চেয়ার চান না নেত্রী, তবে দিদিকে প্রধানমন্ত্রী চায় কর্মীরা: ফিরহাদ, কুণাল

তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট করেন যে, পার্টির স্যান্ড অনুযায়ী আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা চেয়ারের জন্য লড়বেন না। কিন্তু বাংলার মানুষ, তৃণমূল কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়। আর এতে কোনও অন্যায় নেই বলেই মত ফিরহাদ, কুণাল-সহ বাকি বক্তাদের।

বলছে বাংলার জনতা, প্রধানমন্ত্রী হোক মমতা- এই শীর্ষক তৃণমূলের সবচেয়ে বড় সমর্থক গ্রুপ ফ্যাম-এর আয়োজনে আলোচনা সভায় উঠে এলো এই একই দাবি। তবে, তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের লোভ নেই দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাঁরাও প্রধানমন্ত্রী পদের দিকে তাকিয়ে লড়বেন না। তবে, বাংলার তৃণমূলের (TMC) কর্মী-সমর্থকরা এক কথায় বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই হোন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। আর কর্মী-সমর্থকদের এই চাওয়ায় কোনও দোষ নেই বলে মত রাজ্যের মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষদের (Kunal Ghosh)। রবিবার, উত্তম মঞ্চের অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়, তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ তিওয়ারি প্রমুখ।

ফিরহাদ বলেন, ”পরেরবার স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় আর দাড়িওয়ালা লোকটা ভাষণ দেবে না ‘মিত্রোঁ’ বলে। বাংলায় খুন খারাপি, সন্ত্রাসের কথা বলছেন। রাতে শুয়ে শুয়ে বাংলার কথাই ভাবেন। গত দেড় মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেফারেন্স ছাড়া মোদি কোনও বক্তব্য রাখেননি। কারণ, তিনি বিশাস করেন যে তাঁকে পালটে দিতে পারে একমাত্র বাংলার বাঘিনী, যার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাইয়ের আগের দিন ‘দিদি’ আমাকে বললেন, ওই কথাটা বলবে না। কিন্তু আমাদের হৃদয়ের আওয়াজ কীভাবে থামাবেন? প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্যতম প্রার্থীর নাম মমতা। বলছে বাংলার জনতা, প্রধানমন্ত্রী হোক মমতা।”

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে চেয়ারের জন্য লড়বে না তৃণমূল-এটাই দলের সিদ্ধান্ত। এদিনের অনুষ্ঠানে এই কথায় জানান ফিরহাদ, কুণাল। তবে, একই সঙ্গে তাঁদের কথায়, তৃণমূল সভানেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করার আবেগ নিয়ে যদি আগামী লোকসভা নির্বাচনে মাঠে-ময়দানে বাংলার দলের কর্মীরা ঝাপান- তাতে কোনও দোষ নেই। কারণ, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সব গুণ রয়েছে মমতার মধ্যে। তিনি ৭বারের সাংসদ, ৪বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী- তার মধ্যে ২বার রেলমন্ত্রী, ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্ক প্রসূত প্রকল্পগুলি শুধু রাজ্যে বা দেশে নয়, সারা বিশ্বে পুরস্কৃত। এর আগে জোটের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে যখন সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সামনে সুযোগ আসে, তখন কিন্তু তাঁর দল সিপিএমেরও  রাজ্যে গরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী হতে পদ্ধতিগত বাধা ছিল না।

কুণালের বক্তব্য, ”জোট জমানা শুরু হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদার। তিনি বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার চাই না। বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চাই। কিন্তু আপনারা তো ঘরের লোক। এই ব্যানারের উপরে যা লেখা আছে সেটা হতেও পারে। জ্যোতি বসুর নাম যখন উঠল প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য, তখন আপনাদের সাংসদ ক’জন ছিল কমরেড? ২০০? তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারের জন্য এগোবে না। কিন্তু আমরা বিয়াল্লিশে ৪২টা আসন পাওয়ার লক্ষ্যে এগোব?”

এক্ষেত্রে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট করেন যে, পার্টির স্যান্ড অনুযায়ী আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা চেয়ারের জন্য লড়বেন না। কিন্তু বাংলার মানুষ, তৃণমূল কর্মীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়। আর এতে কোনও অন্যায় নেই বলেই মত ফিরহাদ, কুণাল-সহ বাকি বক্তাদের।

 

 

 

 

Previous articleHaryana: মহাপঞ্চায়েতের নামে গা জোয়ারি! পুলিশের সামনেই নেতাদের দেদার ঘৃ.ণাভাষণ
Next articleস্বপ্নদীপের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁ.কা, যৌ.ন নির্যা.তনের প্রমাণ; দাবি শিশু সুরক্ষা কমিশনের