নতুন বাড়িতে ফেরা হল না, অনন্তনাগে হত মেজরের পরিবার বাকরুদ্ধ

ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় জঙ্গিরা আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে। সেই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন কর্নেল, মেজর এবং ডিএসপি।

জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন সেনা মেজর এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার। এখন তাঁদের বাড়িতে শুধুই হাহাকার। বুধবার ভোর থেকে অনন্তনাগের কোকেরনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় সেনা এবং পুলিশের যৌথবাহিনীর। সেই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কর্নেল মনপ্রীত সিং, মেজর আশিস ধনচক এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি হুমায়ুন ভাট।

ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় জঙ্গিরা আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে। সেই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন কর্নেল, মেজর এবং ডিএসপি। কর্নেলের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় মেজর এবং ডিএসপির। মেজর আশিসের বাড়ি হরিয়ানার পানিপতে।তারা চার ভাইবোন।

মৃত মেজরের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগেই জম্মুতে বদলি হন আশিস। এ বছরই তিনি পেয়েছিলেন ‘সেনা মেডেল’। পরিবারে বাবা, মা, স্ত্রী এবং দু’বছরের সন্তান রয়েছে।আশিসের কাকা বলেন, “শেষ বার ফোনে কথা হয়েছিল আশিসের সঙ্গে। মাস দেড়েক আগেই বাড়িতে এসেছিল আশিস। অক্টোবরেও আবার আসত। ওই সময় নতুন বাড়িতে স্থানান্তরের কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ।” সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি, পানিপতের ধনচক পরিবারে এখন শুধুই সন্তানহারা, স্বামীহারা এবং পিতৃহারার শোক।

সম্প্রতি কর্নেল মনপ্রীত এবং মেজর আশিস কোকেরনাগেরই একটি ভলিবল প্রতিযোগিতায় হাজির ছিলেন। তাঁদের দু’জনের সেই ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে।এরই পাশাপাশি, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি হুমায়ুন ভাটের পরিবারেও এখন শুধু হাহাকার। সন্তান হারিয়ে ভেঙে পড়েছে ভাট পরিবার। হুমায়ুনের বাবা গুলাম হাসান জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি) ছিলেন। গুলিতে আহত হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। হুমায়ুনের দু’মাসের এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন কর্নেল মনপ্রীত সিং। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী জগমিত কৌর জানতেন, স্বামী আহত। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েই তাঁকে ফোন করবেন। ছুটিতে ফিরবেন বাড়িতে। বাবা আর নেই বলে তখনও জানত না মনপ্রীতের ছ’বছরের পুত্র।বর্তমানে চণ্ডীগড়ে বাপের বাড়িতে ছ’বছরের পুত্র এবং দু’বছরের কন্যাসন্তানকে নিয়ে থাকছেন পেশায় শিক্ষক জগমিত। তাঁকে জানানো হয়েছে যে তাঁর স্বামী আহত, কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। এখনও এক বুক আশা নিয়ে স্বামীর ফোনের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। মনপ্রীতের দেহ চণ্ডীগড়ে আনা হচ্ছে। সেখানেই বৃহস্পতিবার তাঁকে দাহ করা হবে।

 

 

 

Previous articleহাওড়া ডিভিশনে বাতিল একাধিক ট্রেন! চরম দু.র্ভোগে পড়তে পারেন নিত্যযাত্রীরা
Next article“দ্যাখ কেমন লাগে”! কুণালের মানহানি মামলায় আদালতে যেতেই হল বিমান-সেলিম-শতরূপকে