ED-CBI ডাকলে বলে দিন ভোটের কাজে ব্যস্ত আছি! স্পষ্ট নির্দেশ তৃণমূল সুপ্রিমোর

লোকসভা নির্বাচনের আগে এজেন্সি দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিকদলের নেতানেত্রীদের হেনস্থা করছে বিজেপি। এই অভিযোগে সরব অবিজেপি দলগুলি। এই নিয়েই রবিবার কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়ার সভা থেকে বিজেপির এজেন্সি-রাজকে নিশানা করলেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দলীয় নেতৃত্বকে তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, ED-CBI ডাকলে এখন যাওয়ার দরকার নেই। বলে দিন, এখন ভোটে ব্যস্ত আছি। ভোটের পরে দেখা যাবে।

এদিন কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে সভা থেকে ED-CBI-সহ কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা। বলেন, “অত ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কাউকে ইডি বা সিবিআই চিঠি দিলে উত্তর দিয়ে দিন, ‘এখন ভোটে ব্যস্ত আছি। ভোটের পরে দেখা যাবে’।“ সভার শুরুতেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তলব ও তল্লাশির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। তাঁর কথায় বিজেপির বিরুদ্ধে যেহেতু তৃণমূল লড়ছে সেই কারণেই তাদেরকেই টার্গেট করছে ইডি-সিবিআই। কিন্তু কংগ্রেস বা সিপিএমের কোনও নেতৃত্বকে তলব করে না কেন্দ্রীয় এজেন্সি।

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ভোট চলাকালীন এ সব করা যায় না। কদিন আগেই ক্রীড়া প্রশাসক স্বরূপ বিশ্বাসের বাড়িতে টানা ৭০ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছিল আয়কর দফতর। এদিনের সভা থেকে নাম না করে মমতা বলেন, “আমি ওদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিন দিন ধরে তোদের বাড়িতে কী করল? আমাকে বলল, ‘দিদি, আমরা তিন দিন বাথরুমে যেতে পারিনি, রান্না করতে পারিনি। বাড়িতে বাচ্চারাও ছিল। ওরা ১৬ জন এসেছিল। এক-একটা খাবার অর্ডার করছে, ২০-২৫ হাজার টাকা বিল হচ্ছে।‘ আর যাঁদের বাড়িতে গিয়েছে, তাঁরা খেয়েছেন কি না, তার খোঁজ রাখছেন না।“

এরপরেই বিজেপিকে তোপ দেগে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “বাংলায় যদি ‘৪০০ পার’ করার বিষয়ে আপনারা এতই নিশ্চিত হন, তা হলে এত ইডি, সিবিআই এখানে পাঠাতে হচ্ছে কেন? রাজ্যের অফিসারদের কেন বদলি করে দিতে হচ্ছে? কিসের ভয় পাচ্ছে বিজেপি? এত বড় একটা রাজনৈতিক দল। তারা শুধু ED, CBI, আয়কর পাঠায় আর গরিব মানুষের টাকা মারে।“

কিছু দিন আগে হাওড়া থেকে তৃণমূলের কয়েক জন নির্বাচনী ম্যানেজারকে NIA গ্রেফতারির বিষয় নিয়ে সরব হন মমতা। বলেন, “আমার কিছু ভোট ম্যানেজার আছে। এনআইএ গিয়ে হাওড়া থেকে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে নিল। আমার জেলা প্রেসিডেন্টকে নোটিশ পাঠাচ্ছে। ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন এ সব করা যায় না। বাংলায় জয় নিয়ে এত নিশ্চিত হলে কেন তৃণমূলকে সেখান থেকে সরাতে চাইছেন? কেউ কেউ কোটি কোটি টাকার সিবিআই কেস খেয়ে বসে আছেন। আর বিজেপিতে যোগ দিলেই ওয়াশিং মেশিনের মতো সাফ হয়ে যাচ্ছেন। দেশে আসলে ইডি, সিবিআইয়ের রাজ চলছে। ওরা ডাকলে ভয় পাবেন না।“

আরও খবর: রামলীলা ময়দান থেকে মোদির পাল্টা, কেজরির ছয় গ্যারান্টি শোনালেন সুনিতা

তৃণমূল প্রার্থী মহুয়ার বাবার বাড়িতে সিবিআই যাওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল সভানেত্রী। বলেন, “ওঁর বাবা মা বেচারা কিছু জানে না। ওঁর বাড়িতেও তল্লাশি করে এল। ওদের কাজ যেমন করে হোক মহুয়াকে হারানো।” এরপরেই পদ্মশিবিরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, “বিজেপি যদি এতই নিশ্চিত থাকে যে এবার লোকসভা নির্বাচনে নাকি ৪০০টি আসন জিতবে। বলছে যে ‘অবকি বার ৪০০’। যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে ভোটের আগেই ইডি এবং সিবিআইকে পাঠাচ্ছেন কেন?“

এদিন ধুবুলিয়ার মঞ্চ থেকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়েও সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অরবিন্দকে ওরা আটকে রেখেছে। কিন্তু ওঁর কাজ কি বন্ধ রাখতে পেরেছে? আসলে ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই। ওরা হারার ভয়ে এজেন্সি লাগিয়ে বিরোধী কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। কিন্ত তাতে কোনও ফল হবে না, বাংলার হারবে ওরা, গোটা দেশেই হারবে।“



Previous articleভোটের পর বিয়ে করলেই সোজা শ্রীঘরে! অসমের মুসলিম ‘সাংসদকে’ হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের
Next articleনজির গড়লেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় সাত্ত্বিকসাইরাজ-চিরাগ শেট্টি জুটি