উৎসবের চারদিন শ’পাঁচেক অ.নাথ-অসহায়দের মুখে হাসি ফোটান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ

কোথাও ওদের হারিয়ে যআবার নেই মানা।হ্যাঁ, পুজেোর দিনগুলোয় ওদের টিকি পাওয়া যাবে না।বিপিন, সুরলীনা, শম্পা, অন্তুদের মজা এইকদিন বাঁধনহারা। দুর্গাপুজোর চারদিন বাড়িতে ওদের টিকি মিলবে না। মিলবে কী করে? পুজোর ঢাকে কাঠি পড়তেই ওদের ‘দাদু’র লোকেরা ওদেরকে জুটিয়ে নিয়ে যাবে। শুধু বিপিন, সুরলীনাই নয় এলাকার পাঁচশর উপর অনাথ, অসহায়, হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের বছরের পর বছর ধরে পুজোর সময় আনন্দে রাখার যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বিশ বছর ধরে এই কাজ করে চলেছেন। বিপিন-সুরলীনাদের কাছে অবশ্য স্বপনবাবুর পরিচয় ‘মন্ত্রী’ নয়, ওদের রূপকথা-কল্পকথার ‘গপ্পোদাদু’।

স্বপনবাবুও পুজোর ক’টা দিন মন্ত্রীর তকমা ঝেরে ফেলে শিশুদের ২৪ ঘণ্টার সঙ্গী হয়ে ওঠেন। নাদনঘাটের দামোদরপাড়া অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রম এবং বিদ্যানগর শিশুমেলা কমিটির এই দুর্গাপুজোর সদস্যরা আগে থেকেই এলাকার বিদ্যানগর, বড় কোবলা, ছোট কোবলা, রাজ্যধরপাড়া, গঙ্গানন্দপুর-সহ গোটা দশেক গ্রামের অনাথ, অসহায়, দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের শিশুদের তালিকা তৈরি করেন। সেই তালিকা মিলিয়ে ষষ্ঠীর দিন সকালে সবাইকে জড়ো করা হয় পুজো মন্ডপে। তারপর সবাইকে চুল কাটিয়ে, সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানো হয়। রীতিমতো ক্ষৌরকর্ম আর স্নান করানোর তদারকি করেন খোদ স্বপনবাবু। প্রত্যেককে দেওয়া হয় নতুন পোশাক। পু

জোর চারদিন শিশুদের ঠাকুর দেখানো, পেটপুরে খাওয়ানো-র পাশাপাশি তাদের প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটানোরও আয়োজন করেন স্বপনবাবু ও তাঁর সহযোগীরা। সেইসঙ্গে থাকে শিশুদের উপযোগী নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা। আর রোজকার পাতের মেনুও নির্দিষ্ট করা হয়েছে। জানা গেল, ষষ্ঠী ও সপ্তমীর মেনু ভাত, ডাল, বেগুনি, শুক্তো, সবজি, চাটনি, মিষ্টি। অষ্টমীতে লুচি, আলুর দম, পায়েস। নবমীর পাতে খিচুড়ি, লাবড়া, রসগোল্লা। আর দশমীর দিন রয়েছে ভাত, ডাল, সবজি, মাংস, বোঁদে।

স্বপনবাবু জানালেন, ‘আড়ম্বর নয়, আন্তরিকতা আর সহমর্মিতা। এই হল আমাদের পুজোর থিম।’ বাহারি মণ্ডপ, আলোর রোশনাই, বাজনার বৈভব, চোখধাঁধানো থিম মিলবে না এখানে। সবহারাদের মাঝে দাঁড়ানো স্বপনবাবুর সেদিকে নজর দেওয়ার ফুরসতও নেই। সবাই যখন থিম, আলো, প্রতিমায় একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে ব্যস্ত, তখন সেসব রাস্তা এড়িয়ে সন্ধ্যা আরতির পর দুর্গাতলায় ভাঙা চাঁদের আলোয় স্বপনবাবু চারদিনের খুদে অতিথিদের ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমী, সুয়োরানী-দুয়োরানী, লালকমল-নীলকমলের গল্প শোনান। আকাশ থেকে কখন যে চাঁদ পাততাড়ি গুটোয়। গল্প তখনও বাকি রয়ে যায়। আবছায়ায় বসা রূপকথায় বুঁদ হয়ে থাকে অজয়, সুরলীনা, বিশ্বনাথ, হেমাঙ্গিরা স্বপনবাবুর চোখে তখন কার্তিক, সরস্বতী, গণেশ, লক্ষ্মী হয়ে ওঠে।

Previous articleআপনার ক’টা বউ? সিবিআইয়ের প্রশ্নে সরস জবাব মদনের
Next articleভারতের বিরুদ্ধে প্রথমে ব‍্যাট করে ১৯৯ রান অজিদের, তিন উইকেট জাদেজার