কুণাল-ব্রাত্য সাক্ষাতেও বরফ গলেনি, দলত্যাগের জল্পনা জিইয়ে বিধানসভায় তাপস!

মান ভাঙাতে সকাল সকাল বিধায়ক তাপস রায়ের বউবাজারের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ। বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা ও আলাপ-আলোচনা হয়। বরাহনগরের তৃণমূল কাউন্সিলররাও তাপসবাবুর বাড়িতে আসেন। কিন্তু এত সবকিছুতেই বরফ গলেনি। বিভিন্ন ইস্যুতে দলের বিরুদ্ধে, দলনেত্রীর বিরুদ্ধে একরাশ একরাশ ক্ষোভ, অভিমান ও হতাশার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় বরাহনগরের বিধায়কের মধ্যে।

আজ, সোমবার ১২টা নাগাদ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে দল নিয়ে নিজের অভিমানের কথা জানিয়ে সোজা বেরিয়ে রওনা দিলেন বিধানসভার পথে। সেখানে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলেই খবর। তৃণমূলের সঙ্গেও সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করবেন তাপস রায়।

বিধানসভায় যাওয়ার আগে বাড়িতে সাংবাদিকদের যা বললেন তাপস রায়

আপনি কি আপনার সিদ্ধান্তে অনড়? তাপস রায়ের সোজা সাপটা উত্তর, সিদ্ধান্ত অত সহজে পাল্টে ফেলা যায় না আমি যেই সিদ্ধান্তে ছিলাম সেই সিদ্ধান্তে রয়েছি। আসলে চারিদিকে দুর্নীতি আর দুর্নীতি। সন্দেশখালি আমার চোখ খুলে দিয়েছে। এবারের বাজেট অধিবেশন এই প্রথম আমি বাজেট অধিবেশন করিনি। যে কোনও জিনিস মানুষ যখন করে তাঁর মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা থাকে। ২৩-২৪ বছর আমি করেছি মানুষের জন্য।

মুখ্য বিষয় দুর্নীতি ও সন্দেশখালি বলেও ব্যাখ্যা করেন তাপস রায়। তাঁর কথায়, ১২ জানুয়ারি একটি বিশেষ দিন গেছে আমার বাড়িতে আজ ৫২ দিন দল আমার পাশে দাঁড়ায়নি। কুণাল তো এসেছিলেন আমাকে সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনার জন্য। উনি আসার কথা শুনে, সুব্রত বক্সির শো-কজ নোটিশ এসেছে ওনার কাছে। এই দলে যাদের শো-কজ করা উচিত, যাঁদের বহিষ্কার করা উচিত তাদের করা হয় না।

দলনেত্রীর ভূমিকায় হতাশা ধরা পড়েছে তাপস রায়ের গলায়। তাঁর কথায়, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় স্পিচ দিতে গিয়ে – আমার বাড়ির ইডি অভিযান এটা উল্লেখ করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি শেখ শাহজাহানের কথা উল্লেখ করলেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার ও আমার পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন এই ক্রিয়েটেড ইডি অভিযানের দিন। কিন্তু তিনি দাঁড়াননি।

লোকসভা ভোটের মুখেই উত্তর কলকাতার তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্য়ে চাপানউতোর চলছিল। দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিশানা করে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় বলেছিলেন, তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠানোর নেপথ্যে রয়েছেন সুদীপবাবু। আর সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গই তুললেন তাপস রায়। তাঁর কথায়, ”গত ১২ জানুয়ারি আমার বাড়িতে ইডি অভিযান চালায়। সারাদিন তাঁরা এখানে ছিলেন। ওইদিন বিবেকানন্দের জন্মদিনে আমার যে কর্মসূচি ছিল, তাতে যেতে পারিনি। কিন্তু ওইদিনের পর থেকে দলের কেই আমার পাশে দাঁড়ায়নি। মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেননি। উনি বলেছেন যে শাহজাহানকে ইডি টার্গেট করেছে। কিন্তু আমাকে বা আমার পরিবারের কাউকে ফোন করে কিচ্ছু বলেননি। বরং দলের কেউ কেউ আমার বাড়িতে ইডি অভিযানে উল্লাস করেছে।”

আরও পড়ুন- মতুয়া মহাসঙ্ঘের তহবিলে ‘অবৈধ’ ভাবে জমা কোটি টাকা! উৎস নিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি

Previous articleবিরাটের জায়গায় কেন রোহিতকে অধিনায়ক করা হয়েছিল ? মুখ খুললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
Next articleবাতিল ১৯৯৮ সালের রায়! ভোটের বদলে নোট মামলায় বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, চাপে সাংসদ-বিধায়করা