শতবর্ষ পেরিয়ে আজও শীর্ষে বাঙালির ‘আবোল তাবোল’ উন্মাদনা!

আজও যখন ডোরেমন বা সিনচ্যানদের সঙ্গে ছোটা ভীম বা বালবীররা খুদেদের মনের সিংহভাগ দখল করতে চাইছে , ঠিক সেই আবহে আজও বাঙালি বাবা-মা প্রতিদিনই 'আবোল তাবোল'-এর খোঁজ চালান দোকানদারদের কাছে।

বাঙালির জীবনের ষোলো কলা পূর্ণ সেই ১৬ লাইনে। ‘আয়রে ভোলা খেয়াল-খোলা স্বপনদোলা নাচিয়ে আয়,আয়রে পাগল আবোল তাবোল মত্ত মাদল বাজিয়ে আয়’ – প্রকাশ্যে আসার তারিখটা ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর। ৩৫ বছরের সুকুমার রায় (Sukumar Ray)জীবনে বাঁচার সবরকমের রসদ তাঁর কলমের স্পর্শে ছুঁয়ে দিয়ে গেছেন। ১৯২৩ এর ১০ সেপ্টেম্বর অন্য এক সাহিত্যলোকে পাড়ি দেন সুকুমার রায়। সেই বছরেই ঠিক ৯ দিন পরে ‘আবোল তাবোল’ (Abol Tabol)প্রকাশিত হল। আজ ১০০ বছর পেরিয়েও সেই বইয়ের মলাট আর প্রেস কপি জ্বলজ্বল করছে বই বিক্রেতাদের শেলফে। সোশ্যাল মিডিয়া আর স্মার্টফোনের চোখ রাঙানির মাঝে অপ্রতিরোধ্য ‘আবোল তাবোল’। প্রকাশকরা বলছেন, “এতটুকু চাহিদা কমেনি”।

১৯১৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যেই ‘আবোল তাবোল’-এর বেশিরভাগ ছড়াই ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আজও যখন ডোরেমন বা সিনচ্যানদের সঙ্গে ছোটা ভীম বা বালবীররা খুদেদের মনের সিংহভাগ দখল করতে চাইছে , ঠিক সেই আবহে আজও বাঙালি বাবা-মা প্রতিদিনই ‘আবোল তাবোল’-এর খোঁজ চালান দোকানদারদের কাছে। সুকুমার রায়ের এই অবিস্মরণীয় সৃষ্টি কি নিছকই ‘শিশুসাহিত্য’? ‘হেড অফিসের বড়বাবু’ কি আজকেও রূপকের আঙ্গিকে এই একই কাণ্ড ঘটান না? সুকুমারের ‘সৎপাত্র’ ২০২৩ সালেও ছড়িয়ে রয়েছেন প্রতি পাড়ার মোড়ে। তাইতো ১০০ বছর পরেও এই বইটা আলোচনার খোরাক জোগায়। ‘কুমড়োপটাশ’ কি আজও না হাসিয়ে পারে? নির্মল বুক এজেন্সির তরফে সুখেন সাহা বলেন, “একদম আগের মতো চাহিদা আছে। আমাদের দু’ধরনের রঙের বই আছে। ফোর কালারের বইটা প্রায় শেষ হয়ে গেল। বাইকালারটা এখনও রয়েছে।”

বর্তমানে পারুল প্রকাশনী আবোল তাবোল প্রকাশ করে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌর দাস সাহা বলেন, “আমাদের আবোল তাবোল রঙিন। সেটা বেশ ভালো চলে। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের জন্য এই বইটা কিনে নিয়ে যান।” কিন্তু কেন এই চাহিদা? একঝলকে মনে হতেই পারে যে আদপে শিশুমন উদ্বেলিত হওয়ার রসদ রয়েছে, কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের নানা অধ্যায়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে, ‘ভয় পেয়োনা, ভয় পেয়োনা, তোমায় আমি মারব না…।’ তাই এখনও বাবা-মায়ের হাত ধরে বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় পা রাখতে চলা খুদেরা প্রথমে ‘আবোল তাবোল’-এর দরজাতেই কড়া নাড়ে।

Previous article‘মিস ইউনিভার্স’ খেতাব জয়ই কাল! নেতা-ধর্মগুরুদের রো.ষের মুখে পাক মডেল
Next articleবিশ্বকাপের আগে গোল্ডেন টিকিট থালাইভার! দক্ষিণী তারকাকে BCCI-এর উপহার