জ্যোতি বসুর সাধের ‘এবিপিটিএ ভবনে’ বিয়ে বাড়ি, জন্মদিন! ভাড়া খাটাচ্ছে CPM

একসময় বিরোধীরা টিটকিরি দিয়ে বলেছিল সিপিএমের এমন অবস্থা আসবে যে দলীয় কার্যালয়গুলো বিয়ে বাড়ি হিসেবে ভাড়া দিতে হবে। কার্যত সেই দৃশ্যই দেখা গেল সল্টলেকের ABPTA ভবনে।

বিধানসভায় ‘শূন্য’, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তলানিতে থেকেছে, অতএব কমরেডদের ভাঁড়ারে টান। একসময় বিরোধীরা টিটকিরি দিয়ে বলেছিল সিপিএমের এমন অবস্থা আসবে যে দলীয় কার্যালয়গুলো বিয়ে বাড়ি হিসেবে ভাড়া দিতে হবে। কার্যত সেই দৃশ্যই দেখা গেল সল্টলেকের ABPTA ভবনে। এবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বামফ্রন্টের দাপুটে নেতা জ্যোতি বসুর (Former CM Jyoti Basu) উদ্বোধন করা সল্টলেকের প্রাসাদোপম ‘এবিপিটিএ ভবন’ (ABPTA Bhawan) ভাড়া খাটাচ্ছে সিপিএমের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন ‘নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। বিয়ে বাড়ি, জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, শ্রাদ্ধ যেকোনও অনুষ্ঠানে এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ি ভাড়া পেতে পারেন আপনিও। ব্রিগেডের মাঠে আদর্শ নিয়ে বড় বড় ভাষণ দেওয়া লাল পতাকাধারীরা আজ কোথায়?

১৯৯৪ সালের মে মাসে সল্টলেকের ডিডি-১৮ ঠিকানার দুধসাদা বাড়ির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। দেড় দশক আগে পর্যন্তও এই বাড়ি গমগম করত । আর এখন রমরমিয়ে সেখানে জন্মদিনের জিঙ্গল বা বিয়ের সানাই বাজে। কখনও ডিজে মিউজিক , আবার কখনও শ্রাদ্ধ বাড়ির করুণ সুর। প্রশ্ন উঠছে সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার একযুগের মধ্যে কী এমন পরিস্থিতি হল যে এই ভবন ভাড়া দিয়ে টাকা তুলতে হচ্ছে? এবিপিটিএ সভাপতি মোহনদাস পণ্ডিত (Mohandas Pandit) অবশ্য আর্থিক অসচ্ছলতার কথা মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, “সল্টলেকের অফিস পাড়ায় একটাও ভাল ‘হল’ নেই ছোটখাটো অনুষ্ঠানের জন্য। আমরা হল ভাড়া দিই।” এখানেই শেষ নয় নিজের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে তাঁর যুক্তি, অনেকেই শান্তিনিকেতনে বাড়ি কিনে ভাড়া দেন। তার মানে অর্থ সংকট আছে এমনটা নয়। অর্থাৎ এককালে যে বাড়িতে সব সময় লোকজনের আনাগোনা ছিল আজ সেই বাড়ির শূন্যতা ঢাকতে এবং ভবনের মেন্টেনেন্স বজায় রাখতে এই পন্থা অবলম্বন করতে হল সিপিএমকে। জানা গেল, এবিপিটিএ ভবনে জন্মদিন, বিয়েবাড়ি, শ্রাদ্ধ ইত্যাদির অনুষ্ঠানের জন্য জন্য এখন ১০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। সঙ্গে পরিষ্কারের অতিরিক্ত এক হাজার টাকা। তবে মিটিং বা সেমিনারের জন্য রেট একটু কম, পাঁচ হাজার টাকা। ১৯৩৫ সালে যাঁরা ABPTA প্রতিষ্ঠা করেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। তখন সিপিএমের জন্ম হয়নি। পরবর্তী কালে এই সংগঠনে সিপিএমের প্রভাব নিরঙ্কুশ হয়। আজ সেই প্রভাব থাকলেও প্রতিপত্তির যে অভাব ঘটেছে সেটা বেশ পরিষ্কার। যদিও নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সদস্যরা তা একেবারেই মানতে নারাজ। শোনা যাচ্ছে, এবিপিটিএ ভবনের সংস্কার দ্রুত শুরু হবে। তখন কি বাড়ির ভাড়া বাড়বে? সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ভোট বাক্সে ‘শূন্য’ হয়ে যাওয়া সিপিএমের সংগঠনের অন্তঃসারশূন্যতা ফের প্রকাশ্যে এসে গেল বলেই মনে করছেন অনেকে।


Previous articleবিরাট বদল বাগানে, সরছেন হুগো, যোগ দিচ্ছেন কাউকো
Next articleজোকার বহুতল আবাসনের নীচে উদ্ধার ত.রুণীর দেহ, সু.ইসাইড নোট ঘিরে র.হস্য