কোনওমতে হেলেদুলে চলছে তদন্ত! নিয়োগ দুর্নীতির কোনও কিনারা এখনও করতে পারেনি সিবিআই । আর এরজন্য বারবার হাইকোর্টের ভৎসর্নাক মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই ভিনরাজ্যে সিবিআই-এর বিভিন্ন জোন থেকে আনা হচ্ছে ৭ সিবিআই অফিসারকে। সূত্রের দাবি, টাস্ক ফোর্স গড়ার জন্যই এত কর্মকাণ্ড।পাশাপাশি নিয়োগ দু.র্নীতিতে গতিও ফিরবে।যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই কেন এত তৎপরতা? এতদিন কোথায় ছিলেন সিবিআই অফিসাররা? নাকি সবটাই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ‘ফন্দি’? এসব নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন:রিঙ্কুর অসাধারণ ইনিংসের পর ভিডিও কলে শ্রেয়স, ছবি পোস্ট কেকেআরের
জানা গেছে,শীঘ্রই এই সাত আধিকারিককে নিজাম প্যালেসের দুর্নীতি দমন শাখায় যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক জন এসপি, তিন জন ডিএসপি, দু’জন ইন্সপেক্টর, এক জন সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক রয়েছেন। নয়াদিল্লি, বিশাখাপত্তনম, রাঁচি, ধানবাদ, ভুবনেশ্বর এবং ভোপালের সিবিআই দফতর থেকে তাঁদের কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। সিবিআই সূত্রে খবর, ৩০মে পর্যন্ত অর্থাৎ আগামী দু’মাসের জন্য এই সাত আধিকারিককে কলকাতার সিবিআই দফতরে থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ঠিক সেইসময়ই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট।
গত আট-নয় বছর ধরে বাংলায় বিভিন্ন বিষয়ে সিবিআই তদন্তের যে নজির দেখা গিয়েছে তা হতাশাজনক বলেই মত অনেকের। চিটফান্ড কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান। সেই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শিক্ষাক্ষেত্রে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তার বহুগুণ বেশি অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতি হয়েছিল চিটফান্ড কাণ্ডে। লক্ষ লক্ষ মানুষের টাকা ডুবেছে ওই কেলেঙ্কারিতে। কিন্তু ওই ঘটনায় মরশুমি গ্রেফতার ও তৎপরতা ছাড়া কিছুই দেখা যায়নি। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে পুলিশকর্তা রাজীব কুমারকে জেরা করতে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল সিবিআই টিম। তবে ভোট মেটার পরই সব দৃশ্যত ঠাণ্ডা ঘরে চলে যায়।
সে তুলনায় অবশ্য নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত ব্যতিক্রম। কারণ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিবিআই ও ইডি তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্তে কোনওরকম ঢিলেমি দেখলেই বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। প্রভাবশালীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে তদন্ত এজেন্সি যাতে ইতস্তত না করে সে ব্যাপারেও সজাগ রয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
অনেকের মতে, আদালতের নির্দেশে তদন্তে গতি আনতে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হলে তা ইতিবাচক হবে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশা থাকবে তদন্তের কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।কিন্তু তা না হয়ে যদি অন্য অভিসন্ধি থাকে, তা ঠিক হবে না বলেই মত ওয়াকিবহালমহলের।
ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, ‘তাঁকে দিয়ে জোর করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর চেষ্টা করছে সিবিআই’। যাকে ঘিরে অনেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
