দুর্নীতির প্রমাণ ‘লাল ডায়েরি’ ছিনতাই বিধানসভাতে! বিস্ফোরক অভিযোগ প্রাক্তন মন্ত্রীর

বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এক লাল ডায়েরি ও কিছু নথিপত্র নিয়ে বিধানসভায় হাজির হয়েছিলেন বহিষ্কৃত মন্ত্রী। তবে বিধানসভা কক্ষেই সেই ডায়েরি ছিনতাই করে নেওয়ার অভিযোগ তুললেন রাজস্থানের(Rajsthan) সদ্য প্রাক্তন বহিষ্কৃত মন্ত্রী রাজেন্দ্র সিং হুডা(Rajendra Singh Hooda)। শুধু তাই নয়, এই ডায়েরি বিধানসভায় পেশ করার অনুমতিও দেননি স্পিকার চন্দ্রপ্রকাশ জোশী। এই ঘটনায় বিধানসভার অন্দরে তিনি রাজেন্দ্র বিক্ষোভ শুরু করলে মার্শাল ডেকে তাঁকে সভার বাইরে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্পিকার। উল্লেখ্য, রাজস্থানে নারী নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শনিবার তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট(Ashok Gehlot)। এরপর সোমবার বিধানসভায় গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ এই লাল ডায়েরি নিয়ে হাজির হন তিনি।

সোমবার বিধানসভা ভবনে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার পর বিধানসভার বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজেন্দ্র অভিযোগ করেন, “বিধানসভা ভবনে তাঁর থেকে গেহলট সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু ‘প্রমাণ’ ছিনতাই করা হয়েছে। শাসক দল কংগ্রেসের মদতেই এমনটা হয়েছে।” দলের বিরুদ্ধে সারাসরি অভিযোগ তুলে রাজেন্দ্র বলেন, “২০২০ সালে রাজস্থানে সরকার বাঁচাতে কোন বিধায়ককে কত কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। সে টাকা কোথা থেকে এসেছিল, সব ওই লাল ডায়েরিতে লেখা রয়েছে। সে সব হিসাব কংগ্রেসেরই নেতা ধর্মেন্দ্র রাঠোরের লেখা।” যদিও গেহলট-ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল সোমবার বলেন, “রাজেন্দ্র মিথ্যা অভিযোগ করছেন। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন।”

উল্লেখ্য,২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। রাজস্থানের তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন প্রয়াত রাজেশ পাইলটের পুত্র। সে সময় গেহলট শিবিরের সক্রিয় নেতা ছিলেন তৎকালীন অসমারিক প্রতিরক্ষা ও হোমগার্ড বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী রাজেন্দ্র।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে বিএসপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন রাজেন্দ্র। কয়েক মাস পরে আরও পাঁচ বিএসপি বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন তিনি। গত শনিবার রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশনে রাজেন্দ্র বলেন, “রাজস্থানে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। নারীদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। মণিপুরের ঘটনা নিয়ে কথা না বলে আমাদের উচিত নিজেদের রাজ্যের দিকে নজর দেওয়া।” এর পরেই মন্ত্রিসভা থেকে রাজেন্দ্রকে বরখাস্ত করেন গেহলট।

Previous articleপ্রদীপ ঘোষ স্মৃতি রক্ষা কমিটি ও ইআরএমসি-র যৌথ উদ্যোগে ৪০০ জনের রক্তদান
Next article‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘দুয়ারে সরকার’ অন্য রাজ্য নকল করছে, এটা গর্বের: মুখ্যমন্ত্রী