই সন্তানকে নিয়ে মন্তব্য করেননি। এমনকী, বৈশাখী তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় অসুস্থ স্বামীর থেকে সন্তানপালনের অর্থও নেননি। কিন্তু আমি রোগশয্যায় থাকাকালীন উনি (রত্না) আমার সন্তানদের হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি থেকে আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা বুঝে নেওয়ার জন্য।”

এমনকি রত্নার তাঁকে ‘আমার স্বামী’ বলাও যে শোভনের পছন্দ নয়, তা বুঝিয়ে দিয়ে শোভন বলেছেন, ‘‘আপনিই বলেছেন, আমি হলাম কুলাঙ্গার। এটা বলতে আপনার বাধেনি। আমাকে দুশ্চরিত্র বলতেও বাধেনি। বিভিন্ন বিশেষণে আঘাত করেছেন যাঁকে, তাঁকে নিজের স্বামী বলেন কী করে? আমার লড়াই চলছে, সে দিন আর বেশি দূরে নেই, যে দিন আপনার নামের পাশ থেকে চট্টোপাধ্যায় সরে যাবে।”

সম্প্রতি রত্না চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, “কেন সিঁদুর পরেন বৈশাখী? ওঁর তো ডিভোর্স হয়ে গেছে। নিজের মেয়েটাকে কেন বার বার আমার স্বামীর সন্তান বলে সব জায়গায় পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন?” বিশ্ববাংলা সংবাদের সাক্ষাৎকারে তারই জবাব শোভন অকপটে জবাব দেন, কেন ৫ বছর ধরে তিনি বৈশাখীর সঙ্গেই। কেন ২২ বছরের সংসারের পরেও তিনি মনে করেন ২২ বছরের সেই সম্পর্ক ছিল তাঁর জীবনের “বড় ভুল”! সেইসিঙ্গে জানিয়ে দেন, তিনি যতদিন বাঁচবেন, ততদিন পর্যন্ত যেন বৈশাখী শাঁখা-সিঁদুর-মঙ্গলসূত্র পড়েন। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিঁদুর পরতে বলেছেন তিনিই। শোভনের এমন আর্জিতে তাঁকে সম্মান দিয়ে সহমত পোষণ করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

 

Previous articleবিবাহবার্ষিকীতেও আলাদা থাকবেন নীল-তৃণা! তবে কী তাঁদের সম্পর্কে সত্যিই ছেদ পড়তে চলেছে?
Next articleবিশ্বভারতীর ন্য*ক্কারজনক বিবৃতিতে কড়া নিন্দা শিক্ষাবিদ থেকে রাজনৈতিকমহলের