গিরগিটিকেও হার মানাচ্ছেন: নীতীশের ‘পাল্টি’তে নানা মত জোটে

‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রথম বৈঠকের আহ্বায়ক হয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সেই নীতীশ ফের বিরোধী জোটের সঙ্গ ছেড়ে শাসক শিবিরের পথে। ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গ ত্যাগ নিয়ে নীতীশের সাফাই, তাঁর প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। তবে নীতীশের এহেন পালটিতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির, ‘পাল্টিবাজ’ তো বটেই নীতীশকে ‘গিরগিটি’র সঙ্গে তুলনা করেছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী শিবির।

ইন্ডিয়া জোটে আসন ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই নীতীশের ইন্ডিয়া ত্যাগ বড় ধাক্কা হলেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, জোট ছেড়ে নীতীশের বেরিয়ে যাওয়ায় ‘ইন্ডিয়া’র ক্ষতি তো হবেই না, বরং লাভ হবে। তাঁর এই জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াতে বিহারে লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোট ভাল ফলই করবে। এদিকে নীতীশ যে জোট ছাড়বেন সে আভাস আগেই পেয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। বারবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি ইস্তফা দিতেই খাড়গে বলেন, “বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং লালু প্রসাদ যাদব আমাকে আগেই এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজ তা সত্যি হল। তবে দেশে এমন অনেক লোক আছেন যাঁরা আয়া রাম, গয়া রাম গোত্রের মধ্যে পড়েন।” কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, “নীতীশ কুমার যে ভাবে দলবদলের খেলা শুরু করেছেন, যে ভাবে রং বদলাচ্ছেন, তাতে গিরগিটিকেও কড়া টক্করের মধ্যে পড়তে হবে। এই বিশ্বাসঘাতককে বিহারের জনতা মাফ করবে না। এই ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, কংগ্রেসের ‘ন্যায় যাত্রা’য় ভয় পেয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”

এদিকে বিরোধী জোটের সঙ্গ ত্যাগ নিয়ে নীতীশের দলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথমে ঠিক ছিল এই জোটে কোনও মুখ থাকবে না। তবে পরে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মল্লিকার্জুন খাড়গেকে জোটের মুখ হিসেবে প্রস্তাব করেন। এটা কংগ্রেসের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছে যা জেডিইউ মেনে নেয়নি। তার জেরেই কী এই পদক্ষেপ? যদিও এই সামান্য যুক্তি ধোপে টিকছে না। কংগ্রেসের তরফে নীতীশকে জোটের আহ্বায়ক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন জেডি (ইউ)-এর জাতীয় সভাপতি নীতীশ। পাল্টা প্রস্তাবে তিনি বলেছিলেন, “কংগ্রেসের কারও এই পদ নেওয়া উচিত। কংগ্রেসের কোনও নেতাকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হোক।” সেই টালমাটাল পরিস্থিতির মাঝেই এবার জোটের সঙ্গ ছাড়লেন নীতীশ। অবশ্য কংগ্রেস হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে, নীতীশের জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াটা খুব একটা চাপ হবে না ‘ইন্ডিয়া’র। তবে রাজনৈতিক মহলের দাবি, কংগ্রেস যতই স্বাভাবিক ভাবে বিষয়টি দেখানোর চেষ্টা করছে, নীতীশ কিন্তু একটা ‘অস্বস্তির’ কাঁটা রেখে গেলেন।

Previous articleরবিবারের ‘মন কি বাত’ জুড়ে সংবিধান আর রামমন্দিরের ইতিহাস!
Next article“বাকি দাবিও পূরণ করব”, সিভিক ভলান্টিয়ারদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা মমতার