দিনকয়েক ভ্যাপসা গরমের পর রবিবার দুপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি নামে বাঁকুড়া (Bankura) ও পুরুলিয়ার (Purulia) বেশ কিছু এলাকায়। প্রবল বেগে বৃষ্টির পাশাপাশি ঘনঘন বাজ পড়তে থাকে। আর সেই বজ্রপাতের জেরেই দুই জেলায় মৃত্যু হল কমপক্ষে ৬ জনের। জখম হয়েছেন ৮ জন। রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার ছাতনা থানা এলাকায় পৃথক ৩টি জায়গায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের, জখম হয়েছেন আরও ৪ জন। এছাড়া শালতোড়া থানা এলাকায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। সেখানে জখম হয়েছেন আরও ৩ জন।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম সাগেন মুর্মু (২০) ও মীরা বাউড়ি (৬১) ও সুকুরমণি হাঁসদা (২৭)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ছাতনার ঘোষেরগ্রাম পঞ্চায়েতের ছাচনপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক গ্রাম সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হয়। তখন নদীর পাড়েই গাছের তলায় গিয়ে দাঁড়ান যুবকরা। সাগেন-সহ আরও ৩ জন ছিলেন কাছাকাছি। সেখানেই আচমকা বজ্রপাতে লুটিয়ে পড়েন সাগেন। অন্য ৩ জনও জখম হন। ৪ জনকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ছাতনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সেখানে সাগেন মুর্মুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। জখম বাকি ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। কলেজ পড়ুয়া সাগেনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ছাচনপুর গ্রামে।

এদিকে, ছাতনা ১ পঞ্চায়েতের বারবাকড়া গ্রামে এদিন বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে মীরা বাউড়ি নামে এক প্রৌঢ়ার। দুপুরে বাড়ির বাইরে গরু চরাচ্ছিলেন তিনি। আচমকা বজ্রপাতে সেখানে লুটিয়ে পড়েন। উদ্ধার করে ছাতনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই প্রৌঢ়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া ছাতনার শালডিহা পঞ্চায়েতের পিঠাবাইদ গ্রামে এদিন বজ্রপাতে জখম হয়েছেন এক ব্যক্তি। পাশাপাশি শালতোড়া থানার ছাতিমবাইদ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে সুকুরমণি হাঁসদা নামে এক যুবতীর। জখম হয়েছেন আরও ৩ জন। জানা গিয়েছে, ধান লাগিয়ে দুপুরে মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। পথেই বজ্রপাতে লুটিয়ে পড়েন সুকুরমণি। উদ্ধার করে শালতোড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। জখম ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, পৃথক দু’টি ঘটনায় পুরুলিয়ায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। পাড়া থানার শাকড়া গ্রামে মৃত্যু হয় দুই তরুণের। তাঁরা হলেন অঞ্জন দাস (২১) ও সোমনাথ বৈষ্ণব (২৩)। দু’জনেরই বাড়ি পাড়া থানার শাঁকড়া গ্রামে। জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে স্নান করে পুকুর থেকে ফেরার পথে একটি তেঁতুলগাছের তলায় দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। সে সময়ে বজ্রাঘাতে ওই দুই বন্ধু গুরুতর আহত হন। একইসময়ে রঘুনাথপুর থানার সেনেড়া গ্রামে মাঠে চাষের কাজ করছিলেন লক্ষ্মীনারায়ণ বাউড়ি (৫৬) নামে এক ব্যক্তি। তখন সেখানে বাজ পড়লে গুরুতর আহত হন তিনি। আবার আদ্রা থানার পাঁচুডাঙার চুড়িমহল্লার বাসিন্দা নুসরত খাতুন এদিন বাড়িতে বসে মোবাইল দেখছিলেন। সে সময়ে তিনি বজ্রাঘাতে আহত হন। এদের সকলকে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা অঞ্জন দাস, সোমনাথ বৈষ্ণব ও লক্ষ্মীনারায়ণ বাউড়িকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে নুসরত খাতুনের।

