প্রতারণার নয়া ফাঁদ, ফোনে শোনানো হচ্ছে শিশুর ‘কান্না’! সতর্ক করছে পুলিশ 

কখনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকের নাম করে, কখনও বা ভিন রাজ্যের পুলিশের কর্তার নামে।

প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সক্রিয় হচ্ছে প্রতারণা চক্র (Fraud)। বিজ্ঞান যতই দ্রুত গতিতে উন্নতি করুক না কেন, মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে লোক ঠকানোর মানসিকতা কিছুতেই কমছে না। এবার শিশুর ‘কান্না’ শুনিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতানোর জঘন্য ষড়যন্ত্র করছেন প্রতারকরা।সন্তানের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার ভয় দেখিয়ে ফোন করে শহরে সাইবার প্রতারণার (Cyber Fraud) জাল ছড়াচ্ছে কারবারিরা। সাবধান করছে পুলিশ (Kolkata Police)।

সন্তান যেন দুধে ভাতে থাকে সেই চেষ্টাই করে ফেলেন মা-বাবারা। আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সংগঠিত হচ্ছে বড় বড় অপরাধ। ফোনের অপরপ্রান্তে প্রান্তে সন্তানের কান্না শুনে কোনও অভিভাবকই চুপ করে বসে থাকতে পারেন না। তার উপর আবার আসছে হুমকি, যদি দাবি না মানা হয় তাহলে নিরপরাধ শিশুদের ক্রিমিনাল কেসে জড়িয়ে দেওয়া হবে! জানা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনে শহরের পাশাপাশি শহরতলির বাসিন্দাদের অনেকেই এই ধরনের ফোন পেয়েছেন। কখনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকের নাম করে, কখনও বা ভিন রাজ্যের পুলিশের কর্তার নামে। কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট থেকে এই সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পোস্ট করে ১০০ ডায়াল করার কথা বলা হয়েছে।

ঠিক কী চলছে? জালিয়াতদের প্ল্যানিংটা খুব পরিষ্কার। যাঁদের টার্গেট করা হচ্ছে, অচেনা নম্বর থেকে তাঁদের মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে উর্দিধারী পুলিশ আধিকারিকের ছবি। ফোন ধরতেই অন্য প্রান্ত থেকে ভারী গলায় ‘পুলিশকর্তা’ পরিচয় দিয়ে বলা হচ্ছে, যাঁকে ফোন করা হয়েছে সেই ব্যক্তির সন্তান সঙ্গদোষে গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন এবং পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রমাণ স্বরূপ, সন্তানের গলা হুবহু শোনানোর পাশাপাশি তদন্তের স্বার্থে তাঁকে মারধর করা হয়েছে বলে ফোনে দাবি করা হচ্ছে। ‘পুলিশকর্তা’র কথায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত হয়ে পড়ছে অভিভাবকরা। এরপর মাইন্ড গেম শুরু। উদ্বিগ্ন অভিভাবককে মীমাংসার প্রস্তাব হিসেবে টাকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশ। সাইবার প্রতারণার নতুন এই ধরন নিয়ে ইতিমধ্যেই লালবাজারে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘ডিপফেক পদ্ধতি’ ব্যবহার করে সন্তানের কান্না বা কাতর আর্তি নকল করা হচ্ছে। পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে এই ধরনের কোনও ফোন পেলে, সবার আগে থানায় যোগাযোগ করার কথা। কারা এমন চক্র পরিচালনা করছেন তার তদন্ত শুরু হয়েছে।