বিয়ে করতে চান, ত্রিপুরা ভোটের আগে আচমকা রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা তিপ্রা সুপ্রিমো প্রদ্যোতের!

ডাবল ইঞ্জিন বিজেপির আমলে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়ে জঙ্গল রাজ্যে পরিণত হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফের মানুষ বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মার তিপ্রা মথা।

আর কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই ত্রিপুরায় হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন (Tripura Assembly election)। রাজনৈতিক মহলের ধারণা এবার ভোটের পর ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরায় সরকার গঠনে নির্ধারণকারী শক্তি হতে পারে তিপ্রা মথা। কিন্তু আচমকা ভোটের (Election) মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে রাজনীতি থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করলেন ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য তথা তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা (Pradyot Vikram Manikya Debvarma)। আর রাজনীতির ময়দানে নয়, বিপুল সম্পত্তির মালিক প্রদ্যোত মাণিক্য বিয়ে করে সংসারী হতে চান। এবং খুব শ্রীঘ্রই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন ত্রিপুরার (Tripura)রাজা প্রদ্যোত মাণিক্য।

এবার ত্রিপুরার ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে ২৫ বছরের বাম অপশাসনের বিরুদ্ধে বিকল্প খুঁজতে গিয়ে বিজেপিকে রাজ্যে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় এনেছিলেন ত্রিপুরার মানুষ। কিন্তু ডাবল ইঞ্জিন বিজেপি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ তো করতে পারেনি, বরং খাল কেটে কুমির আনার মতো বিজেপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে রাজ্যকে আরও পিছিয়ে দিয়েছেন। বিজেপির এই পাঁচ বছরে উন্নয়ন তো হয়নি, বরং রাজ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে আরও পিছিয়ে পড়ছে। বেড়েছে সন্ত্রাস, অশান্তি। ডাবল ইঞ্জিন বিজেপির আমলে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়ে জঙ্গল রাজ্যে পরিণত হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফের মানুষ বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মার তিপ্রা মথা।

এবার উপজাতি সংরক্ষিত ২০টি আসনের বাইরে তপশিলী জাতি সংরক্ষিত এবং সাধারণ আসন মিলিয়ে “একলা চলো” নীতিতে ৪২টিতে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন প্রদ্যোৎ মাণিক্যর দল। যদিও তিনি নিজে ভোটে লড়ছেন না। শুধু তাই নয়, দলের প্রথম সারির নেতা বলে যাঁরা পরিচিত, তাঁদেরও মনোনয়ন দেননি। এডিসি নির্বাচনে জিতেছিলেন ঠিকই কিন্তু নিজের হাতে ক্ষমতা থাকা সত্বেও দায়িত্ব নেননি ত্রিপুরার রাজা। বিধানসভা ভোটেও হেলিকপ্টার নিয়ে রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিতে প্রচার করে গিয়েছেন। তাঁর দাবি, একার শক্তিতে এবার ত্রিপুরায় সরকার গড়বে তিপ্রা মথা।

এমন এক ইতিবাচক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রদ্যোৎ মাণিক্য শেষবেলায় ঘোষণা করে দিলেন তাঁর রাজনৈতিক সন্ন্যাসের কথা। রাজা বললেন, এটাই তাঁর শেষ রাজনৈতিক লড়াই। এরপর আর কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে তিনি ভাষণ দেবেন না। নিজের জাতির জন্য একটা শেষ লড়াইয়ে তিনি নেমেছেন। এবার তিনি ভোট রাজনীতির বাইরে চলে যাবেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজধানী আগরতলায় একটি অনুষ্ঠানে প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মন জানিয়েছিলেন, রাজনীতি অনেক হয়েছে। এবার তিনি বিয়ে করে সংসারী হবেন। তাঁর জীবনসঙ্গী দরকার। উড্ডয়ন্ত রাজপ্রাসাদের যেন প্রাণ নেই। শিলংয়ে ত্রিপুরা ক্যাসেল। কলকাতার বালিগঞ্জে পড়ে রয়েছে প্রাসাদ। তাই সংসারের প্রতি মনোনিবেশ করতে চান তিনি।

কিন্তু হঠাৎ ভোটের কয়েক ঘন্টা আগে প্রচারের শেষবেলায় কেন আচমকা প্রদ্যোত কিশোর রাজনীতি ছাড়ার বার্তা দিলেন? রাজার এমন বক্তব্যে গোটা ত্রিপুরা জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তিপ্রা মথার কর্মী-সমর্থকরাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা অন্ন অনেক কিছু ঘোষণা করেছেন, যা পরবর্তীতে হয়নি। এবারও ভোটের আগে আবেগের বশে অথবা সুপরিকল্পিতভাবেই এমন সব বক্তব্য রেখেছেন তিনি? যা নিয়ে ত্রিপুরা রাজনীতিতে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে।

 

Previous articleবিতর্ক চান না! কোহিনুর ছাড়াই মুকুট পরবেন ক্যামিলা
Next articleলিভ-ইন সঙ্গিনীকে খু**ন করে দেহ বিছানার নীচে ! গ্রেফ**তার কীর্তিমান রোমিও