১৯২৪
লেনিন
(১৮৭০-১৯২৪) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আদর্শগতভাবে একজন সমাজতান্ত্রিক হয়ে তিনি মার্কসবাদের একটি বৈচিত্রপূর্ণ বিকাশ সম্ভবায়িত করেছিলেন যা ‘লেনিনবাদ’ নামে পরিচিত। রুশ বিপ্লবের মহানায়ককে বাঙালি জেনেছে সুকান্ত ভট্টাচার্যের ইতিহাস চেতনায়, ‘লেনিন ভেঙেছে রুশে জনস্রোতে অন্যায়ের বাঁধ,/ অন্যায়ের মুখোমুখি লেনিন প্রথম প্রতিবাদ’ এবং নিজস্ব করেছে তাঁরই আত্ম-অনুভবে ‘লেনিন ভূমিষ্ঠ রক্তে, ক্লীবতার কাছে নেই ঋণ,/ বিপ্লব স্পন্দিত বুকে, মনে হয় আমিই লেনিন’। রবীন্দ্রপুত্র রথীন্দ্রনাথকে পতিসরের চণ্ডীমণ্ডপে সাদা দাড়িওয়ালা এক চাষি উঠে দাঁড়িয়ে একদা বলেছিল, ‘‘বাবুমশায়, স্বদেশি ছোঁড়ারা দেশের উন্নতি নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দেয় শুধু। আসল কাজের বেলা কারও টিকিটুকু দেখবার জো নেই। হ্যাঁ, লেনিনের মতো একজন লোক দেশে জন্মাত, দেখতেন সব ঠিক হয়ে যেত।’’ বাঙালির স্মৃতিসত্তায় ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিন বোধহয় ওই চাষির বলা বিশ্বাস হয়েই আজও জাগ্রত। ১৯০৭-এর অগাস্টে জার্মানির স্টুটগার্ট শহরে সপ্তম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেসে রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লেনিন আর ভারতীয় প্রতিনিধিদলে সরোজিনী নায়ডুর ভাই বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। লেনিন আদতে কে, সে-বিষয়ে তখনও কোনও ধারণা ছিল না বীরেন্দ্রনাথের। কিন্তু যেটা দাগ কাটল, লেনিন তাঁর রিপোর্টে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করলেন ভারতের কথা। লেনিনের মৃত্যুর পরে শোকযাত্রাতেও বাঙালির পতাকা উড়েছে। সোভিয়েত সম্পর্কে খানিক সন্দিগ্ধ, কিন্তু লেনিনে গভীর ভাবে অনুরক্ত যুগান্তর দলের শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। হিন্দুকুশ পর্বত পেরিয়ে তিনি-সহ দশ জন সোভিয়েত দেশে পৌঁছন। অন্যতম উদ্দেশ্য, লেনিনের সঙ্গে দেখা করা। তিনি তখন অসুস্থ, তাই দেখা হল না। কিন্তু ১৯২৪-এ লেনিনের মৃত্যুর পরে তাঁর শেষযাত্রায় লাখো মানুষের ভিড়ে ছিলেন শিবনাথও।
১৯৪৫
রাসবিহারী বসু (১৮৮৬- ১৯৪৫) এদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভারতে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাকামী আন্দোলনের একজন অগ্রগণ্য বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির অন্যতম সংগঠক। দিল্লিতে গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর এক বোমা হামলায় নেতৃত্ব দানের কারণে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি সুকৌশলে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়াতে সক্ষম হন এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানে পালিয়ে যান। তিনি ভারতের বাইরে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে জাপানের সম্রাট প্রথা ভেঙে রাজ পরিবারের সদস্যদের জন্য ব্যবহৃত শবযান পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সমাধির মাটি দীর্ঘদিন পরে ফেরে জন্মভিটে রায়নার সুবলদহে। আর তাঁর প্রিয় স্বদেশ, ভারতবর্ষে ১৯৬৭-তে একটি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। তবে তাঁর প্রিয় স্বদেশ সম্পর্কে বলে যাওয়া রাসবিহারীর বাণীটি আজও যেন বিশ্বজনীন : ‘সমস্ত জগতের শান্তির জন্য ভারতের স্বাধীনতা একান্ত প্রয়োজন।’
১৯৭২
ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মণিপুর এদিন ভারত ইউনিয়নের তিনটি পৃথক রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল। ভারতে অন্তর্ভুক্তির সময় সীমান্ত যা ছিল সেটাই বজায় থাকল ত্রিপুরা আর মণিপুরের ক্ষেত্রে। অসম থেকে কিছুটা অংশ নিয়ে গঠিত হয় মেঘালয়। দুটি জেলা, খাসি ও জয়ন্তীয়া পাহাড় এবং গারো পাহাড় নিয়ে মেঘালয় গঠিত হয়।
১৯৫০
জর্জ অরওয়েল (১৯০৩-১৯৫০) এদিন লন্ডনে ইউনিভার্সিটি কলেজ হসপিটালে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আসল নাম এরিক আর্থার ব্লেয়ার। কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক লেখক। জন্ম কিন্তু অবিভক্ত ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মতিহারিতে। উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দি রোড টু উইগ্যান পাইয়ার’, ‘হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া’, ‘এনিমাল ফার্ম’। তাঁর অমর উপন্যাস ‘১৯৮৪— নাইন্টিন এইটি ফোর’ তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে প্রকাশিত হয়।
১৭৯৩
সকাল সাড়ে দশটার সময় এদিন ফরাসি বিপ্লবীদের হাতে লাগল রক্তের দাগ। ষোড়শ লুইয়ের কাটা মুন্ডু গড়িয়ে পড়ল গিলোটিনের কাছে রাখা ঝুড়িতে। জনতার উল্লাসধ্বনিতে চিহ্নিত হল সেই মুহূর্ত জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের জয় হিসেবে।
১৮৪৬
লন্ডনে এদিন প্রকাশিত হল ‘ডেইলি নিউজ’-এর প্রথম সংখ্যা। সম্পাদক চার্লস ডিকেন্স।