ভিক্ষা করেই লাখ লাখ টাকা! মহিলা ভিক্ষুকের গল্প শুনে চোখ কপালে পুলিশের

সূত্রের খবর, জেলাশাসক আশিস সিংয়ের নির্দেশে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। আর তখনই মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরের ভওয়রাসলা স্কোয়্যারে পুলিশের নজরে আসেন ওই মহিলা।

চাকরি, ব্যবসা বা কোনও ফাটকা লটারি নয়! শুধুমাত্র ভিক্ষা করেই বছরে লাখ লাখ টাকা উপার্জন (Income) করলেন এক মহিলা। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। সম্প্রতি ইন্দোরে (Indore) এমনই ঘটনা সামনে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে যেখানে মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা একবেলা খাওয়ার জোগাড় করতে রীতিমতো ভিড়মি খেতে হয়। সেখানে এই মহিলা শুধুমাত্র ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে শহরের এক ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে বসতেই কেল্লাফতে। এদিকে গত বুধবার বিষয়টি নজরে আসে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের (Madhya Pradesh Police)। সূত্রের খবর, জেলাশাসক আশিস সিংয়ের নির্দেশে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। আর তখনই মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরের ভওয়রাসলা স্কোয়্যারে পুলিশের নজরে আসেন ওই মহিলা। এরপরই মহিলা ও তাঁর মেয়েকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা নিজেই পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ৪৫ দিন ধরে এই এলাকায় ভিক্ষা করছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর একমাত্র মেয়ে। আর এই ৪৫ দিনে তিনি আয় করেছেন ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে বাড়িতে পাঠিয়েছেন ওই মহিলা। পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা রাজস্থানের বাসিন্দা। রাজস্থানের বাড়িতে তাঁর আরও দুই সন্তান আছে। দাদু, ঠাকুমার কাছেই মানুষ হচ্ছে তাঁরা। বাকি দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন ব্যক্তিগত কারণে। যদিও কোন খাতে সেই টাকা খরচ হয়েছে, তা পুলিশকে জানাননি মহিলা। এদিকে পুলিশ আরও জানিয়েছে, বুধবার যখন পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে তখন তাঁর কাছে ছিল নগদ ১৯ হাজার ২০০ টাকা। পুলিশকে মহিলা আরও জানিয়েছেন, ওই টাকা তিনি মাত্র এক সপ্তাহে উপার্জন করেছেন।

তবে শুধুমাত্র তিনিই নয়, তাঁর আট বছরের কন্যাও গত বুধবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপার্জন করেছে ৬০০ টাকা। পুলিশ আরও জানিয়েছে, উজ্জয়িনী শহরেই এই মহিলা তাঁর স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে ভিক্ষা করেন। যাঁর মধ্যে শুধু ওই মহিলারই উপার্জন মাসে দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষ টাকা। বার্ষিক আয় কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা। যা যে কোনও কর্পোরেট চাকরির বেতনের থেকেও বেশি। আর শুধুমাত্র রাস্তায় পরিবারকে নিয়ে ভিক্ষা করেই শহরের একাধিক প্রান্তে বাড়ি, জমি কেনার পাশাপাশি তাঁর গাড়ি, অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র, স্মার্টফোন সবকিছুই রয়েছে।

সম্প্রতি পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায় ইন্দোরে এই মুহূর্তে কমপক্ষে সাত হাজারেরো বেশি মানুষ ভিক্ষা করে টাকা উপার্জন করেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই ৭ হাজার ভিক্ষুক ইন্দোরে বসবাসকারী ৯৮.৭ শতাংশ মানুষের থেকে বেশি টাকা উপার্জন করেন। বেশকিছু দিন ধরেই মধ্যপ্রদেশ সরকার শহরগুলিকে ‘ভিক্ষুক মুক্ত’ করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করছে। বুধবার সেই সূত্র ধরে তল্লাশি চালাতেই সমস্যা। ইতিমধ্যে মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরর পাশাপাশি তাঁর আট বছরের শিশুকন্যাকে হোমে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে কী কারণে মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল তা এখনও জানা যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে ওই মহিলার বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির অভিযোগের পাশাপাশি একাধিক কারণে দায়ের মামলা।

Previous articleবহুতলের ছাদ কোনওভাবেই বিক্রি করা যাবে না, নিষেধাজ্ঞা কলকাতা পুরসভার
Next articleপলিটেকনিকে মহিলা আসন সংরক্ষণ, ভোকেশনাল ট্রেনিং নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যের!