হামলা করেছে NIA, হারবে জেনে বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ঢোকাচ্ছে গদ্দার! বিস্ফোরক মমতা

ভূপতিনগরে NIA-এর হামলা ও গ্রামের মহিলাদের প্রতিরোধ নিয়ে তপনের সভা থেকে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার, বালুরঘাটের দলীয় প্রার্থীর প্রচারে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে সভা করেন তৃণমূল সভানেত্রী। আর সেখান থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ও নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর মহিলা আক্রমণ করেননি, হামলা করেছে এনআইএ। এরপরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, গদ্দার জানে হারবে তাই কোথায় কবে মেদিনীপুরে চকোলেট বোমা ফেটেছিল। তাই বাড়ি বাড়ি এনআইএ ঢুকিয়ে দিয়েছে।

কোচবিহার থেকে উত্তরবঙ্গে প্রচার শুরু করেছেন মমতা। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি হয়ে শুক্রবারই রায়গঞ্জ পৌঁছন তৃণমূল সভানেত্রী। শনিবার সকালে পৌঁছন বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তপনে। সেখানেই সভা করতে উঠে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ভোট করাচ্ছে বলে তোপ দাগেন মমতা। সেই প্রসঙ্গেই ভূপতিনগরে এনআইএ-র (NIA) ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “ওখানে মহিলারা হামলা করেননি। হামলা করেছে এনআইএ। লোকের বাড়ি গিয়ে গিয়ে মধ্যরাতে গিয়ে যদি মহিলার বাড়িতে অত্যাচার করে, তবে মহিলারা কি হাতে শাঁখা, বালা পরে বসে থাকবে? মাথায় ওড়না দিয়ে  বসে থাকবে? তারা নিজেদের ইজ্জত বাঁচাবে না।“

এরপরেই নাম না করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Shubhendu Adhikari) নিশানা করেন তৃণমূল সভানেত্রী। বলেন, “গদ্দার জানে হারবে। তাই কোথায় কবে ২০২২ সালে মেদিনীপুরে চকোলেট বোমা ফেটেছিল। তার জন্য বাড়ি বাড়ি এনআইএ ঢুকিয়ে দিয়েছে!” মমতার কথায়, নন্দীগ্রামেও একই ভাবে ভোট করিয়েছে গদ্দার। লোর্ডশেডিং করিয়ে দিয়েছিল। তখন বুঝতে পারিনি। সেই মামলা এখনও চলছে।

মমতা প্রশ্ন তোলেন, “যদি রাজ্যের অফিসার পুলিশকে বদলি করা হয়, তাহলে অত্যাচারী এনআইএ কে বদলি করা হবে না কেন? ভোট করছে ইলেকশন কমিশন না এনআইএ?” বলেন, ”আমরা চাই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ কাজ করুক। রাজ্যের অফিসারদের পরিবর্তন হবে, অত্যাচারী ইডি-সিবিআইদের কেন পরিবর্তন হবে না? যত দোষ রাজ্যের বেলায়? সব কিছু করবে রাজ্য পুলিশ আর ভোটের সময় চলে আসছে বিএসএফ, সিআইএসএফ? আর গুলি চালাবে? আগেরবার ভোটের সময় শুনেছিলাম বিএসএফ লাইন করাচ্ছিল। এটা ওদের কাজ নয়। ভোট হওয়ার পর ভাল করে পাহারা দিতে হবে।”

মঞ্চ থেকে ক্ষোভপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ক্ষমতা থাকলে লড়াই করে জেত। আমার বুথ কর্মী, এজেন্টদের গ্রেফতার করবে না। হেমন্ত সোরেন থেকে পাবলিক নেতাদের গ্রেফতার করবে না। আর আপনাদের এখানে কুশান্তবাবু, গদ্দার যা বলবে তাই করতে হবে। আমি জেনারেলি বলি না। পড়ুয়ারা কী শিখবে? বিজেপির প্ল্যান নম্বর ওয়ান–যাঁরা পাহাড়া দেবে তাঁদের টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া, দুই কিছু খাওয়ানোর নামে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া, তিন–লোডসেডিং করে বাক্স দখল করা। এমন কাউকে পাহাড়ায় রাখবেন না যাঁরা বিশ্বস্ত নয়। তৃণমূলের সব বুথ প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করতে হবে। তৃণমূলের সব এজেন্টদের গ্রেফতার করতে হবে। আমরা বিজেপির নির্বাচন কমিশন চাই না। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ কাজ করুক। তৃণমূল কর্মীদের দলনেত্রীর বার্তা, “জেলায় জেলায় তিনস্তরে কর্মী রেডি রাখুন। কত এরেস্ট করে দেখছি!”

বালুরঘাটে সুকান্ত মজুমদারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এখানে জলের অসুবিধা হয়। আপনারা যাকে ভোট দিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। তিনি একবারও বলেছেন আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দেওয়া হল? কেন বালুরঘাটের মানুষ জল পায় না? গঙ্গা ভাঙন নিয়ে বলেছেন? ওরা বলছে দুর্নীতি হয়েছে। তাই টাকা দিচ্ছি না। সুকান্তবাবুকে ভোট দেওয়ার আগে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি আর গদ্দার বললেননি? বাংলাকে ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া যাবে না? বাংলার বাড়ি দেওয়া যাবে না? রাস্তা দেওয়া যাবে না? আপনারা বাংলার গদ্দার। আপনারা উত্তরবঙ্গকেও ভালবাসেন না। দেখলেন তো জলপাইগুড়িতে দুর্যোগ হল। আমি মধ্যরাতে ছুটে গেলাম। যা যা দেওয়ার সব দিয়েছি। চারদিন আগে আমরা কমিশনকে পাঠিয়ে দিয়েছি। ভোট না থাকলে ত্রাণও পাঠিয়ে দিতাম।”




Previous article“শুভেন্দুর টিমই দিলীপকে হারিয়ে দেবে, আমার হাতে তথ্য আছে”! বিস্ফোরক কীর্তি আজাদ
Next articleনির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে ‘মাথাব্যথা’ বাড়ছে বিজেপির! ভোটের মুখে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য