মমতার লাগাতার কটাক্ষে ধূপগুড়ির সভায় মোদি মুখে উত্তরবঙ্গের মিনি টর্নেডো

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) লাগাতার চাপে এবার ‘কোচবিহার’ (Coochbehar) বিপর্যয়ের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। রবিবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে চাপে পড়ে কয়েক সেকেন্ড হলেও কোচবিহারের (Coochbehar) ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন মোদি। এদিন বক্তব্যের প্রথম দিকে মোদি বলেন, উত্তরবঙ্গে (North Bengal) ঝড়ে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যাদের ঝড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আর মোদির এমন মন্তব্যকেই হাতিয়ের করে ফের রাজনীতির ময়দানে বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, এতক্ষণ কেটে গেলেও কেন রবিবারের সভাকেই বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী? যেখানে মানুষের পাশে থাকা তো দূর এতদিন পর্যন্ত একটা শব্দও খরচ করেননি। শুধুমাত্র ভোটের সময় বাংলায় এসেই মিথ্যা বুলি আওড়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা নমোর। কিন্তু বাংলায় শুধু ভোটের আগেই ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেন প্রধানমন্ত্রী-সহ দিল্লির গেরুয়া শিবিরের নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু বাংলার মানুষকে গায়ের জোরে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে বাংলার মানুষের বকেয়া টাকা আটকে রেখে ভোটের আগে বাংলায় এসে ‘নাটক’ প্রধানমন্ত্রীর।

জলপাইগুড়ির দুর্যোগের পরে যাঁদের ঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের বাড়ি তৈরি করতে না পারার জন্য আগেই নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর দাবি, যদি আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর না থাকত, তাহলে এক মিনিটের মধ্যে বাড়ি তৈরির নির্দেশ দিতেন। কিন্তু কমিশন সেই অনুমতি দেয়নি এখনও। কমিশনের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশের অভিযোগও তোলেন মমতা। মমতা এরপরই মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, যদি ক্ষমতা থাকে প্রত্যেক পরিবারকে মাসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দেখাক মোদি সরকার। তবে শুধু মমতাই নয়, কোচবিহারে বিপর্যয় নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার ও বিজেপিকে একহাত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের একাধিক উচ্চপদস্থ নেতারা ভোটের আগে কেন্দ্রের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর তারপর জলপাইগুড়ির রবিবাসরীয় সভা থেকে রীতিমতো চাপে পড়ে নিজের অবস্থান জানাতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী।

রবিবার দুপুরেই পুরুলিয়ার হুড়ার জনসভা থেকে এনআইএ-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, মানুষ প্রতিবাদ করলে এনআইএকে ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। মধ্যরাতে মহিলারা ঘরে ঘুমাচ্ছেন। গদ্দারের এলাকায় মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে চলে গেল। আগে পুলিশের উর্দি পরে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে অনেকেই বদমায়েশি করেছে। মেয়েরা কী করে বুঝবেন? মা-বোনেরা প্রতিবাদ করলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ডায়েরি করা হল। মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন,  এনআইএ, সিবিআই, বিজেপির ভাই। ইডি আর ইনকাম ট্যাক্স বিজেপির টাকা তোলার বক্স।

আর এই প্রসঙ্গকে ধামাচাপা দিতেই রবিবার উত্তরবঙ্গের সভা থেকে নিজেদের গাজোয়ারির দায় রাজ্যের শাসক দলের উপরেই চাপিয়েছন তিনি। মোদির অভিযোগ, তদন্তকারীরা তদন্ত করতে গেলে ওদের উপর হামলা করে। অন্যদের দিয়ে হামলা করায়। আইন এবং সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এরপরই সভা গরম করতে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ভোটের আগেই বিজেপির এই ‘মিথ্যাচার’ যে মানুষ একেবারেই বিশ্বাস করবেন না বলেই মত তৃণমূলের। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, মানুষই গণতন্ত্রের আসল শক্তি। তাঁরা জানেন কাকে ভোট দেওয়া উচিত, কাকে নয়।

 

Previous articleভূপতিনগরে ‘নিয়মমাফিক’ হানার দাবি NIA-র; পাল্টা ‘জীতেন্দ্র’ প্রশ্ন অভিষেকের
Next articleতৃণমূলে এসেছিল, দরজা বন্ধ করে দিয়েছি: হিরণকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক, ফুটেজ ফাঁসের চ্যালেঞ্জ