মেঘালয়ে ‘রাজনৈতিক দাওয়াই’ দিয়ে বিজেপিকে বিদায় করার বার্তা মমতার

পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় বিএসএফ ক্যাম্পে মহিলা কনস্টেবলকে ধর্ষণের ঘটনারও নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি-র অপশাসনের উদাহরণ তুলে ধরেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যেকোনও জায়গায় ক্ষমতায় এলেই এনআরসি, সিএএ-র চালু করতে চায় বিজেপি। এতদিন মেঘালয়ে এনপিপি-র সঙ্গে জোট করে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি।

২৭ তারিখ মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচন। শেষবেলার প্রচারে ঝড় তুলতে মেঘালয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। Democratic Medicine অর্থাৎ গণতান্ত্রিক দাওয়াই দিয়ে বিজেপিকে (BJP) বিদায়ের বার্তা দেন মমতা। এবার মেঘরাজ্যে তৃণমূল (TMC) সরকার প্রতিষ্ঠার ডাক দেন দলের সভানেত্রী। তবে, স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দিল্লি বা গুয়াহাটি নয়, মেঘালয় চালাবে মেঘালয়ের ভূমিপুত্র। কেন্দ্রীয়দল পাঠানো নিয়েও দিল্লির মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

কথায় কথায় বাংলায় কেন্দ্রীয়দল আসে। কিন্তু মেঘালয়ের সীমান্তে গুলি চললেও কেউ আসে না। বুধবার, মেঘালয়ে রাজাবালার তিলাপাড়ার মাঠে নির্বাচনী জনসভা থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় বিএসএফ ক্যাম্পে মহিলা কনস্টেবলকে ধর্ষণের ঘটনারও নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি-র অপশাসনের উদাহরণ তুলে ধরেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যেকোনও জায়গায় ক্ষমতায় এলেই এনআরসি, সিএএ-র চালু করতে চায় বিজেপি। এতদিন মেঘালয়ে এনপিপি-র সঙ্গে জোট করে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি।

যদিও, এবার আলাদা ভাবে সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে দুইদল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, জিতলে ভোটের পরেও জোট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং, তৃণমূল ছাড়া অন্য কাউকে ভোট দেওয়া মনে, পরোক্ষে বিজেপিকেই ভোট দেওয়া। “বিজেপিকে ভোট দেবেন না। অন্যদের ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। নিজের ভোট ভাগ করবেন না। আপনার একটা ভোট জরুরি”। মোদি সরকারকে তুলোধনা করে মমতা বলেন, এলআইসি -র কোনও ভবিষ্যত নেই। গ্যাসের দাম বাড়ছে।

মমতার কথায়, মেঘালয়ে উন্নয়ন করতে পারবে একমাত্র তৃণমূল। এখন সামান্য চিকিৎসা করাতেও মেঘালয় থেকে কলকাতা-গুয়াহাটি যেতে হয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন তোলেন, কেন মেঘালয়ে ভালো হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় হবে না! বাংলায় তাঁর আমলে বাংলায় উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, বাংলার মানুষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু থেকে সব সুবিধা পান। কেন সেই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না! প্রশ্ন তোলেন মমতা।

এরপরেই মেঘালয়ে পালাবদলের ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “‘রানৈতিক ওষুধ’ দিয়ে বিজেপিকে বিদায় করুন। মেঘালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে বদলে ফেলুন, তৃণমূলকে ভোট দিন।” মমতা স্পষ্ট বার্তা দেন, মেঘালয় গুয়াহাটি বা দিল্লি চালাবে না। মেঘালয় চালাবে মেঘালয়ই। নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে মমতা জানান, “আমরা চালাব না। আমরা বন্ধু। আমরা সাহ্যয্য করব”। মেঘালয়ের পাশেই কোচবিহার। ”বাংলা পাশেই আছে। আমি কথা দিচ্ছি বারবার আসব, লক্ষ্য রাখব।” ত্রিপুরায় ভয় দেখিয়ে ভোট করিয়েছে বিজেপি- অভিযোগ করেন তৃণমূল সভানেত্রী।

বরাবর নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় মহিলাদের উন্নয়নে বিভিন্ন কাজ করেছেন তিনি। মেঘালয়ে গিয়েও সেই বিষয়ে জোর দেন তৃণমূল সভানেত্রী। ”আমি নারী ক্ষমতায়ন চাই। চাই আপনারা এগিয়ে আসুন।” মমতার কথায়, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, তৃণমূলই ভরসা। ভোট কিনতে বিজেপি টাকা ছড়াতে পারে। অভিযোগ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ”ওরা টাকা দিলে কিছু কিনে খেয়ে ফেলুন। কিন্তু তৃণমূলকেই ভোট দিন।” তবে, টাকা দিলেও ইডি-সিবিআই দিয়ে তা কেড়ে নেবে বলে কটাক্ষ করেন মমতা। তৃণমূল জিতলে শপথগ্রহণে আসবেন, মেঘালয়ে দাঁড়িয়ে কথা দেন দলনেত্রী।

 

 

Previous articleনজর মহাকাশে, নাসার শীর্ষে ভারতীয়
Next articleপান্ডুয়ায় শ্যু*টআউটের ঘটনায় ধৃতকে আদালতে পেশ