কৃষক আন্দোলন: পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সীমানা যেন যুদ্ধক্ষেত্র, প্রাণ গেল ২৪-এর যুবকের

বুধবার সকাল থেকে কৃষক আন্দোলনে উত্তাল পাঞ্জাব হরিয়ানা সীমান্ত। অন্নদাতাদের দিল্লি প্রবেশ আটকাতে দাঁত-নখ বের করেছে মোদি সরকার। এদিন সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে চলা খণ্ডযুদ্ধে প্রাণ গেল ২৪ বছর বয়সী এক তরুণের। ফলে আন্দোলনের জেরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হল ৩ জনের। আন্দোলনরত কৃষকদের ঠেকাতে ড্রোনের মাধ্যমে টিয়ার গ্যাসের ছুড়ছিল পুলিশ। পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসে আহত হন ২৪ বছরের করণ সিং। দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় যুবকের। টিয়ার গ্যাসের পাশাপাশি পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর তরফে ৩২ বোর ও ১২ বোরের অস্ত্র থেকে গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে।

কৃষকদের দিল্লি প্রবেশ আটকাতে কংক্রিট, লোড বাস, ট্রাক এবং শিপিং কন্টেইনার দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছে প্রশাসন। কাঁটা বসানো হয়েছে রাস্তায় যাতে ট্রাক্টর নিয়ে প্রবেশ করতে না পারেন কৃষকরা। পাল্টা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে গ্যাস কাটার, বুলডোজার এবং অন্যান্য ভারী মেশিন নিয়ে দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল থেকে খণ্ডযুদ্ধ পুলিশ ও কৃষকদের মধ্যে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। ড্রোনের মাধ্যমে লাগাতার টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়তে থাকে পুলিশ। সেই গ্যাসেই আহত হন ২৪ বছরের করণ সিং। দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় যুবকের। এর আগে গত রবিবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বছর সত্তরের মনজিৎ সিংয়ের। তার আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৭৮ বছরের জ্ঞান সিং প্রয়াত হন বিক্ষোভের মাঝে।

এদিকে, এই টালমাটাল পরিস্থিতির মাঝেই পঞ্চম দফায় কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকের ডাক দিয়েছে মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা কৃষক নেতাদের এমএসপি ইস্যুতে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পরে, ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (ক্রান্তিকারি) এর সুরজিত সিং ফুল বলেন, “কেন্দ্র এটি করেছে কারণ তারা আরও সময় নষ্ট করতে চায়। তাই তারা আমাদের আরেক দফা আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি জারি করা উচিত যে সমস্ত দাবি পূরণ করা হবে। অন্যদিকে, বুধবার পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট ট্র্যাক্টর-ট্রলি এবং অন্যান্য  যানবাহনে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ যাত্রার বিরুদ্ধে জরুরি শুনানির জন্য কেন্দ্রীয় ও হরিয়ানা সরকারের অনুরোধ খারিজ করেছে।

এই আন্দোলন নিয়ে কড়া সুরে কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের জানান, “আমাদের শীর্ষ নেতারা এগিয়ে যাবেন, এবং সমগ্র বিশ্ব আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যেতে দেখবে। সরকার যদি মনে করে যে কৃষকদের হত্যা করে তাদের সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তা করতে পারে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যেতে যাব। কোনো সহিংসতা হলে তার জন্য সরকার দায়ী থাকবে।”

Previous articleলোকসভা ভোটের প্রস্তুতি, প্রতিটি জেলার স্পর্শকাতর বুথের তালিকা চাইল নির্বাচন কমিশন
Next articleপার্থর জামিন মামলায় ইডি-র বিশেষ অধিকর্তার রিপোর্ট তলব হাই কোর্টের