দেবশ্রীকে বলতেই দিলেন না লকেট, বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকে দুই সাংসদের মধ্যে তুমুল অ.শান্তি

সংবাদকর্মীদের সামনেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন দেবশ্রী চৌধুরি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতে না হতেই লকেটের দিকে রনংদেহী মূর্তিতে কার্যত আঙুল উচিয়ে তেড়ে যান দেবশ্রী।

রামনবমীর (Ramnavami) মিছিলকে কেন্দ্র করে বাংলার বুকে একের পর এক অশান্তির ঘটনা। এই ঘটনায় শাসক দল তৃণমূলকে নিশানা করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে তুমুল অশান্তিতে জড়িয়ে পড়েন দুই বিজেপি (BJP) সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) ও দেবশ্রী চৌধুরী (Debashree Chaudhury)। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনেই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ফের প্রকাশ্যে চলে এলো বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর এই ঘটনায় চরম অস্বতিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।

প্রসঙ্গত, রামনবমীকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুরের পর হুগলির রিষড়াতেও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। অশান্তির আঁচ গিয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গের ইসলামপুর, ডালখোলাতেও। বিজেপির দাবি, এই ঘটনায় তাঁদের নেতারাও আক্রান্ত। ঠিক সেই আবর্তে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল বিজেপির তরফে। যেখানে বক্তা হিসেবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলা থেকে নির্বাচিত তিন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, দেবশ্রী চৌধুরী এবং জগন্নাথ সরকার (Jagannath Sarkar)। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠক শেষে হতে না হতেই তাল কাটে।

উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সামনেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন দেবশ্রী চৌধুরি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতে না হতেই লকেটের দিকে রনংদেহী মূর্তিতে কার্যত আঙুল উচিয়ে তেড়ে যান দেবশ্রী। সকলের সামনে উচ্চস্বরে চোখ বড় বড় করে লকেটকে দেবশ্রী “নোংরা রাজনীতি” বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন। আচমকা সতীর্থের এমন আচরণে হকচকিয়ে যান লকেট।

রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর অভিযোগ, গোটা সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে কথা বলার সুযোগই দেননি লকেট। এমনকি, সাংবাদিকদের করা সমস্ত প্রশ্নের একাই জবাব দিচ্ছিলেন। শুধু হুগলির ঘটনাকেই তুলে ধরেছিলেন লকেট। ডালখোলার অশান্তি নিয়ে তাঁকে কথা বলার কোনও সুযোগ দেননি। তাই সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতেই আঙুল উঁচিয়ে লকেটের দিকে তেড়ে যান দেবশ্রী। শাসানির সুরে লকেটকে তিনি বলেন, “দলের মিডিয়া সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সাংবাদিক বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলাম আমি। ডালখোলার হিংসা নিয়ে কথা বলার জন্য। কিন্তু তুমি শুধুমাত্র হুগলি নিয়ে কথা বলে গেলে। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করো। মনে রেখো, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম।”

সকলের সামনে দেবশ্রীর এমন আচরণে কিছুটা হতভম্ব হয়ে যান লকেট। পরে কিছুটা সামলে নিয়ে দেবশ্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন কে করেছে আমি জানি না। দল আমাকে বলার দায়িত্ব দিয়েছিল, তাই আমি বলেছি।” যদিও লকেটের এমন কথায় চিড়ে ভেজেনি। দেবশ্রীকে শান্ত করা যায়নি। আর সকলের সামনে দুই সাংসদের এমন বচসায় বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নগ্ন ছবি ফের সামনে চলে এলো, তা বলার অপেক্ষা করে না।

তবে এদিন এই প্রসঙ্গে সর্ব হন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি সাফ জানান, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা আগে ঠিক করে নিন কে কথা বলবেন? উনি নাকি দেবশ্রী চৌধুরী। যারা সাংবাদিক বৈঠকের পর প্রকাশ্যে ঝগড়া করেন তাঁরা আগে নিজেদের অবস্থান ঠিক করুন।