জাতীয় স্তরে জোড়া পদক হুগলির মৌমিতার, লক্ষ‍্য এবার অলিম্পিক্স

গলায় মেডেল ঝুললেও, শুরুটা ছিল একেবারেই অন‍্যরকম। কষ্ট করেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ পাস করলেন মৌমিতা।

সুমন করাতি,হুগলি: বাবা চায়ের কাপে ওঠান ধোঁয়া আর মেয়ে ট্র‍্যাকে তোলেন ঝড়। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি হলেন হুগলি জেলার বলাগড়ের বাসিন্দা মৌমিতা মণ্ডল। ছেলেবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন দৌড়ে বিশ্ব জয় করার। আর সেই স্বপ্ন হল পূরণ। সম্প্রতি চন্ডিগড় অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় জাতীয় অনূর্ধ্ব-২৩ অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় জোড়া পদক জয় করলেন মৌমিতা। ১০০ মিটার হার্ডেলসে প্রাঞ্জলি দিলীপ পাতিলকে হারিয়ে ১০০ মিটার চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। তবে লং জাম্পে কেরলের লড়াকু প্রভাভাটি পিএসের সঙ্গে এটে উঠতে না পেরে তৃতীয় স্থান পেয়ে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন মৌমিতা।

গলায় মেডেল ঝুললেও, শুরুটা ছিল একেবারেই অন‍্যরকম। কষ্ট করেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ পাস করলেন মৌমিতা। যে ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে হয়তো পড়াশোনা করা যায় কিন্তু খেলাধুলা করা বিলাসিতা। তবুও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি মৌমিতা। বলাগড় ব্লকের জিরাটের কালিয়াগর নট্যপাড়ায় বাড়ি সুভাষচন্দ্র মণ্ডলের। জিরাট স্টেশনের উপরে রয়েছে ছোট্ট একটা ঝুপড়ি চায়ের দোকান কোনদিন ১০০ টাকা আবার কোনদিন ২০০! ওই টাকাতেই চলত চারজনের পেট! ভাঙা ঘর, তাতেই কোনো রকমে মুখে হাসি আর পেটে খিদে নিয়ে কাটিয়ে দিতে হতো চারজনকে। বলাগরের সোনার মেয়ের বাবা কান্নাভেজা গলায় তখন বিগত পুজো গুলোর স্মৃতিচারণা।

দৌড়ের সৌজন্যেই চলতি বছর মার্চ মাসে ইস্টার্ন রেলওয়েতে গ্রুপ সি পদে চাকরি পেয়েছেন মৌমিতা। ২১ বছরের মৌমিতা গত দু’বছর ধরে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে ঘাম ঝরিয়ে শারছেন অনুশীলন। লক্ষ্য তার অলিম্পিক্স। ঘরভর্তি মেডেল আর চোখ ভর্তি তার স্বপ্ন। এখনো এগিয়ে যাওয়ার অনেকটা পথ বাকি মৌমিতার। আর মৌমিতার এই স্বপ্নের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন বলাগরের বিডিও নীলাদ্রি সরকার থেকে ক্রীড়াপ্রেমী পবন পন্ডিত। চাকরি পেয়ে এখন পাকা ঘর বানাচ্ছে মৌমিতা।

আরও পড়ুন:ভারতীয় বোলারদের দাপট, ইংল‍্যান্ডকে ১০০ রানে হারাল টিম ইন্ডিয়া

Previous articleকেরল বি.স্ফোরণ-কাণ্ডের দায় নিয়ে থানায় আত্মসম.র্পণ ব্যক্তির, তদন্তে পুলিশ
Next article‘এক দেশ এক ভোট’ দূরস্ত, সাফ জানিয়ে দিল জাতীয় আইন কমিশন