NABC-তে চূড়ান্ত অব্যবস্থা! অজয়ের চিঠি, জয়তীর লাইভ ঘিরে তোলপাড় স্যোশাল মিডিয়া

পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, NABC বয়কট করার ঘোষণা করেছেন জয়তী।

NABC-তে চূড়ান্ত অব্যবস্থা। অভিযোগ, উত্তর আমেরিকা (North America) বঙ্গ সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে গিয়ে চূড়ান্ত অপমানিত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী (Ajay Chakraborty) থেকে শুরু করে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী জয়তী চক্রবর্তী (Jayati Chakraborty), যন্ত্রশিল্পী-সহ বেশিভর ভাগ শিল্পীই। এমন কী অভিনতাদেরও হেনস্থা হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, NABC বয়কট করার ঘোষণা করেছেন জয়তী।

ঘটনাটি কী?
স্যোশাল মিডিয়ায় লাইভে এসে জয়তী চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, “আমাদের ৫ তারিখ পর্যন্ত হোটেল বুকিং আছে বলে জানানো হয়েছে কিন্তু আজ সকাল (৪ জুলাই) থেকে আমরা আমাদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। বিকেল ৪টে বেজে গেলেও আমাদের খেতে দেওয়া হয় না। এক পরিচিত কেএফসি থেকে খাবার এনে দেওয়ার পর ওঁরা খাবার দেন। আমাদের এক শিডিউল, টাইম বলে নিয়ে আসা হয়েছিল, এখানে এসে পুরোটাই চেঞ্জ করে দেওয়া হয়। আমরা অনেকেই আমাদের নিজেদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। পরে সৌগত দা এসে আমাদের কিছু শিল্পীকে উদ্ধার করেন এই পরিস্থিতি থেকে। আমি আজ নিজের চোখে পণ্ডিতজির যে অসম্মান দেখলাম সেটা মানতে পারছি না। আমাদের যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা হয়েছিল তার দায় কে নেবে?” জয়তীর অভিযোগ, সম্মেলনে যোগ দিতে পৌঁছনর পর থেকেই তাঁর অব্যবস্থার শিকার। এমনকী, তাঁদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন গায়িকা। সম্মেলনের অন্যতম আয়োজক অভীক দাশগুপ্ত যিনি না কি সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন, তাঁকে আর দেখা যায়নি বলে অভিযোগ অজয় চক্রবর্তী ও জয়তীর।

বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিতশিল্পী অজয় চক্রবর্তীর অভিযোগ আরও গুরুতর। তাঁর লেখা ইমেইলের অংশ ইতিমধ্যেই স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাতে তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি। যবে থেকে আমি আমেরিকায় পৌঁছেছি তবে থেকেই অত্যন্ত অসম্মানের মুখোমুখি হয়েছি। আমি জানি না ৭১ বছরে এসে কেন এই শোয়ের জন্য রাজি হলাম। অভীক দাশগুপ্ত যিনি আমাকে এই শোতে আনার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলেন, আমি এখানে আসার পর তিনি একবার দেখা করার প্রয়োজনবোধটুকু করেননি। অসম্ভব ভুলভাল টাইমিং তো ছেড়েই দিলাম আমি ভাবিনি সেখানে আমাদের জন্য কোনও গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে না, দুপুরের খাবার আসবে বিকেল ৪টেয় তাও আমরা বাইরে থেকে খাবার কেনার পর! হোটেলের ঘরে পর্যন্ত ঢুকতে পারিনি আমরা। বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছে।“ তাঁর প্রার্য টাকাও তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে চিঠিতে লিখেছেন অজয় চক্রবর্তী। “যেখানে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী আমায় এত সম্মান দেন, ভারতের সব থেকে প্রবীণ শিল্পী আমি সেখানে আমায় নিয়ে গিয়ে এমন অপমান! আমি আমার প্রাপ্য টাকাটুকু পাইনি। এবার বলুন আমার কী করণীয়?”

এই মেইলের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় সেটা শেয়ার করেন। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “ভারতের সিনিয়র-মোস্ট কিংবদন্তি শিল্পীকে যদি এমন চিঠি লিখতে হয়,তাহলে বেঙ্গলি কনফারেন্স করে লাভ কি? এই অসম্মানটুকু পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর প্রাপ্য বুঝি!! বাঙালি আর কত নীচে নামবে?”

এত বিতর্কে মাঝে আয়োজকদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, হোটেল বদলানোর বিষয়ে শেষ মুহূর্তে জয়তীই জোর করেছিলেন ৷ তাঁকে অনেকের সঙ্গে দেখা করানোর কথা থাকলেও তিনি কারও সঙ্গে দেখা না করে কাউকে কিছু না জানিয়ে হোটেলে পৌঁছে যান। টাকা না পেলে তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠবেন না- একথাও নাকি বলেন জয়তী। অভিযোগ আয়োজকদের। তাঁকে পুরো প্রাপ্য দেওয়ার পরে তিনি যান। এতে, আয়োজকদের একঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। আয়োজক পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় ও অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের তরফ থেকে এই বয়ান দেওয়া হলেও, জয়তী লাইভে কিন্তু এই দুজনের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি। উল্টে অনিন্দিতা তাঁদের সহযোগিতা করেছেন বলেই জানান সঙ্গীতশিল্পী।

 

Previous articleভোটের ৪ দিন আগে রাজ্যের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর মামলা সরলো প্রধান বিচারপতির এজলাসে
Next articleইঁদুরের ‘বদান্যতায়’ বেকসুর খালাস ২ অভিযুক্ত! আজব কাণ্ড চেন্নাইয়ে