বঞ্চিতদের নিয়ে আজ ও কাল দিল্লির দরবারে তৃণমূল

বাংলার হকের টাকা আদায়ে দিল্লিতে আজ,সোমবার অবস্থান সত্যাগ্রহ করবে তৃণমূল কংগ্রেস। আর আজ বিকেলেই বৈঠক করে ৩ অক্টোবরের কর্মসূচির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রবিবার দিল্লিতে সাংসদ সৌগত রায়ের বাসভবনে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বেলা দেড়টায় রাজঘাটে দু’ঘণ্টার অবস্থানে বসবেন সব সাংসদ-মন্ত্রীরা। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটেয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিকেলের বৈঠক হবে তাঁর বাসভবনেই। সেখানে জনা পনেরো নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন।

আরও পড়ুনঃ পুরানো পেনশন নীতি ফেরানোর দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলনে সরকারি কর্মীরা
‘ডু অর ডাই— এই মনোভাব নিয়েই লড়তে এসেছি। বাংলার হক আদায়ের লড়াইয়ে পিছপা হব না। ওরা লাঠি চালাক, গুলি চালাক, বাংলার মানুষের জন্য লড়াই-আন্দোলন চালিয়ে যাব। বৈঠক চলে প্রায় দেড় ঘণ্টারও বেশি সময়। ওরা লাঠি চালাক, গুলি চালাক, বাংলার মানুষের জন্য লড়াই-আন্দোলন চালিয়ে যাব। এই আন্দোলন দিল্লিতেই শেষ হয়ে যাবে না, লাগাতার চলবে।’ বলে অভিষেক এদিন দলের ছাত্র-যুবদের নির্দেশ দিয়েছেন, বাসে করে যেসব জব কার্ড হোল্ডাররা এসেছেন, তাঁদের সেন্ট্রাল ভিস্তা আর নতুন সংসদ ভবন ঘুরিয়ে দেখানো হোক। যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁদের হকের টাকা দিচ্ছে না যারা সেই বিজেপি ২০ হাজার কোটি টাকা অপ্রয়োজনীয় খরচ করে কীভাবে অট্টালিকা তৈরি করেছে। আর ভাতে মারছে বাংলার মানুষকে।
এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়ে আছে ৩ তারিখ সকাল দশটায় যন্তরমন্তরে ধরনা কর্মসূচি পালন করবে দল। একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের অফিসে যাবেন। এই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলেও এখনও পর্যন্ত সময় চূড়ান্ত করা যায়নি। সোমবার বিকেলের বৈঠকেই আন্দোলনের রণকৌশল চূড়ান্ত হবে। রবিবারের বৈঠকে প্রায় জনা ২০ সংসদ, মন্ত্রী ও নেতা বক্তব্য রাখেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবটা শোনেন। সবশেষে নিজেও বক্তব্য রাখেন। এই বৈঠকের স্পিরিট ছিল যাই ঘটুক না কেন, বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে যদি গ্রেফতারও হতে হয়, লাঠি খেতে হয়, তাতেও কুছ পরোয়া নেহি। খোলা মনে সবটা শোনার পর অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এরা যেরকম ব্যবহার করবে ঠিক সেই রকমটাই আমরা ফেরত দেব। বিজেপি বুঝে গিয়েছে এই আন্দোলনের ফলে তারা যথেষ্ট ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে এখানে বিজেপির ঠাঁই নেই। কিন্তু কেন্দ্রের বঞ্চনা, দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে টাকা আটকে রাখা, এগুলি মানুষকে বোঝাতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছে। আমি এটি প্রথম উপলব্ধি করি নবজোয়ার কর্মসূচি করার সময়। আমার বিশ্বাস, আমরা মানুষকে বোঝাতে পেরেছি কিন্তু আরও বেশি করে মানুষকে বোঝাতে হবে। অভিষেক বলেন, সামনেই উৎসবের মরশুম। মানুষ দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় মেতে থাকবেন। কিন্তু আমি চাই এর মধ্যেও এই আন্দোলন চালিয়ে যেতে। তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিকদের থামলে চলবে না। আমি বলছি না আমরা উৎসব-আনন্দ করব না কিন্তু তার মাঝেও আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে এই লড়াই আমাদের জিততেই হবে।
রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সংসদ সৌগত রায়ের দিল্লির বাসভবনের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এদিনের বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সুব্রত বক্সি, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, ইন্দ্রনীল সেন, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, মালা রায়, সমীর চক্রবর্তী, উদয়ন গুহ, তাপস রায়, কুণাল ঘোষ, মহুয়া মৈত্র, বীরবাহা হাঁসদা, শতাব্দী রায়, শান্তনু সেন, পার্থ ভৌমিক, বেচারাম মান্না, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সৌগত রায়, সুজিত বোস, প্রতিমা মণ্ডল, মানস ভুঁইয়ারা।

Previous articleসল্টলেকের কলেজ মোড়ে দুটি বাসের রেষারেষিতে ভয়া.বহ দুর্ঘ.টনা! আহ.ত বহু
Next articleযা ঘটেছিল আজকের দিনে, দেখে নিন একনজরে