পদ থেকে অবিলম্বে সরানো হোক উপরাষ্ট্রপতি-আইনমন্ত্রীকে! সুপ্রিম কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা

সাংবিধানিক পদে থেকে কোনও ব্যক্তির সরকারের হয়ে সওয়াল করা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করে উপরাষ্ট্রপতি সাফ জানিয়েছেন, সংসদে পাশ হওয়া আইন মানতে বাধ্য দেশের শীর্ষ আদালত।

বিচারপতি নিয়োগের(Justice Recruitment) ক্ষেত্রে সরকারের মতামতও মানতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) ও হাইকোর্টের (High Court) বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম (Collegium) ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আগেও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু (Union Law Minister Kiren Rijiju)। আর সেই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। আর এবার সরকারের হয়েই সওয়াল করলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। আর সাংবিধানিক পদে থেকে কোনও ব্যক্তির সরকারের হয়ে সওয়াল করা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করে উপরাষ্ট্রপতি সাফ জানিয়েছেন, সংসদে পাশ হওয়া আইন মানতে বাধ্য দেশের শীর্ষ আদালত। আর উপরাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর এমন বেনজির দাবির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।

মঙ্গলবার বম্বে লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (Bombay Lawyers Association) উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছে। তবে মুম্বইয়ের আইনজীবী সংগঠনটি প্রথমে বম্বে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে কিন্তু বম্বে হাইকোর্ট মামলার বিষয়বস্তু শোনার পর মামলা খারিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। আর সেই মামলা খারিজের প্রতিবাদেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আইনজীবীদের সংগঠনটি। বম্বের আইনজীবী সংগঠনটি সাফ জানিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি ও আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে আখেরে অসম্মান হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। আর সেকারণেই তাঁদের দুজনকেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিক সর্বোচ্চ আদালত।

উল্লেখ্য, এর আগেও বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম ইস্যুতে একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে এই আবহে একাধিকবার সংঘাতেও জড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্র নয়া নির্দেশিকা জারি করে সাফ জানিয়ে দেয়, বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে মানতে হবে কলেজিয়াম সিস্টেমকেই। তবে কেন্দ্র এবং আইনমন্ত্রী বারবার সওয়াল করেছে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম নয়, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপেই সম্পন্ন হোক নিয়োগ প্রক্রিয়া। তবে রিজিজুর পর উপরাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্যে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। একজন ব্যক্তি সাংবিধানিক পদে থেকেও কীভাবে সরকারের হয়ে ব্যাট ধরতে পারেন তা নিয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে জগদীপ ধনকড়কে।

এদিকে, কলেজিয়াম অবসানের উদ্দেশে সরকারের হাতে ক্ষমতা নিতে সংসদে আইন পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সুপ্রিম কোর্ট তারপরই সংসদে পাশ হওয়া আইন অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেয়। আর শীর্ষ আদালতের সেই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন উপরাষ্ট্রপতি। আর সেকারণেই তিনি মনে করেন, সংসদে পাশ হওয়া আইন মানতে বাধ্য সুপ্রিম কোর্ট। আর উপরাষ্ট্রপতি ও আইনমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে বেশ চটেছেন বম্বে লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। আর সেকারণেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।

 

 

Previous articleপ্রেম নয় দাম্পত্যের সূচনায় সিলমোহর, বাগদান সারলেন পরিণীতি – রাঘব !
Next articleআইপিএল থেকে ছিটকেই গেলেন ঋষভ পন্থ, দিল্লির দলে বাংলার অভিষেক