পরিষেবা না দিয়েই আয় ১.৭২ কোটি! আয়কর দফতরের রিপোর্টে বিতর্কে বিজয়নকন্যা

কোনও পরিষেবা না দিয়েই বেসরকারি এক সংস্থা থেকে ১.৭২ কোটি টাকা নিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের(Pinarayi Vijayan) কন্যা টি বীণা। তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে ইনকাম ট্যাক্স ইন্টেরিম সেটলমেন্ট বোর্ডের দিল্লি বেঞ্চ। দাবি করা হয়েছে, একজন প্রভাবশালীর সঙ্গে সম্পর্কের প্রতিদান হিসাবে ওই বিপুল অর্থ দেওয়া হয়েছে বিজয়ন-কন্যাকে। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর অস্বস্তিতে কেরল(Kerala) সিপিএম(CPIM)। গোটা ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে কেরলের বিরোধী দল কংগ্রেস(Congress)।

জানা যাচ্ছে, কোচিন মিনারেলস অ্যান্ড রুটাইল লিমিটেড(CMRL) নামে একটি সংস্থাকে মার্কেটিং, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়ার পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বীণা ও তাঁর সংস্থা এক্স্যালজিক সলিউশন কোচিন মিনারেলস অ্যান্ড রুটাইল লিমিটেড। কিন্তু বিপুল টাকার বিনিময়ে চুক্তি হলেও ওই সংস্থাকে কোনও পরিষেবা দেয়নি বীণা ও তাঁর সংস্থা। আয়কর দফতরের দেওয়া তথ‌্য অনুযায়ী, ২০১৭-২০২০ সাল পর্যন্ত মাসিক কিস্তিতে মোট ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন বীণা ও তাঁর সংস্থা, যেটি বেআইনি বলে দাবি করছেন আয়কর আধিকারিকরা। তিন বিচারপতির একটি সেটলমেন্ট বোর্ড জানিয়েছে, এই টাকার বদলে যে কোনও পরিষেবাই দেওয়া হয়নি, সে বিষয়টি যথেষ্ট প্রমাণ সমেত সাব্যস্ত করতে পেরেছে আয়কর দফতর। ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো এই টাকা যে ‘অবৈধ’, সে বিষয়ে আয়করের যুক্তিও মেনে নিয়েছেন বিচারপতিরা। বীণার সংস্থাকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমআরএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর।

জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে সিএমআরএল-এর অফিসে হানা দিয়েছিল আয়কর দফতর। সেইসঙ্গে সেখানকার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বাড়িতেও হানা দিয়েছিলেন তাঁরা। তাতেই দেখা যায়, সংস্থার খরচ বাড়িয়ে দেখিয়ে বিপুল টাকা করফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এরপরেই বিষয়টি মীমাংসার জন্য সংস্থাটির তরফে আবেদন জানানো হয়। সিএমআরএল-এর ফিনান্সিয়াল অফিসারের বাড়িতে হানা দেওয়ার পর সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া নথি থেকে আয়কর আধিকারিকরা জানতে পারেন, রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী, তাঁদের ঘনিষ্ঠ, পুলিশ, সংবাদমাধ্যম এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের কাছে বিপুল টাকা পাঠানো হয়েছে। সেখানেই বীণার সংস্থাকে টাকা দেওয়ার কথা জানা যায়। আয়কর দফতর জানিয়েছে, বীণাকে দেওয়া মোট অর্থের মধ্যে ৫৫ লক্ষ টাকা তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া হয়েছিল। বাকিটা গিয়েছিল তাঁর সংস্থার কাছে।