‘বাপ’-‘দাদা’ থেকে ‘কালো ছাগল’: রেল স্টেশনের নাম দেখলে চোখ কপালে

তবে রেল স্টেশনে (Rail Station) নামের ক্ষেত্রে সাধারণত জায়গার নাম বা বৈশিষ্ট্যের উপরই জোর দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও অদ্ভুত নামের ছড়াছড়ি। সেরকমই প্রায় ১২টি নামের পাওয়া যাচ্ছে দেশ জুড়ে।

বিশ্ববন্দিত নাট্যকার যতই বলুন, নামে কী আসে যায়! নাম মাহাত্ম্য সবসময়ই রয়েছে। আসলে নামে অনেক কিছু এসে যায়। যেমন বাংলায় প্রবাদ অনুযায়ী, “কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন” রাখলে কথা হয়, ঠিক সেরকমই। তবে বিচিত্র এই দেশ। বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। এক এক জায়গায় এক এক রকমের ভাষা। রাজ্যের মধ্যেও বিভিন্ন আঞ্চলিক উপভাষায় বদলে যায় কথার অর্থ। তবে জায়গার নাম হয় সেই জায়গার ইতিহাস অনুযায়ী। কিন্তু সেই সব নামের মধ্যেও কখনও কখনও মজা, আবার কখনও থাকে ব্যঙ্গ। তবে রেল স্টেশনে (Rail Station) নামের ক্ষেত্রে সাধারণত জায়গার নাম বা বৈশিষ্ট্যের উপরই জোর দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও অদ্ভুত নামের ছড়াছড়ি। সেরকমই প্রায় ১২টি নামের পাওয়া যাচ্ছে দেশ জুড়ে।

আমাদের পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড। সেখানে স্টেশনের নাম ‘দারু‘ অর্থাৎ মদ। আবার রাজস্থানের এক স্টেশনের নাম ‘শালি‘। তেলেঙ্গানা স্টেশন রয়েছে যার নাম ‘বিবিনগর‘। বাবারও থুড়ি শ্যালিকারও বাবা আছে। তাই রাজস্থানে শালির পাশাপাশি রয়েছে রেল স্টেশন ‘বাপ‘।

জন্তু-জানোয়ারের নামেরও কমন্তি নেই। পাঞ্জাবে জলন্ধরে এক স্টেশনের নাম ‘কালা বাকরা‘ অর্থাৎ কালো ছাগল। এখানে গুরবচন সিং নামে একজন ভারতীয় সেনা অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু তাঁর নামে স্টেশন না করে স্টেশন হয়েছে কালো ছাগলের নামে! তবে কালো ছাগলেই থেমে থাকেনি ভারতীয় রেল। একেবারে পৌঁছে গিয়েছে শুয়োরে। ‘শুয়োর‘ স্টেশনটি উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায়। স্পষ্ট হিন্দি এবং ইংরেজিতে লেখা রয়েছে নাম ‘শুয়োর‘। ছাগল, শুয়োর যদি থাকে তাহলে মোষই বা বাকি থাকে কেন? তিনিও আছেন। তেলেঙ্গানার নির্মল জেলায় একটি স্টেশনের নাম ‘ভ্যাঁস‘ অর্থাৎ মোষ। এর পিছনে আছেন বাঘের মাসি বেড়াল। সেটা উত্তরপ্রদেশেরই শোনভদ্র জেলায়। সেখানকার একটি স্টেশনের নাম ‘বিল্লি জংশন‘। তবে সেটা বিড়ালের নামে না স্থানীয় কোনও ব্যক্তির নামে তা জানা যায়নি। তবে হরিয়ানার ‘দিওয়ানা‘ স্টেশনের আড়ালে নিশ্চয়ই কোনও গল্প আছে। স্থানীয়দের কথায়, এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই রয়েছে প্রেমিক সত্তা। সেই কারণেই স্টেশনের নামে ‘দিওয়ানা‘। প্রেমিক থাকলে, তার মৌতাতের ব্যবস্থা করা দরকার। সেই মতোই ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলায় স্টেশনের নাম ‘দারু স্টেশন‘। তবে এরকম নামকরণের পিছনে এই স্টেশনের কোনও বাড়তি বৈশিষ্ট্য নেই। তা সত্ত্বেও কেন যে এই স্টেশনের নাম ‘দারু‘ তা জানা যায়নি! তবে এসবের পাশে আছে বান্ধবী। অর্থাৎ ‘সহেলি‘। বৌ থাকবে, শ্যালিকা থাকবে আর বান্ধবী থাকবে না তা কি হয়! মধ্যপ্রদেশের সুরঙ্গাবাদ জেলায় একটি স্টেশনের নাম ‘সহেলি‘। একেবারে নিরিবিলি নির্জন ছোট্ট স্টেশন যেন কোনও বান্ধবী অপেক্ষা করছে তার সখার জন্য।

তবে এইসবের উপরে আছেন দাদামশাই অর্থাৎ ‘নানা‘। রাজস্থানের উদয়পুরের একটি স্টেশনের নাম ‘নানা‘ অর্থাৎ দাদামশাই। বেশ ভারিক্কি চালেই বসে আছেন স্টেশন জুড়ে। মহারাষ্ট্রের একটি শান্ত নিরিবিলি স্টেশনের নাম অবশ্য অংকে ভীতি থাকা লোকেদের পক্ষে বেশ ভয়ের। কারণ স্টেশনের নাম ‘পথরি‘ যার অর্থ ক্যালকুলাস। ‘দিওয়ানা‘, ‘বিবি‘,‘সহেলি‘,‘বাপ‘,‘নানা‘কে নিয়ে জমিয়ে ভারতীয় রেলের সংসার। সঙ্গে রয়েছে ‘দারু‘। সামনে চরে বেড়াচ্ছে ‘শুয়োর‘, ‘ভ্যাঁস‘,‘কালা বাকরা‘ আর ‘বিল্লি‘। নাম মাহাত্ম্য বোধহয় একেই বলে!

 

 

Previous articleRailway Update : শুধু হাওড়া নয়, দু*র্ভোগ শিয়ালদহ ডিভিশনেও, বাতিল একাধিক ট্রেন
Next article‘সরকার এবং বিচারব্যবস্থার মধ্যে দ্ব*ন্দ্ব নেই, বার্তা কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু