কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। সেই উৎসব মুখরতাই যেন ছুঁয়ে ফেলল উত্তর ভারতকে। উৎসব মানেই একে অন্যের সঙ্গে দেখা করে আনন্দে মশগুল হওয়া। আর বহু মানুষের মিলনক্ষেত্র অযোধ্যায় মশগুল হলেন দেশে বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষজন। তারই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল রামলালার মূর্তিতে।
বেশ কয়েকমাস ধরে যে মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিল অযোধ্যা সেই মুহূর্ত ফুটিয়ে তুলতে বেলা ১২.১৫ মিনিটে উজ্জ্বল উপস্থিতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। পরণে সোনালি কুর্তা, ক্রিম রঙের ধুতি ও উত্তরীয়। হাতে লাল ওড়না ও তার ওপর রাখা রূপোর ছাতা। প্রধান প্রবেশ দ্বার দিয়ে হেঁটে গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন তিনি। তাঁর জন্য আয়োজন করে রাখা বিশেষ পিঁড়িতে বসে শুরু করেন সংকল্প পাঠ। পাশের পিঁড়িতে স্বরসংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। অযোধ্যার পুরোহিতের হাতেই শুরু হয় সংকল্প পাঠ। কাশি বা দেশের অন্যান্য মন্দির থেকে আসা পুরোহিতদের স্থান হয় প্রধানমন্ত্রীর পিছনের সারিতে।
কপালে তিলক এঁকে, হাতে কোশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংকল্পের মধ্যেই খুলে দেওয়া হয় রামলালার সর্বজন পরিচিত মূর্তির চোখের আবরণ। সংকল্পের শেষ হতেই গর্ভগৃহে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য পুরোহিতরা হাতের ঘড়ি দেখিয়ে প্রধান পুরোহিতকে স্মরণ করিয়ে দেন সময়ের বিষয়টি। ১২.৩১ মিনিটের পর ৮৪ সেকেন্ডের মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার সম্পন্ন করার কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। এরপরই উঠে দাঁড়িয়ে প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে এই আচারে যোগ দেন মোহন ভগবত সহ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও রাজ্যপাল আনন্দিবেন প্যাটেল।
১২.৩৪ মিনিটে প্রাণপ্রতিষ্ঠা পর্ব শেষে শুরু হয় রামলালা মূর্তির আরতি। আরতি শেষে রামলালার মুর্তি প্রদক্ষিণ করেন প্রধানমন্ত্রী, তারপর সাষাঙ্গে প্রণাম। প্রাণপ্রতিষ্ঠা পর্বে শুরু হতেই আকাশ থেকে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে শুরু হয় পুষ্পবৃষ্টি। সমস্ত প্রক্রিয়ার শেষে উপস্থিত পুরোহিতদের গর্ভগৃহের মধ্যে উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী। বাইরে বেরিয়ে এসে উপস্থিত জনতাকে প্রণাম জানান। সেখানে কিছু বিশেষ পুরোহিতদের বক্তব্যের পর পুরোহিতের হাতে চরণামৃত পান করেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ এই উপাচারের দর্শক হিসাবে উপস্থিত সেলিব্রিটি, পুরোহিত থেকে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে যদিও বিতর্কের অবকাশ রাখতেই পারেন সমালোচকরা।