উচ্চ মাধ্যমিকের মোবাইল-কাণ্ডে দায়ী ‘অ.সাধু’ শিক্ষাকর্মীরা! ২০২৫-এর পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

দুয়েকটি মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে শেষ হল চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। সেই ঘটনায় দায়ী কয়েকজন অসাধু শিক্ষাকর্মীরা। পরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য (Chiranjit Bhattacharya) পাশে নিয়ে এই অভিযোগ করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, আগামী বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ৩ মার্চ থেকে। শেষ হবে ১৮ মার্চ।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী বছর পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০ টা থেকে। চলবে ১টা ১৫ পর্যন্ত। এই বছর পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৯টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত থেকে। অন্যান্য বার পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ হয়ে থাকে। তবে এবার আগেই ফল প্রকাশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। যেহেতু এই বছর অনলাইনে নম্বর জমা দেওয়ার বিষয়টি চালু করা হয়েছে, তাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এবার শেষ দিনেও পরীক্ষাকেন্দ্রে দুটি মোবাইল ফোন ধরা পড়েছে। এই নিয়ে মোট ৪১টি ফোন ধরা পড়েছে। সেই সব পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা এই বছরের মতো বাতিল করা হয়েছে। ব্রাত্য জানান, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে সারা রাজ্যে মোট ৪১ জনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৫ জন ছাত্রী এবং ১৬ জন ছাত্র। তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছিল। অভিযোগ, মোবাইল সরবরাহ করার ক্ষেত্রে একশ্রেণির অসাধু শিক্ষাকর্মী জড়িত। সেই অভিযোগ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই দেখা গিয়েছিল যে সমস্ত কেন্দ্রগুলি স্পর্শকাতর নয় সেখান থেকে ফোন ধরা পড়েছে। পরীক্ষার শেষদিন পর্যন্ত ৪১টি ফোন বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি এদের প্রত্যেকের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়িতে এই রকম বেশ কিছু অশিক্ষক কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু কেন্দ্রে ইচ্ছা করে বহিরাগতদের ঢুকতে দিচ্ছেন অশিক্ষা কর্মচারী বা শিক্ষকরা। সংসদ তাঁদের চিহ্নিত করেছে। আগামী বছর এই সংখ্যাটা একেবারে নির্মূল করা যাবে কিনা জানি না, তবে নিশ্চয়ই কমানো যাবে। যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে সংসদের তরফে। পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এই জেলাগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল অনুমোদন করা হয়েছে। সেগুলো আমরা দেখছি।

যে ফোনগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেগুলো পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ফোন গুলোর তথ্য খতিয়ে দেখবে। সেখান থেকে তথ্য পাচার করা হয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। এরপর সেই ফোন আদৌ আর ফেরত দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে যেহেতু এরসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত জড়িয়ে আছে তাই একটু নমনীয় ভাবেই বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে বলে এদিন জানান ব্রাত্য বসু।

অন্যদিকে, পরীক্ষার আগেই ভুয়ো প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে ধরাও পড়েছে মূল পান্ডা। সংসদ সূত্রে খবর, প্রতি প্রশ্নপত্র ৯০০টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে ওই পান্ডা ধরা পড়তেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা আর ঘটেনি। এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, বেশ কিছু অসাধু চক্র সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দিয়েছিল, যাতে পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা যায় এবং সরকারকে কালিমালিপ্ত করা যায়। এ ধরনের নানারকম প্রয়াস তারা চালিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। সরকার এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদ এ ব্যাপারে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা এ ধরনের ভুয়ো প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দেওয়ার যে চক্র, তার মূল পান্ডাকে গ্রেফতার করেছে।

আরও পড়ুন- জল্পনায় সিলমোহর! হাতকে দুষে গেরুয়া শিবিরে কৌস্তভ, সঙ্গে আরও ৩

 

 

Previous articleজল্পনায় সিলমোহর! হাতকে দুষে গেরুয়া শিবিরে কৌস্তভ, সঙ্গে আরও ৩
Next articleডো.পিং-এর অভিযোগে নি.র্বাসিত ফ্রান্সের ফুটবলার পল পোগবা