‘প্রতারক’ বিজেপির গালে থাপ্পড় কষিয়ে জগদীশ বসুনিয়াকে জেতান: সিতাইয়ের রোড শো-এ বার্তা অভিষেকের

জিতে সাংসদ হয়ে কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, কিন্তু কোচবিহারের মানুষের উন্নয়নে কোনও কাজ করেননি। উল্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পা ধরে বলেছেন, বাংলার ১০০ দিন, আবাসের টাকা বন্ধ করে দাও। যারা বেইমানি করল তাঁদের জবাব দেবেন কি না! ২০২১ সালেও বিজেপি (BJP) জিতেছিল। পাঁচ বছর তো দেখলেন নমুনা। জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াকে জেতানো মানে সরাসরি ভাবে প্রতারকদের গালে কষিয়ে থাপ্পড় মারা। শনিবার, কোচবিহারে দলীয় প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার (Jagadish Chandra Basunia) সমর্থনে সিতাইয়ের রোড শোর শেষে বার্তা দিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কার্যত জনজোয়ারে ভেসে সিতাই হাট থেকে বিডিও অফিসর সামনে আসেন অভিষেক। সঙ্গে প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া ও তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ। আর সেখানেই বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanik) বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

লোকসভার দলের প্রার্থীকে নিয়ে রোড শো করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিতাই হাট থেকে বিডিও অফিস পর্যন্ত এই রোড শো করেন তিনি। পাশে ছিলেন কোচবিহারের তৃণমূলের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া। সঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। সেই হুড খোলা প্রচার গাড়ি সামনে পিছনে শুধুই জনসমুদ্র। তৃণমূল কর্মীদের মাথায় ছিল নীল-সাদা টুপি। রোড শো ছাড়াও রাস্তার দুপাশে পাশে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলেন অগণিত সাধারণ মানুষ। তাঁদের উদ্দেশ্যে গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দেন অভিষেক।

রোড শো শেষে অভিষেক বলেন, “কোচবিহার লোকসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ ধন্য প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়াকে যেভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্থানীয়রা আশীর্বাদ করছেন, দেখলেই বোঝা যায় তাঁরা কার সঙ্গে আছেন।“ এরপরেই নিশীথ প্রামাণিককে তুলোধনা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে জিতিয়েছিলেন। আচ্ছে দিনের কথা বলেছিল। একবুক আশা নিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। ১০ বছর আগে একটা ডিমের দাম তিন টাকা ছিল এখন সাত টাকা। যিনি দাঁড়িয়েছেন, ভোটে কোচবিহারের সার্বিক উন্নয়ন না করে অমিত শাহের পা ধরে বললেন একশো দিন আবাসের টাকা বন্ধ করে দাও। যারা বেইমানি করল তাঁদের জবাব দেবেন কি না! ২০২১ সালেও বিজেপি জিতেছিল। পাঁচ বছর তো দেখলেন নমুনা। জগদীশ বসুনিয়াকে জেতানো মানে সরাসরি ভাবে প্রতারকদের গালে কষিয়ে  থাপ্পড় মারা।“

অভিষেকের কথায়, “যাকে জামিন নিতে হয়েছিল তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অন্যদিকে শিক্ষিত মার্জিত তৃণমূল প্রার্থী। এরা আবার ভুল বুঝিয়ে জিতলে কীকরে বাংলার টাকা তুলে অন্য রাজ্যে দেওয়া যায় সেকাজ এরা করবে। কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দিন।“

সীমান্তে বিএসএফের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক। মনে করান, “রাজবংশী যুবক প্রেমকুমার বর্মনকে গুলি করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের অধীনে থাকা বিএসএফ। নৃশংস নির্মমভাবে গুলি করেছিল। একবার প্রতিবাদ করেনি। পাঁচ বছরে উন্নয়নের জন্য দশ পয়সা আনেনি। আচ্ছে দিন এসেছে নিশীথ প্রামাণিকের। ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকায় দিল্লির আবাস যেখানে থাকেন সেখানে অট্টালিকা বানিয়েছে। যাতে আপনাদের ভোটে জবাব দিন যাতে সেই প্যালেসের মার্বেল খসে পড়ে। এটা প্রতিবাদের ভোট৷ এই লড়াই এদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার লড়াই।“ শীতলকুচিতে ১০ এপ্রিল ২০২১ সালে  নিশীথ প্রামাণিকের অধিনস্ত সিআইএসএফ গুলি করে পাঁচ জনকে হত্যা করে। তাদের হাতে বোম বন্দুক লাঠি ছিল না। তাঁরা ভোট দিতে গিয়েছিল। সীমান্তে সকাল বিকেল বিএসএফের চোখ রাঙানো চলছে। অভিষেকের বার্তা “তৃণমূলকে জেতালে কারও সাহস নেই চোখ রাঙায়। আপনারা ভোট না দিলে সবার মূল্য শূন্য।“

ভোট নিয়ে চলে গিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। সেই বিষয়টিকে তুলোধনা করেন অভিষেক। বলেন, “নিশীথ প্রামাণিককে দেখেছেন? যাঁকে চোখেই দেখেননি তাঁর গ্যারান্টি নেবেন? ২০২১ এর পরে মোদি আসেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসেনি। কোচবিহারের দিনহাটা থেকে নবজোয়ারের যাত্রা করেছি।“

মোদির আমিষ না খাওয়ার নিদান নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, “আমরা ধর্ম বাড়িতে করব। নির্বাচন এলে কর্মের নামে ভোট দেবেন। হাত তুলে বলুন কারা মাছ খান?  আপনাদের দেশ বিরোধী বলছে৷ নিশীথ জিতলে মাছ খাওয়া বন্ধ করবে। আমি সকাল বিকাল মাছ খাই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মনের কথা বোঝে না। অমিত শাহ বালুরঘাটকে বেলুরঘাট বলছে৷ এজন্য বাংলা বিরোধী বলছি।“ নিশীথ প্রামাণিকের কাছে কাজের হিসেব চাওয়ার পরামর্শ দেন অভিষেক। বলেন, বিজেপির কাছে রিপোর্ট কার্ড চান। বিজেপি কর্মীদের বলবেন কেউ ভোট দিলে বুঝতে হবে যারা বঞ্চিত করেছিল পথে বসিয়েছিল  তাদের রাজনীতিকে সমর্থন করছে৷ পদ্মফুল যেন চোখে সর্ষেফুল দেখে।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট বার্তা, জগদীশ বাসুনিয়াকে জেতান। কোচবিহারের উন্নয়ন আমার থেকে বুঝে নেবেন। তীব্র খোঁচা দিয়ে অভিষেক বলেন, “কোনও ভদ্র লোক বিজেপি করেনা, চিটিংবাজ মাতাল পাতাখোর সব বিজেপি করে৷“ কোচবিহারে আবার বিজয় মিছিল করতে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন অভিষেক।






Previous articleকোন বোলারের বল আতঙ্ক ছিল বিরাটের কাছে, জানালেন নিজেই
Next articleঅন্য রকম পয়লা বৈশাখ, ‘রাজ্য দিবস’ স্বীকৃতির পরে প্রথমবার উৎসবমুখর বাংলা