বাংলার মানুষের জন্য একগুচ্ছ উপহারের আশ্বাস নিয়ে লক্ষ্মীবারে রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ বাজেট

লোকসভায় অন্তর্বর্তী বাজেটের পরে এবার রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ বাজেট। বৃহস্পতিবার, রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) আগামী আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষণা মতো একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের মজুরি রাজ্যের তরফে দিতে বাজেটে অর্থের সংস্থান করছে রাজ্য সরকার। পাশপাশি, আবাস প্রকল্পের বঞ্চিতদের মাথার ছাদের ব্যবস্থা করারও সংস্থান থাকছে বাজেটে।

কেন্দ্রের থেকে বাংলার প্রাপ্য ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার মধ্যে যেমন ১০০ দিনের মজুরির টাকা আছে, তেমনই আছে আবাস যোজনার টাকাও। কেন্দ্রের কাছে ১০০ দিনের কাজের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার টাকাও বকেয়া বাংলার। বাকি আছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা। তালিকায় আছে মিড ডে মিলের টাকাও। এই সব টাকার দাবি জানিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রকে। এমনকী দিল্লি গিয়ে মোদির সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠকও করেছেন মমতা। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বাংলার মানুষ তাঁদের হকের টাকা পাননি। এই অবস্থায় কলকাতার রেড রোডের ধর্নামঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ১০০ দিনের কাজ করা বাংলার ২১ লক্ষ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকা ২১ ফেব্রুয়ারি পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের যে বাজেট পেশ হতে চলেছে সেখানেই এই ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ টাকার সংস্থান থাকছে।

১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের থেকে বাংলার বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মজুরি বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ৩৭৩২ কোটি টাকা। আর উপাদান বাবদ বকেয়া ৩১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বকেয়ার পরিমাণ ৬৯১৩ কোটি। মজুরির টাকা সরাসরি মজুরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা। উপাদানের টাকা ঢোকার কথা গ্রাম পঞ্চয়াতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র মজুরির টাকা মজুরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠাবার কথা বলেছেন। সেই টাকা রাজ্য বাজেটের মধ্যে রাখা থাকছে। ২১ লক্ষ মজুর ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সেই টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবেন। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি এখনই উপাদানের টাকা পাবেন না। আবার আবাসের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত থাকলেও বাড়ি পাননি ১১ লক্ষ বাংলার মানুষ। তাঁদের ক্ষেত্রে বকেয়ার মোট পরিমাণ ৬৬০০ কোটিরও বেশি। এই টাকাও রাজ্যের তরফে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এক দফাতেই তা দেওয়া হবে না। কয়েক কিস্তিতে তা মেটানো হবে। রাজ্য বাজেটেই প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হবে বলে খবর।

এদিকে রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া কেন এবারের অধিবেশনের সূচনা কেন তার ব্যখ্যা দিয়েছেন স্পিকার। তিনি বলেন, “রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়াটা কোনও বেআইনি বিষয় নয়। এটা সংবিধানবহির্ভূত নয়, সংসদীয় রীতিবহির্ভূতও নয়। ১৯৬২ সালের সংসদে একই ভাবে আগের অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছিল। সেবার রাষ্ট্রপতির ভাষণ ছাড়াই সংসদের বাজেট অধিবেশন বসেছিল। ২০০৪ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল।“ তিনি আরও বলেন, “যে অধিবেশন এখন চলছে, তা গত বছর শীতকালীন অধিবেশনেরই ধারাবাহিকতা। এটি এই বছরের প্রথম অধিবেশন নয়। কারণ, গত অধিবেশনেরই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এই অধিবেশনটি হচ্ছে। তাই রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে এই বাজেট অধিবেশন শুরু করতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। ফলে আমি এই অধিবেশন শুরুর আহ্বান জানিয়েছি।“

Previous articleদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ বৈঠকে মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা!
Next articleকতটা ‘পরিপূর্ণ’ কাজল শেখ, প্রশ্ন তুললেন বিদায়ী জেলাশাসক