“ভাইপো” মন্তব্য করতেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জ্যোতি বসুর ছেলের কে.লেঙ্কারি স্মরণ করালেন কুণাল

শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে কোভিড ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত একটি মামলায় অকারণে 'ভাইপো' মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সরাসরি না উচ্চারণ না করলেও ভাববাচ্যে তিনি যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন, তা বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি।

“বিচারকের চেয়ারের অপব্যবহার করে বিরোধীদের ফুসমন্তর দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করছেন”, ফের তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) নিশানায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। আজ, শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) কোভিড ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত একটি মামলায় অকারণে ‘ভাইপো’ মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সরাসরি না উচ্চারণ না করলেও ভাববাচ্যে তিনি যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন, তা বুঝতে কারও সমস্যা হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে মামলার সঙ্গে অভিষেকের কোনও সম্পর্ক নেই, সেই মামলার শুনানি চলার সময় কেন একজন বিচারপতি ব্যক্তিগত আক্রমণের রাস্তায় হাঁটছেন? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তো কোনও শত্রুতা নেই, তাহলে বারে বারে কারণে অকারণে অভিষেককে আক্রমণ করে বিচার ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করছেন একজন দায়িত্বশীল বিচারপতি?

আগেও বহুবার বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে এসেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এদিনও হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানির মধ্যে তাঁর মন্তব্য, “চোলাই মদ খেয়ে মারা গেলে ২ লাখ, কোভিডে মৃত্যুতে কত? ‘আদৌ টাকা দেওয়া হয়? কে একটা ভাইপো আছে তার বাড়ি চারতলা। কোটি টাকার বাড়ি! কোথা থেকে আসে এত টাকা?”

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যে একেবারেই ভালো নজরে নিচ্ছে না তৃণমূল (TMC)। এদিন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “বিচারপতির চেয়ারে বসে যা ইচ্ছে বলা যাবে? রাজনীতি করা যাবে? বিরোধীদের ফুসমন্তর দেওয়া যাবে? বিচারব্যবস্থার কলঙ্কের মত আচরণ চলতে থাকবে? বিচারব্যবস্থার রক্ষাকবচে থেকে পথসভার কুৎসা করে যাবে একজন? গাঙ্গুলি, ইস্তফা দিয়ে রাজনীতি করুন।”

এরপরই বাম জমানার প্রসঙ্গ টেনে কুণালের আরও সংযোজন, “গাঙ্গুলি তাঁর বেড়ে ওঠার সময় জ্যোতি বসুর পুত্র চন্দন বসুকে ঘিরে নানা ইস্যু দেখে অভ্যস্ত। ‘ভাইপোর কোটি টাকার বাড়ি’ বলতে উনি ওঁর ওই ভাইপোর কথা বলেছেন কি? বাকি কিছু বলতে চাইলে চেয়ারটা ছেড়ে রাজনীতি করুন। বাড়াবাড়িটা সীমাহীন হয়ে যাচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, এদিনই কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নিয়োগ মামলার রায়ে জানান, অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ইডি তাদের ECIR-এর ভিত্তিতে অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারেনি। এবং আদালতের এমন রায়-ই প্রমাণ করে দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে অভিষেককে হেনস্থা করছে। বিষয়টি তুলে ধরে কুণাল ঘোষ বলেন, “যেদিন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ অন্য একটি মামলায় বলছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও অর্থবহ তথ্য প্রমাণ আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারেনি ইডি। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। সেদিন অন্য খবর বানাতে আইনের বাইরে গিয়ে মন্তব্য করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিরোধীদের হাওয়া দিচ্ছেন উনি। উনি আগে বিচারকের পদ ছাড়ুন, ইস্তফা দিন, তারপর রাজনীতির ময়দানে আসুন।”

 

 

 

Previous articleমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সফল বৈঠক, নিউটাউনে আন্তর্জাতিকমানের শপিং মল করবে লুলু গ্রুপ
Next articleভারত-কানাডা সং.ঘাতের মাঝেই ‘অবস্থান’ স্পষ্ট করল আমেরিকা! চরম অস্বস্তিতে নয়া দিল্লি