ফের অগ্নি*গর্ভ মণিপুর! নিহ*ত ১ জওয়ান, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা

কুকি-মেতেই সংঘর্ষে এখনও অগ্নিগর্ভ মণিপুর। মঙ্গলবার ভোরে, বিদ্রোহীদের একটি দলের সঙ্গে সংঘর্ষে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অসম রাইফেলস-এর দুই কর্মীও। ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কর্পস জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মণিপুরের সেরোতে। আহত অসম রাইফেলস কর্মীদের বিমানে মান্ত্রিপুখরিতে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্তারা।

আরও পড়ুন:ভাগ হবে না মণিপুর: জ.ঙ্গিদের কড়া হুঁশিয়ারি শাহের, সরানো হলো ডিজিকে
স্পিয়ার কর্পস-এর বিবৃতিতে অনুসারে, সোমবার রাতে সুগনু-সেরউ অঞ্চলে ‘এরিয়া ডমিনেশন’ অভিযানে গিয়েছিল অসম রাইফেলস, বিএসএফ এবং মণিপুর পুলিশের যৌথ বাহিনী। অভিযানের এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিদ্রোহীদের একটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গোটা রাত জুড়ে দফায় দফায় গোলাগুলি বিনিময় হয়েছে। তবে, শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সামনে পিছু হঠতে বাধ্য হয় বিদ্রোহীরা।
এদিকে, সোমবার মণিপুরে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর জেরে রাজ্যের ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে। শনিবার (১০ জুন) দুপুর ৩টে পর্যন্ত মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সোমবার সন্ধ্যায় এই নির্দেশিকা জারি করেছে মণিপুর সরকার। ৫ জুন থেকেই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হওয়ার কথা ছিল। গত ৩ মে থেকে রাজ্যে এই সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। ৩৫,০০০ মানুষ ভিটেছাড়া।পরিস্থিতি সামাল দিতে গত সপ্তাহে মণিপুরে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চারদিনের ওই সফরে তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং অশান্তি থামাতে রাজ্যবাসীর কাছে শান্তির আবেদন জানান। মেইতি সহ অন্যান্য সকল জনগোষ্ঠী সুবিচার পাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের অস্ত্র আত্মসমর্পণ করার কথা জানিয়ে কড়া বার্তাও দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যারা হিংসায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।যদিও আশ্বাসই সার। মণিপুরের চিত্রটা এখনও একইরকম রয়েছে।


উল্লেখ্য, মণিপুরে ট্রাইবাল বা আদিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই নতুন কিছু নয়। কয়েকশো বছর ধরে তা চলছে। তবে এবার তা ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা দাবি করে বারুদের স্তূপে আগুন দিয়েছে।গত এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারকে মেতেইদের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তারপর ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই ছিল এই মিছিল। ক্রমেই তা হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মেতেই সংখ্যাগুরু ইম্ফল উপত্যকায় বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এর প্রতিক্রিয়াও হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।

Previous articleদলবদলে বড় খবর, লাল-হলুদে ফিরছেন খাবরা : সূত্র
Next articleবাংলার ১০০ দিনের টাকা আটকে কেন? কেন্দ্রের জবাব তলব হাইকোর্টের