সাগরদিঘির উপনির্বাচনে নিজেদের দখলে থাকা আসনটি এবার হাতছাড়া হয়েছে শাসক দল তৃণমূলের। অথচ, ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের সময় থেকে এই আসনটি ছিল ঘাসফুল শিবিরের দখলে। মুর্শিদাবাদের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে টানা তিনবার জিতেছিলেন তৃণমূলের সুব্রত সাহা। এবং প্রতিটি ভোটেই তাঁর জয়ের মার্জিন বেড়েছে। শেষবার ২০২১ নির্বাচনের পর সুব্রত সাহা মন্ত্রীও হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন হয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ভোটের ফলাফল বেরোতে দেখা যায় বাম-সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। তৃণমূল দ্বিতীয় হয়েছে।

কেন এমন ফলাফল হল তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয় তৃণমূলের অন্দরে। খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ফলাফল নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, জাভেদ খান, গুলাম রবান্নি, সাবিনা ইয়াসমিনকে নিয়ে চার সদস্যের কমিটিও গঠন করেছেন তিনি।

সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ভোটের ফল নিয়ে তৃণমূলের গঠিত কমিটির ময়নাতদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তৃণমূলের খারাপ ফল নিয়ে দীর্ঘ সময় কাঁটাছেড়া হয়। উঠে এসেছে ২৫টি কারণ। আগামী সপ্তাহে রিপোর্টটি জমা দেওয়া হবে তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে।

কারণগুলি লিখিতভাবে নেত্রীর কাছে পাঠাতে চলেছে কমিটি। ভোটের সময় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ সক্রিয়ভাবে কাজ করেনি বলে দলীয় সূত্রের অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ভোটের সময় অনেক কর্মী নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ভোটের সময় তাঁরা কেন এই কার্যত অনুপস্থিতির ভূমিকায় ছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী স্পষ্টত বলেছেন, দলীয় সংগঠন গুছিয়ে কাজ করতে পারেনি। কাজ করেনি একাংশ। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের দিকগুলিও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে ধরতে পারেননি বহু কর্মী।

মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, দল বা সংসার বড় হলে ঠেলাঠেলি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু জায়গায় তা প্রকট হয়ে উঠেছে। পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করেছে এবং কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস অর্থ বিলি করে ভোট কেনার চেষ্টা করেছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছে, সাগরদিঘির ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টিতে হার হলেও, আগামিদিনে ড্যামেজ কন্ট্রোল সম্ভব।

আরও পড়ুন:দোল খেলার নামে বিদেশিনীর সঙ্গে চূড়ান্ত ‘অ*সভ্যতা’! লজ্জিত গোটা দেশ
