সর্বধর্ম সমন্বয়- ভিডিও প্রকাশ করে বার্তা ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’-এর

মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও। বিজেপি হটাও, দেশ বাঁচাও। এই স্লোগান নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে প্রচার চালাচ্ছে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে জন সচেতনতার পরে এবার ভিডিও প্রকাশ করল তারা। প্রসূন ভৌমিকের লেখায় ভিডিওটিতে (Video) গান গেয়েছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। ভিডিওটি বানিয়েছেন অনন্যা চক্রবর্তী। নোট বন্দি থেকে শুরু করে লকডাউন, দিল্লিতে কৃষকদের ওপর ফ্যাসিবাদী মোদি সরকারের নিগ্রহ, নারী নির্যাতন থেকে জনবিরোধী আইন- সবের বিরুদ্ধেই এই ভিডিও থেকে সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।

ফ্যাসিস্ট আরএসএস এবং বিজেপি (BJP) সারা ভারতে এক দেশ, এক জাতি, এক ভাষা, এক খাদ্যাভ্যাস, এক সংস্কৃতি, এক ব্যবসায়ী, এক নেতার ধারণা আনার চেষ্টা করছে। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা করছে। বিরোধী দলগুলিকে দুর্বল করার জন্য ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সকে ব্যবহার করছে। বিরোধী শাসিত রাজ্যেগুলিতে রাজ্যপালকে ব্যবহার করে দৈনন্দিন রাজ্য চালনায় বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এইসব অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। .

স্বৈরাচারী মোদি সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। এবার ভিডিও প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ছড়িয়ে দিয়ে ঘরে ঘরে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে তারা। ভিডিওতে বার্তা দেওয়া হয়েছে- সব ধর্মের মানুষকে আগলে রাখতে হবে। দেশে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি চলবে না। ভারত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের দেশ। এখানে কোনরকম বিভেদ কামে শক্তিকে মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না।

দেশের কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, কৃষক বিরোধী কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে সাতশোর বেশি কৃষক শহিদ হয়েছেন। নিত্যদিন কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে শ্রম কোড তৈরি করে শ্রমিকদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ন্যূনতম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। অমৃত ভারত রেল প্রকল্পের নামে রেল হকার ও রেল বস্তি উচ্ছেদের জন্য আক্রমণ করছে বিজেপি সরকার। বিভিন্ন শহরে সমস্ত হকারদের উপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ নামছে। ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ধ্বংস করা হচ্ছে।

বছরে দুকোটি বেকারের চাকরির ফানুস চুপসে গিয়েছে। বিগত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ভারতে বেকারত্ব সর্বাধিক। পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসসহ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য আকাশ ছোঁয়া।

ভারতের সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাথায় একজন করে সংঘ-সেবককে বসানোর চেষ্টা চলছে এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধিকারকে ধ্বংস করে তাকে সরকারের অধীনে আনার অপচেষ্টা চলছে। ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি চূড়ান্ত মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে, যার শেষতম অস্ত্র ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নামে সিএএ চালু করা।

সমস্ত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৈরিকীকরণ চলছে। বিজ্ঞান থেকে ইতিহাস সমস্ত সিলেবাস পাল্টে দিয়ে শিক্ষার গৈরিকীকরণ চলছে। পছন্দের দু’চারজন ব্যবসায়ীর হাতে দেশের সমস্ত সম্পদ জলের দরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। ইলেকটোরাল বন্ডের প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাওয়ায় বিজেপির ইডি-সিবিআই-কে সরকারি এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করার চক্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে চার হাজার কোটি টাকার উপর জিএসটি তুলেও, পশ্চিমবঙ্গের জিএসটির ভাগ আটকে রাখছে। একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না। বাংলার একটিও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে দিচ্ছে না। নির্বাচনের বহু আগে বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে স্কুল-শিক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। এই কেন্দ্রীয় বাহিনী গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় শীতলকুচির মতো নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে। সার্বিকভাবে বাংলার ওপর নানা দিক থেকে আক্রমণ চলছে।

আরও পড়ুন- মঙ্গলে তৃণমূলের ৬ ভাষায় ইস্তাহার প্রকাশ, গুরুত্ব উন্নয়নে 

Previous articleলিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান, বাগানকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রী-ক্রীড়ামন্ত্রীর
Next articleমোদির জুমলার ১০ দফা মোক্ষম জবাব ডেরেকের