বুথের ভিডিও ফুটেজ নষ্ট হল কীভাবে? বেলডাঙার বিডিওকে  ভর্ৎসনা বিচারপতির

হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, বোর্ড গঠন করা হলেও সেই বোর্ডের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মামলার রায়ের উপরে

বহরমপুরের বেলডাঙা-২ ব্লকের কাশীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি বুথে পুনর্নির্বাচন না হওয়ার মামলায় হাইকোর্টে ধমক খেলেন বিডিও। ওই ব্লকের একটি বুথে পরাজিত সিপিএম প্রার্থী নাসিমা বেগম হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলাকারীর অভিযোগ, তাঁর এজেন্টদের ভোটের দিন ও গণনার দিন মারধর করে বের কর দেওয়া হয়েছিল। তারপরও বুথে পুনর্নির্বাচন হয়নি। মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চে। মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল হাইকোর্টে।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও জানান, তাঁর দায়িত্বে যে বুথগুলি ছিল, তার মধ্যে দু’টি বুথে পুনর্নির্বাচন করানো হয়েছিল। কিন্তু নাসিমা বেগমের ওই বুথটি সেই তালিকায় ছিল না। কারণ হিসেবে বিডিও জানান, ওই বুথের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি বিডিও-র। সেই কারণেই ওই বুথে পুনর্নির্বাচন করানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও-র এই সাফাইয়ে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট। এখানেই বিচারপতির প্রশ্ন, কীভাবে ভিডিও ফুটেজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে! তাহলে সিসিটিভি রাখার উদ্দেশ্য কী?

মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওকে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। একইসঙ্গে প্রিসাইডিং অফিসারকে মামলায় যুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এদিকে ওই পঞ্চায়েতে আগামী ৮ অগস্ট বোর্ড গঠনের কথা রয়েছে। তবে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, বোর্ড গঠন করা হলেও সেই বোর্ডের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মামলার রায়ের উপরে। আগামী ৩০ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

এরই পাশাপাশি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল হাইকোর্টে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টেও বিডিওকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট দেখার পর হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। একক বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও। মামলা ওঠে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় প্রশ্ন করেন, ‘বিচার চাইছেন নিজে! অন্যদের বিচার দিয়েছেন কি?’

দ্বিতীয়ার্ধের শুনানির সময়েও কড়া কড়া প্রশ্ন করেন বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়। বিডিওর উদ্দেশে বলেন, ‘সংবিধান আপনাকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিল। আপনি সেটা পালন করেননি। আপনি শপথ নিয়েছিলেন। সেটা রক্ষা করার কর্তব্য নয় আপনার? আপনার বিরুদ্ধে প্রতারণার (চিটিং-এর) অভিযোগ আছে।’ এদিন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও সংক্রান্ত মামলায় একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর আপাতত কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। মামলাটি আবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চেই ফেরত পাঠিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়ে দিয়েছে, মামলায় চূড়ান্ত রায় একক বেঞ্চই দেবে।

 

 

 

Previous articleএবার বিধানসভাতেও নাচলেন শুভেন্দু! অভিযোগ তৃণমূলের, নিন্দায় স্পিকারও!
Next articleহাত গুটিয়ে বসেছিল মণিপুর সরকার: ডবল ইঞ্জিনকে কটাক্ষ তৃণমূলের