কথায় কথায় চাকরি খাবেন না, অন্যায় হলে কড়া ব্যবস্থা নিন: চাকরিহারাদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায়ই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি যাচ্ছে শয়ে শয়ে লোকের। মঙ্গলবার, আলিপুর (Alipur) জাজেস কোর্টের অনুষ্ঠানে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চাকরিহারাদের পরিবারের কথা বলতে গিয়ে কার্যত আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। তাদের জন্য আমার কোনও দয়া নেই। কিন্তু ছেলেমেয়েগুলো যাতে বঞ্চনার শিকার না হয়। তাঁদের চাকরিটা আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। আইন অনুযায়ী তারা ভুল করে থাকলে তাঁদের সুযোগ দেওয়া হোক। দরকার হলে তাঁরা আবার পরীক্ষা দিক।” আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের (Bar Association) ঋষি অরবিন্দের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন তিনি।

এদিন, কার্যত নিয়োগ বাতিলের বিরোধিতা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না। এটা রাজনীতি নয়।” বাম আমলের বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি সংক্রান্ত রায়ের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সেই রায়ে চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি। সংশোধনের কথা বলেছিলেন। এখন কথায় কথায় ৩ হাজার, ৪ হাজার চাকরি বাদ। সবাই তো তৃণমূল ক্যাডার নয়”। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ির চাকরিহারার আত্মহত্যার উল্লেখ করেন। বীরভূমেও এক চাকরিহারার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মমতা বলেন, পরিবারে কান্না দেখে তিনি শোকাহত। বলেন, “ছবিটা দেখে সকাল থেকে আমার মন খারাপ। ওদের পরিবারটাও তো আমাদের পরিবার।” চাকরিহারাদের পুনর্নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করেন মমতা। বলেন, “আমি একটু ভেবে দেখতে বলছি। কালকেও দুজন আত্মহত্যা করেছে। কেউ যদি ভুল করে থাকে তাহলে তার দায়িত্ব এঁরা নেবে কেন? চাকরি পেয়ে অনেকে সংসার করেছে। বাড়িতে মা, স্ত্রী আছে। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে খাবে কী? ছেলেমেয়েগুলো যাতে বঞ্চনার শিকার না হয়। তাদের চাকরিটা আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। আইন অনুযায়ী তাঁরা ভুল করে থাকলে তাদের সুযোগ দেওয়া হোক। দরকার হলে তাঁরা আবার পরীক্ষা দিক। দরকার হলে তাঁদের জন্য আলাদা বন্দোবস্ত হোক। আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই আমরা করে দেব।”

সিপিআইএমনেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চাকরি দেওয়ার লোক নেই, চাকরি নিয়ে নিচ্ছে। PIL এখন পলিটিক্যাল ইনটারেস্ট লিটিগেশন হয়ে গেছে। আমাকে আপনার পছন্দ হতে নাও পারে, আমার দলকে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, আমার সরকারকে আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, আমাকে মারুন যা কিছু করুন। কিন্তু দয়া করে রাজ্যটাকে বদনাম করে ছাত্র-যৌবনের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেবেন না। আইনজীবীদের কাছে আবেদন করছি, দয়া করে বিষয়টি ভেবে দেখবেন।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায় তাঁদের আমলে কোনও বাম ক্যাডারের চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন:আদানি গোষ্ঠীকে বিপুল টাকা ঋণ দিয়েছে LIC, টাকার অঙ্ক প্রকাশ্যে আনলেন নির্মলা

 

Previous articleআদানি গোষ্ঠীকে বিপুল টাকা ঋণ দিয়েছে LIC, টাকার অঙ্ক প্রকাশ্যে আনলেন নির্মলা
Next articleখনি অঞ্চলে পুনর্বাসনের সমীক্ষায় নতুন অ্যাপ উদ্বোধনে বিদ্যুৎমন্ত্রী