ক্ষমতায় এসেই ১০ হাজার এ*নকাউন্টার! যোগীর ‘দাদাগিরি’-তে দেশজুড়ে নিন্দা

ক্ষমতায় এসে লাগাতার এ*নকাউন্টারের ঘটনায় আগেভাগেই মুখ পুড়েছিল যোগী আদিত্যনাথের। একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কীভাবে লাগাতার এ*নকাউন্টারের পথে হাঁটা সম্ভব তা নিয়ে বিরোধীদের লাগাতার আ*ক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে।

উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) দেওয়া সরকারি তথ্যে এবার চোখ কপালে দেশবাসীর। বিগত কয়েক বছরে এনকাউন্টারের (Encounter) সংখ্যা দেখলে কার্যত মাথা ঘুরে যেতে বাধ্য। জানা গিয়েছে, গত ৬ বছরে ১০ হাজার এনকাউন্টার হয়েছে যোগীরাজ্যে। আর সেই ঘটনায় ৬৩ জন দুষ্কৃতীর মৃত্যুও হয়েছে। শুক্রবার এমনই দাবি করা হয়েছে যোগী সরকারের দেওয়া এক সরকারি তথ্যে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, এনকাউন্টারে এক পুলিশ অফিসারও (Police Officer) শহিদ হয়েছেন। তবে ক্ষমতায় এসে লাগাতার এনকাউন্টারের ঘটনায় আগেভাগেই মুখ পুড়েছিল যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath)। একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কীভাবে লাগাতার এনকাউন্টারের পথে হাঁটা সম্ভব তা নিয়ে বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে। আর এবার রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে সেই এনকাউন্টারের পরিসংখ্যান সামনে আনল উত্তরপ্রদেশ সরকার। যা নিয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হল যোগী আদিত্যনাথকে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেন যোগী আদিত্যনাথ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর যোগীর লক্ষ্য ছিল তাঁর সরকার অপরাধমূলক কাজ এবং দুষ্কৃতীদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স (Zero Tollerance) নীতি পালন করবে।আর সেই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই রাজ্যকে অপরাধমুক্ত করতে ঢালাও ক্ষমতা দেওয়া হয় পুলিশ প্রশাসনকে। কিন্তু তাই বলে শাস্তি মানেই কী এনকাউন্টার? তাহলে তো সংবিধানকে অগ্রাহ্য করছেন যোগী। ক্ষমতায় আসার গত ছ’বছরের মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি এনকাউন্টার হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এনকাউন্টারে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৬৩ জন দাগী অপরাধী। শহিদ হয়েছেন এক পুলিশ অফিসারও। তবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হিসাব বলছে, ১০ হাজার ৫০০ সংঘর্ষে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ১৪০০ পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, এই দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২৩ হাজারের বেশি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হিসাব আরও বলছে যে, ২০২২-এর ২৫ মার্চ থেকে ওই জুলাই মাত্র তিন মাসের মধ্যে ৫২৫টি এনকাউন্টার হয়েছে।

তবে সরকারি পরিসংখ্যান সূত্রে খবর, রাজ্যের মধ্যে মীরাটেই (Meerut) সবচেয়ে বেশি এনকাউন্টার হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এখানে মোট ৩ হাজার ১৫২টি এনকাউন্টার হয়েছে সেখানে। এরপরের স্থানেই রয়েছে আগ্রা (Agra)। যেখানে ১ হাজার ৮৪৪টি এনকাউন্টার হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে ৬৩ জন অপরাধী এবং আহত ১ হাজার ৭০৮ জন। এছাড়াও এই সময় উত্তরপ্রদেশে ধরা পড়েছে ৫ হাজার ৯৬৭ জন। প্রাণ হারিয়েছেন এক পুলিশ অফিসার। আহত হয়েছেন আরও ৪০১ জন পুলিশকর্মী। আর পুলিশ ও সরকারি তথ্যের হিসাব সামনে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা।

তবে প্রশাসনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যের মসনদে বসার পর থেকেই আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হতে শুরু করে। মাফিয়া ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছিলেন যোগী। আর তারই সুফল মিলেছে হাতেনাতে। তবে এমন পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পর চুপ করে বসে নেই বিরোধীরাও। তাঁদের অভিযোগ, ‘উত্তরপ্রদেশ মডেলের’ আসল ছবিটা মানুষ প্রতিনিয়ত চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন। তাই এসব তথ্য দিয়ে আসলে লাভের লাভ কিছুই হবে না। আসল সত্য মানুষ জানেন। আর এদিন তথ্য প্রকাশের পরই সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের তথ্যের কোনও মিলই পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

 

 

 

Previous articleসক্রিয় পুলিশ, ট্যাংরায় খুনের ঘটনায় বাড়ল গ্রেফতারি
Next articleনজরে পঞ্চায়েত: বীরভূমের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিলেন মমতা, সংখ্যালঘু সেলে মোশারফ