ইছামতিতে বন্ধ মিলন উৎসব, ক.ঠোর নিরাপত্তাতে টাকিতে ঐতিহ্যশালী বি.সর্জন

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই প্রথা মেনে টাকিতে ঐতিহ্যশালী বিসর্জন চলছে। উমার কৈলাস যাত্রায় বিদায়ের সুর। বসিরহাটের টাকির (Taki) ইছামতিতে মানুষের উন্মাদনা থাকলেও তা মিলন উৎসবে আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকল দুই বাংলার মানুষ। নিরাপত্তার কারণে নদীবক্ষে নৌকার বেড়ায় বাধা পড়ল দুই বাংলার নৌকা। তবে টাকির (Taki) ইছামতির মিলন মেলা বন্ধ হলেও দুই পাড়ের মানুষের উন্মাদনা আজও অটুট।

টাকির রাজবাড়ির পুজো ৩০০-এর বেশি পুরনো। পান্তা ভাত, কচু শাক খেয়ে ২৬ বেয়ারার কাঁধে চড়ে কৈলাসে রওনা দেন উমা। ইছামতিতে নিরঞ্জনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে বিসর্জন (Immersion)। সকাল থেকেই টাকির রাজবাড়ির প্রথামেনে দেবীর যাত্রামঙ্গল, বরণ তারপর সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে স্থানীয় বাসিন্দারা। আগে টাকির রাজবাড়ির ঠাকুর ইছামতি নদীতে ভাসান হয়। তারপর একে একে ঘোষ বাড়ি, রায়চৌধুরী বাড়ি, মুখার্জি বাড়ি, গুরুর বাড়ি, চক্রবর্তী বাড়ি পরপর প্রতিমা বিসর্জন হল। এরপর সর্বজনীন পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। সঙ্গে নৌকা করে নদীবক্ষে আনাগোনা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে দেখা গেল বাঁধভাঙা উল্লাস। তবে বেলা গড়াতেই মানুষের মধ্যে উৎসাহ বাড়ে ফলে বাড়তে থাকে ভিড়।

আন্তর্জাতিক জলসীমানার ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। এপারে টাকি। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে দুপারে অপেক্ষায় উদগ্রীব মানুষ। কড়া নজরদারি বিএসএফ ও বিডিআর-এর। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকেই রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এদিন বিএসএফ ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন নিরাপত্তা দেখভাল করতে। সন্ধেয় শুরু হবে টাকি পুরসভার উদ্যোগে আতসবাজি প্রদর্শনী। নানা রঙে ভরে উঠবে আকাশ।

তবে অতীতে ইছামতির বুকে প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্রকরে দুই বংলার মিলন, মিষ্টি মুখ আজ ইতিহাস হলেও টাকিতে প্রতিমা বিসর্জন এক অন্য মাত্রা পেয়ে আসছে। প্রতিবারের মতো এবারও পুজোর আগেই দু’দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যৌথ সিদ্ধান্তে ঠিক হয়েছিল, ইছামতীতে দুই বাংলার বিসর্জন হলেও জল সীমান্ত অতিক্রম করা চলবে না। সেইমত প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে নদীর মাঝ বরাবর ঘেরা ছিল বিএসএফ ও পুলিশের যৌথ বেষ্টনীর নিরাপত্তা। অন্যদিকে বাংলাদেশের তরফেও ছিল বিজিবির কঠোর নজরদারি।

২০১১ সালে দুইবাংলার বির্সারজন ঘিরে কিছু অঘটনের পরে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় দুদেশের প্রশাসন। তারপর ২০১২ থেকে বন্ধ হয়ে যায় জলসীমা অতিক্রম করে মিলন উৎসব। ফলে বিসর্জন ঘিরে উন্মাদনা থাকলেও দুই বাংলার মিলনের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি এবারও ঘটল না। দেশের নিরাপত্তার কারনে অতীতের সেই ঐতিহ্য অনেকটা ম্লান হলেও তা সত্ত্বেও দুই বাংলার মিলন উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে ইছামতির দুপারের অগণিত মানুষ এবারেও সাক্ষী থাকলেন।

Previous articleকেমন ছিলেন প্রাক্তন আরপিএফ কনস্টেবল চেতন? জয়পুর এক্সপ্রেসে গু.লিকাণ্ডে চা.ঞ্চল্যকর তথ্য
Next articleমিজোরাম বিধানসভা ভোটে মোদির সভায় যাবেন না জোট শরিকের মুখ্যমন্ত্রী