বাংলার বঞ্চনা নিয়ে মৌন, ভোটের আগে ঢাক পিটিয়ে ৭000 কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন

যে রেল ব্যবস্থা নিয়ে বড়াই করলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই পরিষেবা যে নিত্যদিন ব্যাহত হচ্ছে তা নিয়ে মুখে কুলুপ বিজেপি নেতাদের। যখন সরকারি সভা মঞ্চে কেন্দ্রের উন্নয়ন নিয়ে ঢাক পেটাচ্ছেন মোদি, সেদিনই শিয়ালদহ ডিভিশনে (Sealdah Division) ১১৫টা ট্রেন বাতিলে সমস্যায় নিত্যযাত্রীরা।

কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বাংলার। প্রকল্পের কাজ করিয়েও টাকা দেয়নি কেন্দ্রের মোদি সরকার (Modi Government)। এখন সেই গরিব মা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)। অথচ বাংলায় এসে সেই বঞ্চনা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করলেন না নরেন্দ্র মোদি। উল্টে লোকসভা ভোটের আগে দলের বিজ্ঞাপন করতে উদ্বোধন করলেন প্রকল্পের। দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)আজ দুপুর ৩ টে নাগাদ আরামবাগের সরকারি মঞ্চে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ভরার প্রকল্প থেকে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের আধুনিকীকরণের প্রকল্পের সূচনা করেন। পাশাপাশি রাজ্যের তিনটি রেল প্রকল্পেরও সূচনা করেছেন তিনি। এদিন মঞ্চে রেল বিকাশের গুচ্ছ গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী (PM)। বাংলায় রেল বিকাশের জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি। গত ১০ বছরে বাংলার জন্য নতুন ১৫০টি ট্রেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে ৫ টি বন্দেভারত চালুর কথাও বলেন। সরকারি মঞ্চের বক্তব্যে বারবার যাত্রী স্বাছন্দ্য, রেলের আধুনিকীকরণ, অমৃত ভারত প্রকল্পের অধীনে বাংলার একাধিক স্টেশনের উন্নয়নের বুলি শোনা গেল মোদির মুখে। কিন্তু বাংলার মানুষের বঞ্চনার কথা কই? যে রেল ব্যবস্থা নিয়ে বড়াই করলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই পরিষেবা যে নিত্যদিন ব্যাহত হচ্ছে তা নিয়ে মুখে কুলুপ বিজেপি নেতাদের। যখন সরকারি সভা মঞ্চে কেন্দ্রের উন্নয়ন নিয়ে ঢাক পেটাচ্ছেন মোদি, তারপরের দিন মানে আগামিকাল শিয়ালদহ ডিভিশনে (Sealdah Division) ১১৫টা ট্রেন বাতিল নিয়ে চিন্তায় নিত্যযাত্রীরা। দুদিন আগেই বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে বাংলা বিহার সীমান্তে। সেই নিয়ে একটি শব্দও খরচ করলেন না দেশের প্রধানমন্ত্রী (PM)।

শুক্রবার আরামবাগে নরেন্দ্র মোদির সরকারি কর্মসূচিতে ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)। এ ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari)। এই কর্মসূচি থেকে মোদি সাত হাজার কোটির বেশি মূল্যের প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। এর পাশাপাশি রেল, রাস্তা,পেট্রোলিয়াম, জল পরিষেবার উন্নয়নের কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে। মোদি জানান দেশের উন্নয়নে গতি আনাই কেন্দ্র সরকারের লক্ষ্য। কিন্তু ১০০ দিনের কাজ করার পরও বাংলার শ্রমিকদের বরাদ্দ আটকে রাখা নিয়ে কিছুই বললেন না। বঞ্চিতদের প্রাপ্য দেওয়ার কোনও প্রতিশ্রুতিও দিলেন না তিনি। শুধুই ‘ভাঁওতাবাজির রাজনীতি’ করে গেলেন। যে রেলের উন্নতি নিয়ে এত কথা বড় বড় কথা বলছেন মোদি, সেই পূর্বরেলের প্রতি শাখায় নিত্যদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। একাধিক নতুন ট্রেন চালুর কথা বললেন কিন্তু প্রতিদিন যে সংখ্যায় ট্রেন বাতিল হচ্ছে, রাতের লোকাল ট্রেনে মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই, একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিষেবা, খাবারের মান প্রশ্নের মুখে, সেই খবর কি রাখেন প্রধানমন্ত্রী? এই সব উত্তর মেলেনি। কারণ নরেন্দ্র মোদি ব্যস্ত রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে। তাই তড়িঘড়ি ছাড়লেন সরকারি মঞ্চ।


Previous article১০ মার্চ কি হচ্ছে ডার্বি ? এলো বড় আপডেট
Next articleবঙ্গ বিজেপিতে সুকান্ত-শুভেন্দুর দাপট, মোদি মঞ্চে ব্রাত্য দিলীপ