প্রাপ্য না দিয়ে কেন্দ্রের প্রকল্প সফল করতে বাংলার উপরেই আর্থিক চাপ মোদি সরকারের

বাংলার বকেয়া না দিয়ে উল্টে নিজেদের প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্যের উপরেই আর্থিক চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্প সফল করতে ভিলেজ নোডাল পার্সন নিয়োগ করবে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। তাঁদের নিয়োগের জন্য বেতনের বোঝাও সুকৌশলে রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র।

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে কৃষকদের জন্য রাজ্যের প্রকল্প কেন্দ্রীয় প্রকল্পের থেকে অনেক সফল। কৃষকদের জন্যে রাজ্য সরকার দুটি জনমুখী প্রকল্প কৃষকবন্ধু ও শস্য বিমা যোজনা। এর সুবিধা পান বাংলার কমপক্ষে দেড় কোটি কৃষক। কিন্তু পিছিয়ে পড়েছে কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান নিধি। সুবিধা বেশি থাকায় রাজ্য সরকারের প্রকল্পে আগ্রহী কৃষকরা। বাংলায় এই যোজনার জন্য পড়ে থাকা আবেদনের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ। কেন আবেদনকারীরা এখনও সুবিধা পাননি? এবার কাঁটাছেড়া করতে বসেছে কেন্দ্র (Central Government)। কেন্দ্রের সাফাই, প্রয়োজনীয় সব নথি না থাকায় বা অনলাইন আবেদনে ভুল থাকার জন্যই এঁদের আবেদন খারিজ হয়েছে। তাই দ্রুত এইসব আবেদনের নিষ্পত্তি করতে এবং আগামী দিনে এই প্রকল্প যাতে দ্রুত এগিয়ে যায় তার জন্য বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১ জন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন নিয়োগ করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলায় এখন গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩৩৪২টি। সেই হিসাবে সমসংখ্যক পদে ভিলেজ নোডাল পার্সন নিয়োগ হতে চলেছে আগামী দিনে।

এবার কেন্দ্রের প্রকল্পের সফল রূপায়ণের দায় রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছে মোদি সরকার। বাংলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে যে ১জন করে ভিআরপি নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে, তাঁদের ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা করে বেতন দিতে হলেও বছরে খরচ করবে ১২ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকার যেমন এই নিয়োগের কোনও দায়িত্ব নিতে চাইছে না। এমনকী এই বেতনের বোঝাও নিতে চাইছে না। বেতন মেটানোর দায় রাজ্যের ঘাড়েই ঠেলে দিয়েছে তারা। এই রিসোর্স পার্সনরা গ্রামেতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের জন্য জমা পড়ে থাকা আবেদন এবং বাতিল হয়ে যাওয়া আবেদনগুলি খতিয়ে দেখবেন। কার্যত কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে বাংলায় সফল করে তুলতে বাংলাকে বোঝা বইতে হবে। আর সেই কারণেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে নবান্নে।

আরও পড়ুন: উদাসীন কেন্দ্র, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিং শুরু রাজ্য সরকারের

বাংলার ন্যায্য পাওনা কেন্দ্রীয় সরকার ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বোঝা সামলাতে এমনিতেই রাজ্যকে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য ইতিমধ্যে নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে বিকল্প কাজের ব্যবস্থাও করেছে নবান্ন। এখন নতুন করে ভিলেজ রিসোর্স পারসন-দের নিয়োগের জন্য বেতনের বোঝাও সুকৌশলে রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে প্রকল্পের খরচ চালাতে মাত্র ৩ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি ৯ কোটি টাকা আসবে কোথা থেকে, তার ভার নিচ্ছে না কেন্দ্র।

Previous articleরামজন্মভূমি নিয়ে প্রশ্ন করার শুভেন্দু-অনুগামীদের রোষানলে নচিকেতা! গায়কের বিরুদ্ধে ‘ফতোয়া’
Next articleনেহরুর চিন নীতির সমালোচনায় জয়শংকর, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে ‘বাস্তববোধহীন’ বলে কটাক্ষ