KIFF 2023: স্বাগত সলমন, কলকাতার ‘swag’ দেখে মুগ্ধ ভাইজান!

এলেন, দেখলেন আর জিতলেন কলকাতার মন। ভালবাসায় ভরিয়ে দিলেন বাংলাকে। মঞ্চে সঞ্চালিকা জুন মালিয়া যতবার বলিউড ভাইজানের নাম উচ্চারণ করেছেন, ততবারই করতালি আর উচ্ছ্বাসে অডিটোরিয়ামে কান পাতা দায়।

কথা দিয়ে কথা রাখলেন। ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (29th Kolkata International Film Festival) অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন সলমন খান (Salman Khan)। চলতি বছরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন এবার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তিনি আসবেন। আর দাবাং খান মানেই “এক বার যো ম্যায়নে কমিটমেন্ট কর দিয়া, ফির ম্যায় আপনে আপ কি ভি নেহি শুনতা”। এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (NIS) সেই কথাই ফের শোনা গেল তাঁর মুখে। এলেন, দেখলেন আর জিতলেন কলকাতার মন। ভালবাসায় ভরিয়ে দিলেন বাংলাকে। মঞ্চে সঞ্চালিকা জুন মালিয়া যতবার বলিউড ভাইজানের নাম উচ্চারণ করেছেন, ততবারই করতালি আর উচ্ছ্বাসে অডিটোরিয়ামে কান পাতা দায়। এতদিন শাহরুখ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয় ভাই এবার সলমনকে প্রিয় ‘ভাইজান’ বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাল্টা ‘দিদি’কেও নিজের তালে মাতিয়ে কলকাতার মন জিতলেন সেলিম পুত্র।

সলমন খান মানেই তাঁর হাঁটা চলা, কথা বলার মধ্যে একটা আলাদা ‘swag’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত টেলি জগতের সব তারকারাই বললেন আজ শুধুই টাইগারের টানে ছুটে আসা। তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য যে দর্শকরা মুখিয়ে ছিলেন সেটা নতুন কিছু নয়, তাই শত্রুঘ্ন সিনহা, অনিল কাপুর, মহেশ ভটদের পর যখন পোডিয়ামের সামনে এসে দাঁড়ালেন সলমন, ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র সিগনেচার টিউন বাজছে। কেতাদুরস্ত স্টাইলে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় নিলেন। অডিটোরিয়ামের উচ্ছ্বাস বুঝিয়ে দিচ্ছে কেন বলিউড মানে আজও ‘খান’দের দাপট অব্যাহত। সিরিয়াস মুখে মজার স্টাইল বরাবরই দাবাং খানের পজিটিভ দিক। এদিনও ঠিক সেই ভূমিকায় দেখা গেল তাঁকে। স্যুটের পকেট থেকে একের পর এক কাগজ বের করে ডায়াসে রেখে দিলেন। তাঁর কথায়, “আমার যা যা বলার ছিল সবাই সেটা বলে দিয়েছেন। তাহলে আমি কী বলব?” স্মিত হাসি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুখে। ভাইজানের খুনসুটি যে তিনি ধরতে পেরে গেছেন আগেই। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে কলকাতায় শো করার আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে অবাক হয়ে গেছিলেন সলমন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিনও প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সলমন বললেন, “আমার হিংসে হচ্ছে যে দিদি আমার থেকেও এত ছোট বাড়িতে এত কম জায়গায় থাকেন।”

এ বছরের চলচ্চিত্র উৎসবে থিম গান গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। সেই গানের তালে সলমনের সঙ্গে স্টেপ মেলালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়েও যেভাবে তিনি সাবলীল ভঙ্গিমায় সকলের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন তাতে বিস্মিত বলিউডের তারকারা। সুপারস্টার এদিন মঞ্চে বলেন যে, শেষবার কলকাতায় কনসার্ট করতে এসে তাঁর মনে হয়েছিল শহরের সব মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তাকে ছাপিয়ে গেছে। তাঁর চোখে এটাই সর্ববৃহৎ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এতক্ষণ মঞ্চ ছিল সলমনের, এবার লাইম লাইট কাড়লেন মমতা। ভাইজানের থেকে বাংলায় সিনেমার শুটিং করার প্রতিশ্রুতি আদায় করেই ছাড়লেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভারতের সংস্কৃতির রাজধানী। যদি পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা মুম্বই গিয়ে দাপিয়ে কাজ করতে পারেন, তাহলে বলিউডের শিল্পীদের এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে শুটিং করতে অসুবিধা কোথায়। এরপর দিদিকে কথা দেন ভাইজান। তিনি বলেন এবার বাংলায় তাঁর সিনেমার শুটিং করবেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন নিজের আঁকা ছবি উপহার দেন সলমন খানকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যখন শেষ হচ্ছে ঘড়ির কাঁটা প্রায় সাতটা ছুঁই ছুঁই। কলকাতার আতিথেয়তায় মুগ্ধ সলমন, ভাইজানের ‘ swag’ জ্বরে কাবু তিলোত্তমা।

Previous articleদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যসভায় কেন্দ্রকে তুলোধনা তৃণমূলের
Next articleআগামী বছর কোপা আমেরিকা কাপ, কোন কোন শহরে বসতে চলেছে ম‍্যাচের আসর, ফাইনালই বা হচ্ছে কোথায়?