আন্তর্জাতিক খোখো টেস্ট ম্যাচে সোনা জিতলেন হুগলি জেলার বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়ার মিরডাঙা সরকারি রেল কলোনির প্রীতি মণ্ডল। সাফল্য পেলেও, শুরুটা মোটেও সোনার ছিল না প্রীতির। মা ট্রেনে হকারি করেন বাবা নেই অভাবের সংসারের পড়াশোনা করা গেলেও খেলাধুলা করা বিলাসিতা। তবে লড়াই করে নিজের স্বপ্নর দিকে পা বাড়ান প্রীতি। আর সেখানেই এল প্রথম পদক্ষেপ।

১৩ বছর বয়স থেকেই খোখো খেলা শুরু করে প্রীতি। তার এই খেলার হাতেখড়ি হয় প্রশিক্ষক রাজীব চন্দ্রের কাছে। কিন্তু অভাবের সংসারে থেকে খেলার সরঞ্জাম কিনতে সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েন প্রীতি। তার এই সমস্যার কথা শুনতে পেয়ে তার খেলার সরঞ্জাম কিনে দিয়ে তার মনোবল বাড়িয়ে তোলেন প্রশিক্ষক রাজীব চন্দ্র। প্রীতির এই সাফল্যের প্রথম পদক্ষেপের দিনে প্রশিক্ষক রাজীব চন্দ্র বলেন ছোট থেকেই ওর মধ্যে প্রতিভা দেখেছি। অনুশীলনে ফাঁকি দিতে কখনো দেখিনি। দেখেছি ওর মধ্যে অদম্য জেদ কিছু একটা করতে হবে, আজ হয়তো সেই জেদই ওকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।
যে মাঠে প্রীতি অনুশীলন করে সেই মাঠে নেই আলোর ব্যবস্থা , নেই শৌচালয়। বিকাল ৫টার মধ্যে অনুশীলন করে বাড়ি ফিরত। এত সমস্যা থাকতেও একফোঁটাও মনোবল নষ্ট হয়নি তার মন থেকে। মেয়ের সাফল্যের দিনেও প্রীতির মা বলেন,” অভাবের সংসারে কখন মেয়ের খেলা থেমে যাবে, সেই চিন্তাই কুরে কুরে খায়। খেলার জুতার দাম অনেক লোকের কাছে চেয়ে নিতে হয়েছে, সেই জুতো পরে ছয় মাস চালিয়েছে প্রীতি। অনেক সময় ছেঁড়া জুতো পড়ে মাঠে অনুশীলন করেছে মেয়েটা। মেয়েটাকে ভালো মতো পুষ্টিকর খাবার দিতে পারেনি।”

ঘরভর্তি মেডেল আর চোখ ভর্তি স্বপ্ন এখনও এগিয়ে যাওয়ার অনেকটা পথ বাকি আছে প্রীতির। মেয়েটির আর এই পথের শরিক হয়ে তার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন বলাগরের বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন আমরা অত্যন্ত গর্বিত অত্যন্ত খুশি। ব্লকের তরফ থেকে ওকে আমরা সম্বর্ধনা দেব। ওর ভবিষ্যতে চলার পথে ওর যেকোনো ধরনের সুবিধা দরকার বা আরো কিছু দরকার থাকে সেটার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওকে সব সময় সাহায্য করবে।

আরও পড়ুন:বাবরের পারফরম্যান্স নিয়ে খোঁচা অন্য দেশের ক্রিকেট বোর্ডের, ভাইরাল পোস্ট
